skip to Main Content

কুন্তলকাহন I কেয়ার ফর কার্লি

চুলের যত্ন নিতে হয় ধরন মেনে। কোঁকড়া চুল স্টাইলিংয়ের উপযোগী করে তোলার জন্য চাই বিশেষ পরিচর্যা

লুকে ভিন্নতা সৃষ্টি করা যায় চুলের কাটিং, স্টাইল কিংবা বাঁধুনিতে বৈচিত্র্য এনে। তবে তার জন্য চাই সুন্দর ঝরঝরে চুল। সোজা, সিল্কি বা কোঁকড়ানো- যে ধরনেরই হোক না কেন, চুল সুস্থ ও সুন্দর না হলে তাতে কোনো সাজই ভালো দেখাবে না। অকালে ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা তো শতভাগ। তাই সুন্দর চুল পেতে যত্ন নেয়ার বিকল্প নেই। অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে ও চুলের ধরন বুঝে। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, যত্নের জন্য আবার ধরন মানতে হবে কেন? জবাব, সব ধরনের চুলে একই রকমের যত্ন প্রযোজ্য ও কার্যকর নয়। সোজা চুলে যে যত্ন দরকার, তা ওয়েভি কিংবা কার্লি বা কোঁকড়ানো চুলে ভালো ফল দেবে না। ভিন্নতা মেনে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। চুল ভালো রাখার জন্য।
সোজা চুলের চেয়ে কোঁকড়া চুলের যত্নের প্রয়োজন হয় বেশি। এ ধরনের চুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা বেশি। পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল হচ্ছে যেকোনো স্টাইলিংয়ের ভিত্তি। সাধারণত কোঁকড়া চুল ভঙ্গুর ও শুষ্ক হয়। তাই এর জন্য সবচেয়ে ভালো হলো অ্যালকোহলমুক্ত পণ্য ব্যবহার করা।
প্রথমেই আসা যাক শ্যাম্পুর কথায়। কোঁকড়া চুলও শুষ্ক বা তৈলাক্ত হতে পারে। তাই এর ধরন বুঝে হেয়ার কেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহার করতে হয়। চুল শুষ্ক হলে শ্যাম্পু করার অন্তত এক ঘণ্টা আগে তেল লাগিয়ে নিতে হবে। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল আলতো করে রাউন্ড মুভমেন্টে ম্যাসাজ করে লাগাবেন। চুল ঝরঝরে দেখাতে ঘন ঘন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। করলে, তা আরও শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে পড়বে। শুষ্ক চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এগ শ্যাম্পু। যাদের কোঁকড়া চুল, তাদের জন্য মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখাটা বিশেষ জরুরি। কেননা এ ধরনের চুলের গোড়ায় সহজে বাতাস পৌঁছায় না। ফলে মাথার ত্বক ঘেমে ময়লা হয় এবং সহজেই খুশকিযুক্ত হয়ে পড়ে।
তৈলাক্ত চুলে সম্ভব হলে প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। তবে তা মাইল্ড হতে হবে। তৈলাক্ত চুলের বাড়তি তেল দূর করতে লেমন শ্যাম্পু বেশ কার্যকর। সাধারণত শ্যাম্পুতে তরল সাবান বা সিনথেটিক ডিটারজেন্ট থাকে। কিছু শ্যাম্পুতে আবার জেল, লোশন বা ক্রিম বিশেষভাবে ব্যবহৃত হতে পারে। এদের যেকোনোটি স্বাভাবিক চুলে ব্যবহার করা যায়। যাদের মাথার ত্বক সংবেদনশীল, তাদের জন্য হাইপো-অ্যালার্জেনিক শ্যাম্পু বা মেডিকেটেড শ্যাম্পু জুতসই। ভলিউমনাইজিং শ্যাম্পু পাতলা চুলের জন্য। কোঁকড়া চুলে এমনিতেই ফোলানো ভাব থাকে। তবে চুল পাতলা হলে এই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
কতবার ধোবেন, তা চুলের ধরনের ওপর নির্ভর করে। তৈলাক্ত ও পাতলা হলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করা জরুরি। স্বাভাবিক ও শুষ্ক চুলে সপ্তাহে তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করার দরকার নেই।
নন-কেমিক্যাল কন্ডিশনার কোঁকড়ানো চুলের জন্য বেশ ভালো। শ্যাম্পু করার পর প্রাকৃতিক কোনো কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। চায়ের লিকার ও ভিনেগার বেশ কার্যকর। ময়শ্চারাইজিং কন্ডিশনারও কোঁকড়ানো চুলের জন্য ভালো।
এ ধরনের চুল সাধারণত রুক্ষ হয়। তাই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো। ভঙ্গুরতা কমাতে চুল শুকানোর কাজে ব্যবহার করুন এয়ার ড্রায়ার। সময় থাকলে ফ্যানের বাতাসেও শুকিয়ে নেয়া যায়।
চুল ভালো রাখতে মাথার ত্বক সুস্থ রাখাটা খুব জরুরি। এ কাজে নারকেল তেল ও অলিভ অয়েলের ম্যাসাজ সেরা। তেল হালকা গরম করে নিয়ে আঙুল দিয়ে সার্কুলার মুডে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়বে এবং চুল দৃঢ় হবে।
ব্যবহার করুন ময়শ্চারাইজার। এটি মাথার ত্বক হাইড্রেশনে সাহায্য করবে। লিভ-ইন কন্ডিশনার বা অ্যান্টি-ফ্রিজ সিরাম ব্যবহার করুন। এ ছাড়া জটমুক্ত রাখতে নিয়মিত চুল ব্রাশ করাটা জরুরি। চুল শুষ্ক হলে ময়শ্চারাইজিং প্রডাক্ট বেছে নিন। রাঙানো চুলের জন্য কালার সেভ ফর্মুলার পণ্য ব্যবহার করুন।
প্রোটিন ট্রিটমেন্ট এবং বিভিন্ন ধরনের ভেষজ তেল এমন চুলের জন্য বেশ কার্যকর। ভালো কোনো পার্লারে গিয়ে বা বাড়িতে নিজেই এই ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিতে পারেন মাসে একবার।
কোঁকড়া চুলে আর বিড়ম্বনা নয়। ঝরঝরে, সুন্দর এই চুলেই এবার শুরু করুন বৈশাখের বিচিত্র সাজ।

 আহমেদ বুবলি
মডেল: চাঁদনী

মেকওভার: পারসোনা
ছবি: মর্তুজা আলম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top