skip to Main Content

কভারস্টোরি I ডোপামিন ড্রেসিং

একদিকে অতিমারির আতঙ্ক, অন্যদিকে পকেটে খানিকটা টানের প্রভাবে স্বল্পে সন্তুষ্ট থাকার আপ্তবাক্য আউড়েই এত দিন নিজেদের সান্ত্বনা দিয়ে চলেছেন ফ্যাশন-সচেতনেরা। মিনিমালিজমকে মূলমন্ত্র মেনে লেইড ব্যাক লাউঞ্জওয়্যার, অ্যাকটিভ ওয়্যার আর মাস্ক তাই দখল করে ছিল ফ্যাশনের ট্রেন্ডিং লিস্ট। বিলাসবর্জিত প্রিন্টের পাশাপাশি বছর দুয়েক ধরে পোশাকের রঙেও প্রায়োরিটি পেয়েছে প্যালেটের প্যাস্টেল শেড। কিন্তু আর কত! পরিস্থিতি একটু সহনীয় হওয়ার সুযোগে ভোল পাল্টেছে ট্রেন্ড ক্যালেন্ডার। স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি, সেই সঙ্গে মন ভালো রাখার দাওয়াই হিসেবে প্রমাণিত ফিল গুড ফ্যাশনে ঝুঁকছেন ডিজাইনার থেকে সচেতন জেড জেনরাও। বাকিটা জানাচ্ছেন জাহেরা শিরীন

ড্রেস-হ্যাপি-ফিল-হ্যাপি। কনসেপটির সত্যতা প্রমাণিত হয় ২০১২ সালে। কগনিটিভ সাইকোলজিস্ট হ্যাজো অ্যাডাম এবং অ্যাডাম গ্যালিনস্কির ‘এনক্লথড কগনিশন’ স্টাডির মাধ্যমে। গবেষণায় দেখা যায়, পোশাকের এক আশ্চর্য ক্ষমতা আছে; যা পরিধানকারীর আত্মবিশ্বাস, অনুভূতি, এমনকি আচরণকেও প্রবলভাবে প্রভাবিত করতে সচেষ্ট। এই গবেষণার পর আলোচনায় আসে এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক খুঁটিনাটি সব তথ্য। পরবর্তীকালে প্রমাণিতও হয় গবেষণার মাধ্যমে। যেমন ফরমাল পোশাকে তুলনামূলকভাবে বেশি ভারিক্কি ভাব আসে আচরণে, অনুভূত হয় শক্তিধর হিসেবে। ক্যাজুয়াল পোশাকে অসংকোচ ভাব বাড়ে অনেকখানি। অ্যাকটিভ ওয়্যার শ্রমের অনুপ্রেরণা জোগায় মনে। লাক্সারি ব্র্যান্ডের পোশাক পরিধানে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর প্রমাণ মেলে তখন। মোজা কিংবা অন্তর্বাস দেখা না গেলেও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া প্রমাণিত হয়, উজ্জ্বল রঙের পোশাক মুড ভালো রাখতে সহায়ক। অন্যদিকে ম্যাড়ম্যাড়ে রঙে মনও বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এই গবেষণাকালের প্রায় দশ বছর পর ২০২২ সালে আবার পোশাকের সঙ্গে মনস্তত্ত্বের যোগসূত্র নিয়ে চর্চায় ব্যস্ত গোটা ফ্যাশন বিশ্ব। ফলাফল—এ বছরের ফ্যাশন ট্রেন্ডের শীর্ষ স্থান ডোপামিন ড্রেসিংয়ের দখলে।
তৃষ্ণায় পছন্দের পানীয়তে প্রথম চুমুক বা ক্ষুধায় খাবারে প্রথম কাপড়। প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে সামান্য এসএমএসের প্রাপ্তি কিংবা পছন্দের কোনো গান শোনা—প্রতিটি ঘটনাতেই একটা জিনিস মিলে যায়। ডোপামিনের উদ্রেক, যা মস্তিষ্কে অনুরণন সৃষ্টি করে আনন্দদায়ক অনুভূতির জোগান দেয়।
