skip to Main Content

কুন্তলকাহন I জটমুক্তি

চুল সাজানোর পর জট ছাড়ানো। কী যে ঝক্কি! কিন্তু নিয়ম জানা থাকলে সহজ হয়ে যায় সজ্জিত চুল আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা

মাঝে মাঝে হেয়ারস্টাইল করে নেওয়া, নতুন কোনো হেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহারের পর বা ভলিউমের জন্য চুল টিজ বা পাফ করে নেওয়ার কারণে জট তৈরি হয়। বিশেষ করে পার্লার থেকে বা নিজের করে নেওয়া চুলসজ্জা খুলে নিতে পোহাতে হয় বিশাল ঝক্কি। বিয়ের পরে হলে তো কথাই নেই। কনের চুল কতটা পরিপাটি আর ইউনিক করে বেঁধে নেওয়া যায়, সে চেষ্টাই বেশি থাকে। তাতে চুলের সুন্দর বাঁধন তো হলো, কিন্তু খোলার বেলায়? জট ছাড়াতে গিয়ে হতে হয় নাজেহাল। চুল ছিঁড়ে যায়, ফেটে যায় আর সবশেষে হাতের মুঠোয় একরাশ চুল এসে জমে। অনেকে চুল কেটেও ফেলেন। তাই বলে কি আর চুলের সুন্দর বিন্যাস থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখবেন? তার চেয়ে সহজে কীভাবে জট বা টিজ ছাড়িয়ে নেওয়া যায়, তা জেনে নেওয়া ভালো।
সাধারণত বিয়ের মতো জাঁকালো অনুষ্ঠানগুলোতে কনেসহ সবাই পার্লারে গিয়ে চুল নানাভাবে বেঁধে নেন। তখন বিশেষ করে বিহাইভ স্টাইলের বান করে নেওয়ার সময় প্রচুর পাফ করে নিতে হয়। এতে বেশ ফোলানো ভাব আসে আর স্টাইলিং সুন্দর হয়। সেট করে রাখার জন্য এই পাফে হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করা হয়। এতে চুল শক্ত হয়ে পড়ে ও সহজে খুলে যায় না। কিন্তু বেশ জটের সৃষ্টি হয় এবং সহজে তা খোলা যায় না। অনুষ্ঠান শেষে জট ছাড়াতে গেলে চুল ঝরে যাওয়াসহ ডগা ফাটা, রুক্ষ হওয়াসহ নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই স্টাইলিংয়ের পাশাপাশি চুল জটমুক্ত করে নেওয়াটাও শেখা দরকার।
চুল বেঁধে নেওয়ার সময় হেয়ার ড্রেসারকে বলুন যতটা সম্ভব কম হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করতে। এতে টিজ করে নেওয়ার পর চুল খুব শক্ত হয়ে পড়বে না। জট খোলার কাজ সহজ হবে। প্রথমে চুল থেকে সব হেয়ার অ্যাকসেসরিজ ও হেয়ারক্লিপ খুলে নিতে হবে। এবার টিজ করে নেওয়া অংশে বেশ খানিকটা তেল লাগিয়ে নিন। চিরুনি দিয়ে চুলের ডগার দিক থেকে জট ছাড়ানো শুরু করুন। এ কাজে প্রশস্ত দাঁড়ার চিরুনি ব্যবহার করতে হয়। সরু দাঁড়ার চিরুনি চুল আরও বেশি ভঙ্গুর করে তুলবে। তাই চওড়া দাঁতের চিরুনি ও ব্রাশ জট ছাড়ানোর সেরা উপকরণ। এ দুটি পুরোনো হলে আরও ভালো।
শুষ্ক অবস্থায় চুল ব্রাশ করবেন না। এতে ক্ষতি বেশি হয়। চুল ভিজিয়ে নিন। প্রয়োজনে কয়েক মিনিট শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকুন। যাতে টিজ করে নেওয়া অংশ ভালোভাবে ভিজে যায়। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুলে থাকা স্প্রে বা স্টাইলিং উপকরণ ধুয়ে যাবে। ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে প্রচুর ফেনা তৈরি করে নিন। যদি ফেনা তৈরি না হয়ে থাকে, তবে বুঝতে হবে চুল যথেষ্ট ভেজেনি বা বেশ ময়শ্চার হয়ে আছে, আরও শ্যাম্পুর প্রয়োজন। দুবার শ্যাম্পু করে নিন, যদি চুল বেশ ময়লা হয়ে থাকে বা স্টাইলিং প্রডাক্ট থেকে যায়।
শ্যাম্পু করে নেওয়া শেষ হলে অতিরিক্ত পানি নিংড়ে নিয়ে পুরো চুলে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিতে হবে। টিজ করা অংশে নিতে হবে একটু বেশি। চুল জটমুক্ত করার বেশ কার্যকর উপাদান হলো কন্ডিশনার। তবে চুলের পানি ভালোভাবে নিংড়ে নেওয়াটা জরুরি। এতে কন্ডিশনার চুলে গাঢ়ভাবে প্রয়োগ করা যায় এবং এটি ভালোভাবে কাজ করে। কন্ডিশনার লাগানোর পর কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। এতে কন্ডিশনার চুলের ভেতরের দিকে পৌঁছানোর সুযোগ পাবে এবং গিঁট আলগা করে দিতে বেশ সাহায্য করবে।
আঁচড়ানোর সময় অবশ্যই প্রশস্ত দাঁড়ার চিরুনি বা ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। কাঠের চিরুনি এ ক্ষেত্রে ভালো কাজ দেয়। জট বেশি হলে আগে আঙুল দিয়ে কিছুটা ছাড়িয়ে নিন। বেশ ধৈর্য ধরে তা করতে হবে। চুল ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিয়ে নিচের অংশ বা ডগার দিক থেকে আলতো করে আঁচড়ানো শুরু করতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে উপরের দিকে অর্থাৎ গোড়ার দিকে এগোতে থাকুন। অন্যভাবে ছাড়াতে গেলে চুলের ক্ষতি হবে। আর মারাত্মক ভুল হবে চুলের গোড়ার দিক থেকে ডগার দিকে চিরুনির হ্যাঁচকা টান দিলে। চুল নিয়ে বেশি টানাটানি করবেন না। প্রয়োজনে ধুয়ে নেওয়ার পর হেয়ার সেরাম ব্যবহার করে নিতে পারেন। এতে চুল নরম ও মসৃণ হবে। জট ছাড়িয়ে নেওয়াটা সহজ হবে।
চুলসজ্জার পর জট ছাড়ার নিয়ম তো জানা হলো। ফের একে সাজিয়ে নিন যেমন খুশি।

 আহমেদ বুবলি
মডেল: সূর্য
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top