skip to Main Content

ইভেন্ট I ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব ২০১৮

জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ লোকসংগীতের আসর ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব ২০১৮’। ১৫ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে চলেছে এই উৎসব। এবার ছিল চতুর্থ আসর। অংশ নিয়েছেন সাত দেশের মোট ১৭৪ জন শিল্পী। বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন মমতাজ, বাউল আবদুল হাই দেওয়ান, বাউল কবির শাহ, অর্ণব, নকশীকাঁথা, স্বরব্যাঞ্জো ও ভাবনা নৃত্যদল। ভারত থেকে অংশ নিয়েছেন ওয়াদালি ব্রাদার্স, রাঘু দীক্ষিত ও সাত্যকি বন্দ্যোপাধ্যায়। পাকিস্তান থেকে এসেছিলেন শাফকাত আমানাত আলী। তাঁরা ছাড়াও তিন দিনের এই উৎসব মাতিয়েছেন বাহরাইনের ব্যান্ড মাজাজ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা গ্র্যামি পুরস্কার বিজয়ী লস টেক্সমেনিয়াক্স, পোল্যান্ডের দিকান্দা এবং স্পেনের লাস মিগাস।
উৎসবের প্রথম দিন ১৫ নভেম্বর ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব ২০১৮-এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনসহ অনেকে।
তিন দিনব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসবের প্রতিটি দিনই ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে ছিল মানুষের ঢল। সংগীত ও অভিনয় অঙ্গনের ব্যক্তিদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। আলোর ঝলক ও শব্দের ঝংকারে আর্মি স্টেডিয়াম হয়ে উঠেছিল আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু।
উৎসবের প্রথম দিনে মঞ্চ মাতিয়েছেন ভাবনা নৃত্যদল, কবি মাতাল রাজ্জাকের শিষ্য ‘হাফ মাতাল’ খ্যাত আবদুল হাই দেওয়ান, ‘ডিস্ক অব দ্য ইয়ার’ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত পোল্যান্ডের সুপরিচিত ব্যান্ড দিকান্দা। ফোক ও ক্লাসিক সংগীতে পারদর্শী পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী সাত্যকি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ওয়াদালি ব্রাদার্স। প্রথম দিনে ‘সোহাগ চাঁদ বদনী ধ্বনি’ গানের সঙ্গে ভাবনা নৃত্যদলের নৃত্য পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয়ে ওয়াদালি ব্রাদার্সের ‘ধামা ধাম মাস্ত কালান্দার’ গানে আসর শেষ হয়। এরই মধ্যে আবদুল হাই দেওয়ান ৬টি, দিকান্দা ৯টি, সাত্যকি ৪টি গান পরিবেশন করেন।
১৬ নভেম্বর, উৎসবের দ্বিতীয় দিনে সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশের ব্যান্ড স্বরব্যাঞ্জো, বাহরাইনের ব্যান্ড মাজাজ, ভারতের গায়ক, সুরকার ও সংগীত প্রযোজক রঘু দীক্ষিত, মার্কিন মুলুক থেকে আসা ব্যান্ড লস টেক্সমেনিয়াক্স এবং বাংলাদেশের ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম। দ্বিতীয় দিনের উৎসব শুরু হয় স্বরব্যাঞ্জোর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এবং শেষ হয় মমতাজ বেগমের গানে। মধ্যখানে দর্শক-শ্রোতাদের এক ঘণ্টা ধরে সুর-সংগীতে মাতিয়ে রাখে মাজাজ ব্যান্ড। রাত ৮টার দিকে মঞ্চে ওঠেন রঘু দীক্ষিত। তাঁর দলে ছিলেন আরও চার শিল্পী রাঘুপতি দ্বারকানাথ দীক্ষিত, নেরেশ নাথান, জো জ্যাকব ও নাভিন থমাস। তারপর আসে ব্যান্ড দল লস টেক্সমেনিয়াক্স।
তৃতীয় দিন উৎসবের পর্দা নামে। এ দিনে মঞ্চ মাতিয়েছেন সুফি ও লোকজ সংগীতের জন্য সমাদৃত লাহোরে জন্ম নেওয়া শিল্পী শাফকাত আমানত আলী, ২০০৪ সালে যাত্রা শুরু করা বার্সেলোনার ব্যান্ড লাস মিগাস, বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের কাছে তালিম বেওয়া দরদি বাউল কবির শাহ, বাংলাদেশের শায়ান চৌধুরী অর্ণব এবং লোকগানকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা ব্যান্ড নকশীকাঁথা।
তিন দিনব্যাপী এই উৎসব ছিল কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত। উৎসবে শামিল হতে সবাইকেই নিবন্ধন করতে হয়েছে। কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া আনন্দেই কেটেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব।

 স্টাফ রিপোর্টার
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top