কিন্তু ডোপামিন কী? ফ্যাশনের সঙ্গে এর যোগসূত্রটাই-বা কীভাবে? গেল বছর থেকে কেন ডোপামিন ড্রেসিং নিয়ে এত চর্চা? শুধু রঙচঙে পোশাকই কি এই ট্রেন্ডের মূলসূত্র? ধারণাটা কিন্তু বিশদ। পোশাক আর মনস্তত্ত্বের মিশেল। ব্যক্তিসত্তারও জোরদার যোগ রয়েছে ডোপামিন ড্রেসিংয়ে।
ডোপামিন পরিচিত চিফ ফিল গুড নিউট্রোট্রান্সমিটার হিসেবে। সেরোটোনিনের পাশাপাশি হ্যাপি হরমোন হিসেবে এর নামডাক রয়েছে বরাবরই। মস্তিষ্কের নিউরনে বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করে এটি; যা মেজাজ, মনোযোগ আর প্রেরণাকে প্রভাবিত করে দারুণভাবে। লো লেভেল ডোপামিন মানুষকে লো ফিল করায়। অন্যদিকে হাই লেভেল ডোপামিন যখন নিউরনে খেলা করে, তখন মন ভালো করা অনুভূতি জোগায় শরীরজুড়ে। পুরস্কারের প্রত্যাশায় মনে যে আনন্দের উদ্রেক হয়, তা থেকেই ডোপামিন নিঃসৃত হয়। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই ডোপামিনকে বুস্ট করে এমন জিনিসে মানুষ আসক্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এগুলো ডোপামিন বুস্টার হিসেবে কার্যকর হওয়ায় মস্তিষ্কের নির্ভরশীলতা বাড়ায়; বাড়ায় আসক্তি। তবে আশার ব্যাপার হলো, ডোপামিন মাত্রা বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়ও রয়েছে। অবশ্য ব্যক্তিভেদে এর কার্যকারিতা ভিন্ন। তাই এ সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে জানা প্রয়োজন। ডোপামিনের মাত্রা কম মানেই যেকোনো বিষয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা কমে যাওয়া। তাই বিষণ্নতায় আক্রান্তদের মধ্যে এর মাত্রা প্রাকৃতিকভাবেই কম থাকে। ফলে তাদের কোনো কাজে আগ্রহী করে তোলা কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার মতো সাধারণ বিষয়ে অনুপ্রাণিত করাও অনেক সময় কঠিন হয়ে ওঠে। নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম, রুটিন মেনে ব্যায়াম, গান শোনা, যোগ সাধনা, পর্যাপ্ত সূর্যের আলো, পছন্দের মানুষদের সঙ্গে মেলামেশা আর প্রচুর পরিমাণ প্রোটিনের জোগান ডোপামিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়ক। এমনকি পোশাকেও ডোপামিন বুস্টিং সম্ভব।
ডু দ্য ডোপামিন
