skip to Main Content

কুন্তলকাহন I টারবান ট্রুথ

তেল ছাড়াও চুলের পরিচর্যার নানা পণ্যের গুণ পুরোপুরি পেতে। হারানো স্বাস্থ্যোজ্জ্বলতা আর ভলিউম ফিরিয়ে আনার জন্য। রহস্য উন্মোচন করেছেন তাসমিন আহমেদ

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, মজবুত চুল। শুধু চাইলেই হবে? তার জন্য সময় দিতে হবে। চেষ্টা থাকতে হবে। তবে অনেকেরই আলসেমি রয়েছে। চুলচর্চায় থাকে অবহেলা। তা ছাড়া এখনকার ব্যস্ত জীবনে চুলের স্বাস্থ্যের দিকে ঠিকঠাক মনোযোগ দেওয়াও কঠিন। কিন্তু এ-ও সত্য, শুধু প্রসাধনী নির্ভর পরিচর্যায় চুলের সমস্যার সমাধান হবে না। প্রয়োজন পড়বে বাড়তি যত্নআত্তির। চিন্তা নেই, জুতসই বেশ কিছু উপায় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে তালিকার প্রথমে থাকবে টারবান থেরাপির নাম। চুলের যত্নে দারুণ কার্যকর পদ্ধতি। অতিরিক্ত আর্দ্রভাব ও জটমুক্ত চুল থেকে মুক্তি দেবে মাত্র পনেরো মিনিটে।
এবার জেনে নেওয়া যাক টারবান হেয়ার থেরাপি কী। এটি আসলে গরম তোয়ালে ব্যবহার করে চুলে স্টিম দেওয়ার একটি পদ্ধতি। এর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হবে ক্যাস্টর অয়েল, রোজমেরি অয়েল, ভিটামিন ই তেল, বাদাম তেলের মতো এসেনশিয়াল বা ক্যারিয়ার অয়েলের মিশ্রণ। মাথার ত্বকে এই তেল ভালোভাবে ম্যাসাজ করে মাখিয়ে রাখতে হবে অন্তত দুই ঘণ্টা। রাতে ঘুমানোর আগে এটা করে নিলে আরও ভালো। সকালে গরম পানিতে ভেজানো গরম তোয়ালে নিংড়ে নিয়ে মাথায় জড়িয়ে নিতে হবে। চুল লম্বা হলে তোয়ালে জড়ানোর আগে খোঁপা করে নিতে হবে। ১৫-২০ মিনিট পর তোয়ালে খুলে নিতে হবে। তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
তোয়ালে থেকে সৃষ্ট বাষ্প চুলের ফলিকলগুলো খুলে দেবে। এতে তেল চুলের গভীরে পৌঁছাতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিয়ে করে তুলবে মজবুত ও স্বাস্থ্যকর। এই থেরাপি স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পাওয়ার সহজ ও কার্যকর উপায়।
এ ছাড়া টারবান থেরাপির আরও কিছু উপকারিতা রয়েছে। যেমন এটি মাথার ত্বককে টক্সিনমুক্ত করে বিশুদ্ধ করে। রক্ত চলাচল বাড়ায়। কোলাজেন উৎপাদনকে উৎসাহিত করে মাথার ত্বকের অবস্থা আরও ভালোভাবে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক করে তোলে। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখার পাশাপাশি এই থেরাপি জ্বলুনি, খুশকি ও বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে চুলকে সুরক্ষা দেয়।
হট টারবান খেরাপির মূল কাজ হলো তেল চুলের গভীরে পৌঁছে দেওয়া। চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগানো এবং কার্যকরভাবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, লম্বা ও মজবুত করে তোলা। চুলের নানা রকম সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং সমস্যা দূর করতে সক্ষম এই থেরাপি।
এ ছাড়া এসেনশিয়াল অয়েল থেকে সর্বাধিক ভালো ফল পেতে থেরাপিটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। হট টারবান থেরাপি চুলের শোষণক্ষমতা বাড়ায়। এতে চুল ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়। এ ছাড়া কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করানো চুলে হাইড্রেশনের খুব প্রয়োজন হয়। হট টারবান থেরাপি এমন চুলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। কোমল ও মসৃণ রাখে।
চুলের অবস্থার ওপর নির্ভর করে টারবান থেরাপি কতবার নেওয়া যাবে। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য মাসে একবারই এটি যথেষ্ট। চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হলে এবং হাইড্রেশনের প্রয়োজন খুব বেশি পড়লে সাত থেকে দশ দিন পরপর টারবান থেরাপি নেওয়া যেতে পারে। তবে খুব বেশি সময় ধরে স্টিম করা যাবে না। এতে চুল দুর্বল হয়ে যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, তোয়ালে ভেজানো পানি যেন অতিরিক্ত গরম না হয়। এতে মাথার ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চুলের বিভিন্ন চাহিদার কথা মাথায় রেখে এসেনশিয়াল অয়েল নির্বাচন করতে হবে। বাড়তি উপকারিতা পেতে তেলের মিশ্রণে যোগ করা যেতে পারে আমলা, নিম, মেথি, হিবিসকাস, তুলসীর মতো অন্যান্য চুলবান্ধব ভেষজ।
থেরাপি চলাকালীন চুল আঁচড়ানো কিংবা তেল মাখানো যাবে না। টারবান থেরাপির পর হেয়ার কেয়ার প্রডাক্ট প্রয়োগের আগে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।

মডেল: রিফা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top