skip to Main Content

কুন্তলকাহন I গ্লসি হেয়ার

চুলের রঙে উজ্জ্বলতা। স্যালনে না গিয়েই। এমন কিছু উপাদান, যেগুলোর ব্যবহারও সহজ। লিখেছেন তাসমিন আহমেদ

রং থেকে শুরু করে স্টাইলিংয়ের জন্য বিভিন্ন ট্রিটমেন্টসহ পরিবেশগত কারণে চুল স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়। এ ছাড়া অনুজ্জ্বল চুলে কালার সম্পূর্ণ মনে হয় না। এমনকি হাইলাইট করা চুলেরও কয়েক সপ্তাহ পরপর রিফ্রেশের প্রয়োজন হয়, এটি জরুরি। কালারিস্টরা এক মিনিটের জন্য হলেও কাজটি করে নেওয়ার ওপর জোর দেন। তখন এই নিষ্প্রাণ, অনুজ্জ্বল চুল মেরামত করে নিতে বিউটি স্যালনের দ্বারস্থ হতে হয়। কিন্তু সব সময় স্যালনে যাওয়া সম্ভব হয় না, নিরাপদও নয়। এর সমাধানও রয়েছে। ঘরে বসেই চুল উজ্জ্বল করে নেওয়া যায়। আছে বিভিন্ন উপায়। রাঙানো চুলের জন্য এমন সব হেয়ার ট্রিটমেন্ট আছে, যা রঙের কোনো হেরফের না ঘটিয়েই ঝলমলে করে তুলবে।
চুলের জগতে হেয়ার গ্লস ও গ্ল্যাজ টার্মটি পরস্পর বদলে নিয়ে ব্যবহৃত হয়। এই দুটিই চুল ও কালার রিফ্রেশ করে। এগুলোর কাজ চুলের ন্যাচারাল টোন কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া। তবে কৃত্রিম রং ব্লাউন্ড, তামাটে বা বাদামি- এসব ভাইব্র্যান্ট হওয়া নির্ভর করে ব্যবহৃত ফর্মুলার ওপর। ব্লিচিং বা ডাইং করার পর চুল কোমল হতে কয়েক সপ্তাহ সময় নেয়। হেয়ার গ্লস ব্যবহারে এর চেয়ে কম সময়ে চকচকে একটা টোন এনে দেয়। কন্ডিশনার ও স্মুদিং ইনগ্রেডিয়েন্টসের মিশ্রণ থাকার কারণে হেয়ার গ্লস বা গ্ল্যাজ সহজে চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম।
কিন্তু কোন হেয়ার গ্লস বা গ্ল্যাজটি সেরা, তা নির্ভর করে লুক ও ফিনিশিংয়ের ওপর। ঘরে বসে শাইনি হেয়ার ও কালারে এক্সট্রা ভাইব্র্যান্ট পেতে চাইলে কিছু উপায় রয়েছে চুল গ্লসি ও গ্ল্যাজ করে নেওয়ার। এর জন্য নির্ভর করতে হবে ভালো কোনো বিউটি ব্র্যান্ডের হেয়ার প্রডাক্টের ওপর। এ ক্ষেত্রে ড্রাগস্টোর থেকে লাক্সারি সেলুন ব্র্যান্ড- সব অপশনই রয়েছে।
হেয়ার গ্ল্যাজের মধ্যে সাপ্তাহিক বা এর বেশি সময়ের ব্যবধানে নিজের সুবিধামতো ব্যবহারের সুযোগ আছে। এখন বাজারে মানসম্পন্ন ভালো বিউটি ব্র্যান্ডের হেয়ার গ্ল্যাজ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলেই চলে। রেগুলার কন্ডিশনারের বদলে সপ্তাহে একবার এটি ব্যবহার করতে হবে। উজ্জ্বলতা বাড়াতে, হাইলাইট ও কালার ব্রাইট করে নিতে এবং চুলে একটি সফট ও সিল্কি অনুভূতি এনে দিতে এটি বেশ কার্যকর। কোনোটিতে আবার কুইনোয়া, বাদাম এমনকি লাইট-রিফ্লেকটিং পার্টিকল দেওয়া থাকে। এগুলো চুল গ্লো করে স্বাভাবিকভাবেই।
রুক্ষ, কালার বা অন্য কোনো কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টের কারণে কিছুটা রাফ হয়ে যাওয়া চুলের গ্লো ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন কোমল হেয়ার প্রডাক্টের। এগুলোর বৈশিষ্ট্য বাড়তি চাপ না ফেলেই চুলের লুক এক্সপেনসিভ করে তোলা। এতে বিউটি স্যালনের লুক দেবে। এই ফর্মুলার গ্লসগুলো বেশির ভাগই ভেগান ও রুক্ষ উপাদান মুক্ত। তাই এগুলোর ব্যবহার বেশ চমৎকার অনুভূতির অভিজ্ঞতা এনে দেবে। চুলের ব্যাপারেও রাখবে ভাবনাহীন।