পোশাকের রং, টেক্সচার এমনকি কাট-প্যাটার্নও মস্তিষ্কের ডোপামিন বুস্ট করতে পারে। একদম লিস্টে থাকা অন্য ফিল গুড ফ্যাক্টরগুলোর মতো করেই। তবে জেনে রাখা জরুরি, ডোপামিন ড্রেসিং মানেই যে রঙচঙে আর প্রিন্টেড পোশাক, সব সময় কিন্তু এমনটা নয়। কালার সাইকোলজি অনুসারে কালার চার্টের অনেক রঙের সঙ্গেই মনস্তাত্ত্বিক সংযোগ রয়েছে। তবে একই রং যে সব মানুষের মনে একই রকম প্রভাব ফেলে, তা-ও নয়। কেননা ব্যক্তিভেদে ফিল গুড ফ্যাক্টরগুলোও ভিন্নভাবে কাজ করে। মনস্তত্ত্ব আর অভিজ্ঞতার আদলে মানুষের চাহিদাও পাল্টায়। পরিবর্তিত হয় পার্সোনাল স্টাইল। উদাহরণ হিসেবে কালার সাইকোলজি মোতাবেক হলুদ, কমলাসহ অন্যান্য সাইট্রাস রং মনে ইতিবাচকতা তৈরি করে। তবে যারা একটু অন্তর্মুখী, তারা এ রংগুলোতে স্বচ্ছন্দ না-ও হতে পারেন। অন্যদিকে প্যাস্টেল শেডও মানুষের মন উৎফুল্ল করে দেওয়ার জন্য উপযোগী। কিন্তু আচরণগত দিক দিয়ে যারা শক্তিশালী এবং কর্তৃত্বপূর্ণ, তারা প্যাস্টেল পরলে ততটা সাহসী না-ও অনুভব করতে পারেন। মানসিকভাবে শক্তিশালী এবং খোলামেলা মনের অধিকারীদের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, মনোক্রোমেটিকে তারা সবচেয়ে ভালো অনুভব করেন। অনেক ফ্যাশন বিশেষজ্ঞের মত, ডোপামিন ড্রেসিং কোনো ট্রেন্ড নয়। তাদের ভাষ্য, ‘ইটস সিম্পলি হোয়াট আ গুড ফ্যাশন ইজ।’
সেলফ স্টাইলিংয়ের সুস্পষ্ট ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানিয়ে পোশাক পরিধান করা হয় ডোপামিন ড্রেসিংয়ে, যা মন রাখে উৎফুল্ল। কিন্তু কীভাবে বোঝা যাবে কোন পোশাকে ডোপামিনের উদ্রেক হচ্ছে? সে ক্ষেত্রে কিছু কৌশল খাটানো যেতে পারেÑ
 স্মৃতি হাতড়ে বেড়ানো: ফেসবুক বা ইনস্টা ফিড ঘেঁটে কিন্তু এ কাজ সহজেই সেরে নেওয়া যায়। কোন পোশাকে সেরা দেখানোর আনন্দ অনুভূত হয়েছিল, সেটা বের করে লুকটার খুঁটিনাটি তথ্য টুকে রাখা যেতে পারে। শুধু রং নয়, নজর দিতে হবে শিলুয়েটেও। চাপানো না ঢিলেঢালা, বোল্ড এ লাইন শেপ না বডিকন, সেটাও টুকে রাখতে পারেন। কোনো নির্দিষ্ট কালার প্যালেটে দুর্বলতা আছে কি না, তা-ও বের করে নেওয়া যাবে ফিড ঘেঁটে। এমনকি পোশাকের ম্যাটেরিয়াল আর ব্র্যান্ডও থাকতে পারে তালিকায়।
 ট্রায়াল অ্যান্ড এরর: ডোপামিন ড্রেসিংয়ের জন্য এ দারুণ ফলপ্রসূ। এতে করে কোন পোশাক পরলে আনন্দ হয় আর কোনটায় স্বস্তি মেলে না, তা বের করে নেওয়া সম্ভব। যেমন প্লেইডেড ব্লেজার পরে মনে হলো একদমই মানাচ্ছে না কিংবা স্কয়ারড টো শু পায়ে মোটেই খাপ খাচ্ছে না, অন্যদিকে ওভারসাইজড হুডি পরলে হঠাৎ করেই মনটা খুশি হয়ে যাচ্ছে। তাই ট্রায়াল করে এমন পোশাক খুঁজে বের করতে হবে, যা ব্যক্তিত্বের সঙ্গেই পুরোপুরি খাপ খায়। আরও সুন্দর করে ফুটে ওঠে নিজস্বতা। দিলও খুশ হয়ে ওঠে!
