skip to Main Content

অর্গানিক I প্ল্যান্ট-বেজড

প্রাকৃতিক উৎস থেকে তৈরি পণ্যে ত্বকের পরিচর্যা। বিষাক্ত রাসায়নিকের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য

ত্বকের যত্নের অনেক উপায় রয়েছে, এগুলোর মধ্যে সিনথেটিক পণ্য যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে প্রাকৃতিক তেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। তবে সবচেয়ে ভালো অর্গানিক কিংবা প্ল্যান্ট-বেজড উপাদানে তৈরি পণ্য।
আমাদের ত্বক যতটা না সুরক্ষাদেয়াল, তার চেয়ে বেশি ফিল্টার বা পরিস্রাবক। পরিবেশগত দূষণ থেকে শুরু করে যেসব পণ্য ত্বকে প্রয়োগ করা হয়, সবই এটি শোষণ করে। এ জন্যই ত্বকের ওপর এমন কিছু প্রয়োগ করা উচিত, যা ক্ষতিকর নয়। উদ্ভিদভিত্তিক পণ্য এ ক্ষেত্রে জুতসই। শরীরের ওপর এর প্রভাব প্রাকৃতিক। প্ল্যান্ট-বেজড স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট নানান দিক থেকে ত্বকের ও শরীরের যত্ন নেয় নিরাপদভাবে। এগুলোর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র‌্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াই করে শরীরের কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত ও মজবুত করে।
ত্বকের সক্রিয়তা বজায় রাখাটা জরুরি। ভিটামিন কোষ মেরামতে এবং অকালবার্ধক্য রোধে সহায়তা করে। বয়সের ছাপ দূর করতে আরেকটি কার্যকর উপাদান হলো এসেনশিয়াল অয়েল। এটি ব্রণ কমাতে, শুষ্কতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে, তৈলাক্ততা দূর করতে, ক্ষত মসৃণ করতে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির সহায়ক আরেকটি উপাদান হলো প্রোটিন। এটি ত্বককোষের দৃঢ়তা বাড়াতেও কার্যকর। এ সবকিছুই প্ল্যান্ট-বেজড উপকরণে পাওয়া সম্ভব।
তাই ত্বকযত্নের পণ্যগুলোর উপাদানে নজর দিন। দেখুন, এগুলো কৃত্রিম কি না। অথবা তালিকা থেকে কৃত্রিম পণ্যের পরিবর্তে প্ল্যান্ট-বেজড কোম্পানির পণ্য বেছে নিন।
ফেলে দিন চাকচিক্যময় প্যাক করা পণ্যগুলো। যে পণ্যগুলো প্রাকৃতিক বা ন্যাচারাল শব্দটি প্যাকের ওপর লাগিয়ে নেয়, বিশেষ করে বড় স্কিন কেয়ার কোম্পানিগুলো, ভোক্তার মনোযোগ পাবার জন্য সেসবের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জরুরি। পণ্যের ব্যবহৃত উপাদানের তালিকায় কৃত্রিম উপাদানের উল্লেখ সত্ত্বেও প্যাকের গায়ে ন্যাচারাল শব্দটি রয়েছে, তবে এমন পণ্য অবশ্যই পরিহার করুন।
প্ল্যান্ট-বেজড স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট ত্বকের স্বাস্থ্যরক্ষায় সেরা উপায় হতে পারে। তাই ত্বকের যত্ন নিন সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক বিকল্প দিয়ে। তা হতে পারে ভেগান, অর্গানিক ও নন-জিএমও ফেস ও বডি প্রডাক্ট।
তাই গাছপালা শুধু বাড়ি বা অফিসের সৌন্দর্যবৃদ্ধির কাজে ব্যবহার না করে নিজের সৌন্দর্যবৃদ্ধিতেও লাগান। প্ল্যান্ট-বেজড স্কিন কেয়ার চমৎকার ফল দিতে পারে। ভালো দিক হলো, এগুলোর সক্রিয় উপাদান প্রকৃতিতেই পাওয়া যায়। যেমন সানবার্নে আক্রান্ত হলে অ্যালোভেরা জেল হতে পারে পরিত্রাণের উপায়। ক্লারিনস ব্র্যান্ডটি প্ল্যান্ট-বেজড স্কিন কেয়ার কনসেপ্ট মেনে চলে। এর ফেস ট্রিটমেন্ট অয়েল পঞ্চাশ বছর আগের একটি পণ্য, শতভাগ বিশুদ্ধ উদ্ভিজ্জ নির্যাস দিয়ে এটি তৈরি হয়েছিল। এখনো সেই ঐতিহ্য ডাবল সিরামের মতো পণ্যে দৃঢ়ভাবেই রয়েছে; যা প্যাকেটজাত হয়েছে বয়সরোধী উপাদান দিয়ে।
এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, সকালে নাশতার আগে নারী পনেরোটির বেশি পারসোনাল কেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহার করে, যাতে এক শর মতো বিষাক্ত উপাদান রয়েছে। টুথপেস্ট থেকে শুরু করে মাসকারা, কনসিলার, ফেসক্রিম— এমন আরও অনেক প্রডাক্ট রয়েছে, যা ক্ষতিকর উপাদানে ভরা। সে তালিকা থেকে বোঝা যায়, দিনের শুরুতে একজন নারী বিষাক্ত পদার্থের কবলে চলে যায়।
আমরা অনেক কিছুই ত্বকে প্রয়োগ করি রক্তপ্রবাহে তা শোষিত হওয়ার জন্য। এগুলোয় থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক হরমোনের ক্ষতিসহ নানা বিপর্যয় শরীরের অভ্যন্তরে ডেকে আনতে পারে। শ্বাসযন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে, প্রজননক্ষমতা নষ্ট করতে পারে। যদি কেউ সিনথেটিক কেমিক্যালে পূর্ণ পণ্য ব্যবহার করে, তাহলে সে নিজেকে প্রতিদিন স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।
বেশির ভাগ বিউটি ব্র্যান্ড দেখাতে চায়, পণ্যে তাদের ব্যবহৃত উপাদানগুলো যথেষ্ট ত্বকবান্ধব। এতে আশ্বস্ত হওয়ার কিছু নেই। সেই পণ্যই নেওয়া যেতে পারে, যা পরীক্ষিত, যার ত্বকবান্ধব উপাদানগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। স্পর্শকাতর ও অ্যালার্জিযুক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে এটা বেশি দরকার।
প্ল্যান্ট-বেজড বিউটি প্রডাক্টে উদ্ভিদের প্রাকৃতিক গুণাবলির সমন¦য় ঘটিয়ে সেগুলো ত্বকে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়। পুষ্টি উপাদান, ফ্যাটি অ্যাসেনশিয়াল অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ ধরনের পণ্যে অনেক পাওয়া যায়। এগুলো ত্বকের সুস্বাস্থ্যে সহায়ক ও নিরাপদ।

 তাসমিন আহমেদ
মডেল: মোহিনী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top