ভঙ্গুর, দুর্বল ও প্রাণহীন চুলের জন্য গ্ল্যাজ হেয়ার মাস্ক ট্রিটমেন্ট বেশ কার্যকর। এটি মজবুত, পুষ্ট, মেরামতসহ স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য সব কাজই করে। এ মাস্কের হালকা একটি প্রলেপে চুল হয়ে ওঠে বেশ উজ্জ্বল আর রাঙানো চুলকে করে আলট্রা ভাইব্র্যান্ট। উজ্জ্বলতার সঙ্গে কালার বাড়ানোর দরকার হলে গ্লস ট্রিটমেন্ট মাস্ক আদর্শ। এসব মাস্ক সাধারণত শিয়া বাটার, আমন্ড অয়েল, বুরিচি অয়েলের মতো কন্ডিশনার সমৃদ্ধ। উপরি পাওনা হিসেবে মিলবে শেড-কারেকটিং টিন্ট থেকে শুরু করে ব্র্যামিনেস, নিষ্প্রভতা, অক্সিডেশন- এমন সব ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার ট্রিটমেন্ট। এ ছাড়া কম সময়ে চুল উজ্জ্বল ও সতেজ করে নিতে চাইলে বেছে নিতে হবে অ্যামিনো অ্যাসিড, ফ্ল্যাক্স সিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো দ্রুত কার্যকর উপাদান সমৃদ্ধ গ্লস ট্রিটমেন্ট মাস্ক, যা এক মিনিটে ন্যাচারাল ও কালার-ট্রিটেড চুল উপহার দেবে।
ওয়ান স্টেপ টোনিং গ্লস ন্যাচারাল, কার্লি, ওয়েভি ও পিন-স্ট্রেইটসহ সব ধরনের চুল ও টেক্সচারের জন্য নিরাপদ এবং কার্যকর। ব্যবহারও সহজ। শ্যাম্পু করা চুলে শুধু আঙুল বা চিরুনির সাহায্যে পুরো চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। পাঁচ থেকে পনেরো মিনিটের জন্য রেখে ধুয়ে ফেলতে হয়।
এখন গ্লসের সঙ্গে অন্যান্য ট্রিটমেন্টও যুক্ত হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে বেশ চাহিদা রয়েছে গ্লস+সেমিপারমানেন্ট হেয়ার কালার অ্যান্ড ডিপ কন্ডিশনারের। এ ধরনের টু-ইন-ওয়ান হোম হেয়ার গ্লসের সুবিধা হলো- আলাদা করে কয়েকটি প্রডাক্ট ব্যবহারের দরকার পড়ে না। কার্যকারিতাও অনেক। এটি যেকোনো রঙের কালার-বুস্টিং পিগমেন্ট সমৃদ্ধ। এ ছাড়া চুলকে ময়শ্চার ও উজ্জ্বল করে তোলার সময় বাইরের অংশ এক পরত রাঙিয়ে দেয়। এই রং দশ থেকে এগারোবার ধোয়া পর্যন্ত চুলে থেকে যায়।
ব্লিচ ও কালার-ট্রিটমেন্ট করানো চুল সাধারণত ড্যামেজ হয়ে যায়। হার্ড কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় বলে স্বাভাবিকভাবেই এসব চুল উজ্জ্বলতা হারায়। এই ড্যামেজ চুল সঠিকভাবে মেরামত করতে বেশ কার্যকর বায়োটিন। এটি এমন একটি ভিটামিন, যা মজবুত ও স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য অপরিহার্য। বায়োটিন সমৃদ্ধ হেয়ার গ্লসের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হলো সিঙ্গেল ইউজ ট্রিটমেন্ট গ্লস। মাত্র একবার ব্যবহারেই মিলবে বেশ উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রঙের চুল।

মডেল: সানজিদা মালিক
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: জিয়া উদ্দীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top