ডোপামিন ইজ ইন
গেল দুই বছর প্যাস্টেলই ছিল প্যানডেমিক ট্রেন্ড। কিন্তু সময়ের সঙ্গে অতিমারির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা ব্র্যান্ড আর রিটেইলাররা এখন নড়েচড়ে বসেছেন। ফলাফল—উজ্জ্বল, সাহসী রং আর প্রিন্ট ফ্যাশন চার্টে এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ক্রেতাদের মাঝেও বেড়েছে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা; ঝোঁক বাড়ছে রঙের বৈচিত্র্যে। মজার ব্যাপার হলো, লকডাউনের বাঁধাধরা শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাটকীয় পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে ক্রেতা চাহিদাতে। জরিপ বলছে, উজ্জ্বল রং আর প্লেফুল প্রিন্টের কাটতি বেড়েছে ফ্যাশন বিশ্বে। নিয়ন কালার প্যালেট থেকে টাইডাই, এমনকি রঙিন প্লাস্টিক জুয়েলারির কাটতি বেড়েছে অনেকাংশে। বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, যা কিছুতেই পরিধানকারীর মন উৎফুল্ল হচ্ছে, তাই পৌঁছে যাচ্ছে ট্রেন্ডের শীর্ষে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ডোপামিন ড্রেসিং। গেল বছর থেকে জোর জানান দেওয়া এই ফ্যাশন ট্রেন্ডের ছাপ দেখা গেছে রানওয়ে টু রেড কার্পেটে। লাক্সারিয়াস থেকে হাই স্ট্রিট ব্র্যান্ডগুলোর অটাম উইন্টার রিসোর্ট ওয়্যার হয়ে প্রি স্প্রিং কালেকশনে।
‘দ্য সাইকোলজি অব ফ্যাশন’-এর লেখক প্রফেসর ক্যারলিন মেয়ারের মত, এবারের অতিমারি আচরণগত এমন কিছু পরিবর্তন এনেছে, যেগুলো আগে থেকে একদমই ঠাহর করা যায়নি। সাধারণত এ ধরনের পরিবর্তনে একটা লম্বা সময় প্রয়োজন হয়; দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া পার করতে হয়। কিন্তু কোভিডের বছরগুলোতে ঝড়ের বেগে মানুষের প্রাধান্য পাল্টেছে। জীবনের প্রতি ভালোবাসা বেড়েছে বিধায় চিন্তাভাবনায় স্বকীয়তা আর ব্যক্তি পছন্দকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে মানুষ। বর্তমানকে উদযাপনেই বেশি ব্যস্ত সবাই। পোশাকেও তারই সুস্পষ্টতা। নিজেকে প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পোশাক। সবার নজর কাড়ার পাশাপাশি উপস্থিতি জানান দেবে—এমন সব পিসের প্রতি ঝুঁকছেন ক্রেতারা। ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের জরিপ অনুসারে শুধু আমেরিকাতেই ক্রেতাদের রিটেইল ব্যয় বেড়েছে শতকরা ১০ দশমিক ৫ থেকে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ; যার মূল্যমান প্রায় ৪ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং ফার্ম মিকেঞ্জি অ্যান্ড কোম্পানি মোতাবেক ২০২১ সালে ক্রেতাদের মধ্যে শতকরা ৫০ শতাংশই শুধু নিজেদের ট্রিট দেওয়া বা খুশি করার জন্যই ব্যয় করেছেন। এর মধ্যে শতকরা ৬১ শতাংশের ভাষ্য, লকডাউন শিথিল হওয়া উদযাপনেই নিজেদের উপহার দেওয়াতে কার্পণ্য ছিল না এতটুকুও। প্যানডেমিকের তৃতীয় বছরে পা রাখতে চলা এই সময়ে আনন্দ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা ছিল সবকিছুতেই। সে ক্ষেত্রে কালারফুল ওয়্যারড্রোব আর যা ইচ্ছা তা পরে নেওয়ার স্বাধীনতাও যে কম আনন্দের নয়, তা বুঝে ওঠার পর থেকেই ডোপামিন ড্রেসিংয়ের চর্চা বেড়েছে বহুগুণে।
ফ্যাশনবোদ্ধাদের মত, এই ট্রেন্ড পোস্ট লকডাউন রিভেঞ্জ স্পেন্ডিংকে ভালো টক্কর দেবে বছরজুড়ে; বিশেষ করে আমেরিকা ও চীনের ফ্যাশন মার্কেটে, যা অনুসরণ করবে গোটা ফ্যাশন বিশ্ব। বিশ্বের জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর মত, দীর্ঘ সময় ধরে চলবে এই ট্রেন্ড। কারণ, রঙের প্রতি বিশেষ চাহিদা দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের মাঝে। নীল, সবুজ, গোলাপির কাটতি বেড়েছে গেল বছরই। গুচি এবং হারগোর মতো বাঘা ব্র্যান্ডগুলোর সেলস রিপোর্ট বলছে এ কথা। রেডি টু ওয়্যার, অ্যাকসেসরিজ, ফাইন জুয়েলারি থেকে জুতা—ফ্যাশনের সব ক্যাটাগরিতেই রঙের ছড়াছড়ি। সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্রাইট কালার আউটফিটের স্টাইলিং নিয়ে তৈরি কনটেন্টগুলোতেই সাড়া মিলছে সবচেয়ে বেশি।
গেল বছর থেকে শুরু হওয়া ডোপামিন ড্রেসিং ট্রেন্ডকে প্রথম পথ দেখায় টাইডাইং টেকনিক। ২০২১-এর সামার সিজনে। এ বছর রঙের ছাপ আরও স্পষ্ট। বোল্ড ব্লক কালারের রমরমা থাকবে বছরজুড়েই। ২০২২-এর শুরুতে প্রাদার বোল্ড ইয়েলো রাফিয়া কালেকশন আর সাসটেইনেবল ফ্যাশন ব্র্যান্ড পানগাইয়ার বোল্ড কালার কালেকশনে মিলেছে আভাস। সামনের সিজনেও ক্রেতাচাহিদার তুঙ্গে থাকবে ডোপামিন ড্রেসিং।
রিটেইলারদেরও তেমনই মত। কারণ, প্যানডেমিকের প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ে ফ্যাশনকে এখন নতুন রূপে দেখতে শুরু করেছেন সচেতনেরা, নতুনকে গ্রহণে আরও স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠেছেন। ফলাফল—২০২০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত নিয়ন কালারের জন্য ফ্যাশন রিটেইলারদের ইনভেস্টমেন্ট ৯৬ শতাংশ অব্দি বেড়েছে। প্যানডেমিক শুরু হওয়ার পর পার্টিওয়্যারেও বেড়েছে রঙের ব্যবহার। ক্রপড টপ, স্টেটমেন্ট ট্রাউজার থেকে মিনি ড্রেসে। ডোপামিন ড্রেসিং তৈরি করছে টিকটকের মাইক্রোটেন্ডও। যার মধ্যে অন্যতম #coconutgirl ট্রেন্ড। রঙচঙে সামারি কালার প্যালেট আর আইল্যান্ড প্রিন্ট পরার এই ট্রেন্ড ১০০ মিলিয়নের ওপরে ভিউ পেয়েছে শুধু এই একটি প্ল্যাটফর্মে। #kidcore ট্রেন্ডেও মেতেছিল টিকটক। ৫৮০ মিলিয়ন ভিউ নিয়ে রঙিন বিডসে তৈরি জুয়েলারি আর অ্যাকসেসরিজের এই ট্রেন্ড এখন মাতাচ্ছে মেইনস্ট্রিম ফ্যাশন দুনিয়া।
পিনটারেস্টের ২০২২ ট্রেন্ড ফোরকাস্ট রিপোর্ট বলছে, ‘ড্রেসিং লাউড ইজ দ্য নিউ ড্রেসিং ডাউন দিস ইয়ার’ সাইটটিতে ইলেকট্রিক ব্লু আউটফিট, ভাইব্র্যান্ট আউটফিট, রেইনবো ড্রেস ওমেন, ফুশিয়া ড্রেস আউটফিট এখন ট্রেন্ডিং সার্চ আইটেম, যা জেনজেডদেরও প্রভাবিত করছে প্রবলভাবে।
স্প্রিং সামার ২০২২-এর ফ্যাশন রানওয়েতে চোখ ফেরালে দেখা যায়, তাতেও ডোপামিন ড্রেসিংয়ের প্রভাব। শ্যানেলের রানওয়ে জুড়ে দেখা গেছে নব্বই অনুপ্রেরণার হলুদ আর গোলাপি টুইড কো অর্ড স্যুট। অন্যদিকে স্টেলা ম্যাককার্টনি ইলেকট্রিক গ্রিন আর রয়্যাল ব্লু দিয়ে তৈরি কালেকশন নজর কেড়েছে পুরো ফ্যাশন বিশ্বের। এতেই আভাস মিলেছিল প্যান্টনের হটেস্ট কালার অব দ্য ইয়ার ২০২১ ইলিউমিনেটিং ইয়েলো দিয়ে বছর শেষ হলেও রং পিছু ছাড়বে না এ বছরও। প্যান্টনের কালার অব দ্য ইয়ার ২০২২-এর অর্কিড পিঙ্ক রঙা ভেরি পেরিতেই তার প্রমাণ।

মডেল: শিরীন শিলা ও আজিম
মেকওভার: পারসোনা
জুয়েলারি: আমিসে
ওয়্যারড্রোব: ওটু ও মুক্তা
ছবি: জিয়া উদ্দীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top