skip to Main Content

টেকট্রেন্ড I স্মার্ট টাইম & ফিটনেস

হাল ফ্যাশনে পরিধানযোগ্য গ্যাজেটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পণ্য হচ্ছে স্মার্টব্যান্ড বা ফিটনেস ব্যান্ড। লিখেছেন তৌহিদুল ইসলাম তুষার

চলছে স্মার্ট ব্যান্ডের ট্রেন্ড। রঙিন ব্যান্ড এনে প্রযুক্তিপ্রেমীদের নজর কেড়েছে শাওমি। এই স্মার্ট ব্যান্ড বা ঘড়ি তৈরি করছে অ্যাপল, মাইক্রোসফট, স্যামসাং, হুয়াওয়েসহ ছোট-বড় অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। পণ্যটি শরীরকেও ফিট রাখতে সাহায্য করে। ব্যবহারকারীর হাঁটা, ঘুমের মাত্রা, হার্ট রেট পরিমাপের মধ্য দিয়ে। এতে রয়েছে সেন্সিং, ম্যাক, নেটওয়ার্ক, প্রসেসিং অ্যান্ড স্টোরেজ লেয়ার এবং সার্ভিস লেয়ার। সেন্সিং লেয়ার বিভিন্ন সেন্সর সমৃদ্ধ। এটি মূলত হাঁটার গতি, হার্ট রেট, তাপমাত্রাসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক, যেমন জিএসএম, জিপিআরএস কিংবা এলটিইর মাধ্যমে সার্ভারে তথ্য পৌঁছে দেয়। ব্যান্ড ব্যবহার করে ডিভাইসে রাউটিং, অ্যাড্রেসিংয়ের মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তর করা যায়। একে ফিটনেস ব্যান্ড বলা হয়ে থাকে।
প্রতিটি ফিটনেস ব্যান্ড দেখতে একই রকম হলেও সেন্সিং লেয়ার থাকে ভিন্ন। এর মাধ্যমে ব্যান্ডগুলোকে আলাদা করা হয়। তবে এগুলোর কাজ করার পদ্ধতি একই। ফিটনেস ব্যান্ডের সবচেয়ে মৌলিক এবং সাধারণ সেন্সরটি হচ্ছে অ্যাক্সেলেরোমিটার। এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হলেও ট্র্যাকার হিসেবে কাজ করে। তবে ব্যবহারকারীর হাঁটার স্টেপ পরিমাপেই বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ত্বরণ, কম্পন, অরিয়েন্টেশন— অর্থাৎ ডিভাইসটি কি উল্লম্বভাবে আছে, নাকি অনুভূমিকভাবে আছে, তার ওপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীর অবস্থান, গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করতে পারে।
ডিভাইসগুলোতে বিভিন্ন ধরনের অ্যাক্সেলেরোমিটার ব্যবহৃত হয়। একটির চেয়ে অন্যটি ভিন্ন, শক্তিশালী, সংবেদনশীল এবং এগুলোর মধ্যে অক্ষের ভিন্নতাও রয়েছে। ফিটনেস ট্র্যাকারের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য কোম্পানিগুলো দিন দিন উন্নত অ্যাক্সেলেরোমিটার সেন্সর ফিটব্যান্ডগুলোতে ব্যবহার করছে। জিপিএসের ব্যবহার এগুলোয় পুরোপুরি শুরু না হলেও দিন দিন ব্যবহার বেড়েই চলছে। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিংয়ের মতো স্পোর্টস এবং শারীরিক কসরত আরও যথাযথভাবে পরিমাপ করার জন্য এই প্রযুক্তি সাধারণ অ্যাক্সেলেরোমিটার সেন্সর প্রযুক্তি থেকে উত্তম। তা ছাড়া সহজেই ব্যবহারকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করতে জিপিএস সাহায্য করে, যা মাউন্টেইন রানিং, সাইক্লিং, বাইকিং, ট্র্যাকিং ও হাইকিংয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জিএসআর সেন্সরগুলো মূলত ত্বকের বৈদ্যুতিক সংযোগ পরিমাপ করে। এটি খুব সহজেই ব্যবহারকারীদের ওপর দিয়ে যাওয়া ধকলের মাত্রা জানাতে পারে। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি স্ট্রেস, ফোবিয়া, পোস্ট-ট্রমা স্ট্রেস ডিজঅর্ডার, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত রোগীদের সাহায্য করবে বলে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ফিটনেস ব্যান্ডগুলো হার্ট রেট পরিমাপের জন্য ফটোপ্লোসমোগ্রাফি পদ্ধতি ব্যবহার করে। ব্যান্ডের মান, দাম এবং অন্যান্য জিনিসের ওপর নির্ভর করে অপটিক্যাল হার্ট রেট মনিটরের ভিন্নতা রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যান্ডগুলো নির্ভুল হার্ট রেট পরিমাপ করতে পারে। প্রায় প্রতিটি ব্যান্ডেই আজকাল তাপমাত্রা নির্ণয়ের জন্য থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়। এই ফিচার অ্যাথলেটদের জন্য বেশ কার্যকর। সাধারণত কঠিন কোনো ওয়ার্কআউটের সময় সবচেয়ে ভালো রিকভারির সময়টি বেছে নিয়ে ট্রেনিং প্ল্যান করার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা নির্ণয় আবশ্যকীয় হয়ে ওঠে। এই ফিচার সে ক্ষেত্রে বেশ প্রয়োজনীয়। ইউভি সেন্সরের কাজ হচ্ছে ব্যবহারকারীর আশপাশের উজ্জ্বলতা পরিমাপ করা এবং সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকর রেডিয়েশনের ব্যাপারে সাবধান করে দেওয়া। অনেকেই এমবিয়েন্ট লাইট সেন্সরের সঙ্গে পরিচিত। স্মার্টফোনে অটো ব্রাইটনেস অপশনটি চালু করে রাখলে, দিনরাতের আলো পরিমাপ করে ফোনের ব্রাইটনেস বাড়ানো এবং কমানোর কাজটি এই সেন্সরের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। কিন্তু ফিটনেস ব্যান্ডে এটি সময় পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এসব সেন্সর ফিটনেস ব্যান্ডগুলোকে ব্যবহারকারীর হার্ট রেট, শরীরের তাপমাত্রার পরিমাণসহ নানান ধরনের তথ্য দিয়ে শুধু সাহায্য করতে পারে। তবে তথ্যগুলোকে ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য প্রয়োজন ভালো একটি সফটওয়্যার। এখানেই মূলত বিভিন্ন ফিটনেস ব্যান্ডগুলোর মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয়। প্রায় প্রতিটি কোম্পানির ফিটনেস ব্যান্ডের জন্য তৈরি করা সফটওয়্যারগুলোর অ্যালগরিদমে ভিন্নতা থাকায় সব সময় দুটি ব্যান্ডের তথ্য একই রকম না-ও হতে পারে। তবে দিন দিন কোম্পানিগুলো নিজেদের স্বার্থেই সফটওয়্যারগুলোর মান ও নির্ভুলতা বৃদ্ধি করছে।
দেশের বাজারে পাওয়া ব্যান্ডগুলোর একটি হলো ফোর। প্রথমবারের মতো এতে যুক্ত হয়েছে রঙিন পর্দা। এ ছাড়া রয়েছে শাওমির ব্যান্ড থ্রি, হুয়াওয়ের কালার ব্যান্ড, লেনেভোর স্মার্ট ব্যান্ড, অ্যাপল এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি ফিটসহ চায়না ফিট ব্যান্ড বা স্মার্টওয়াচ। বাজার ঘুরে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় মিলবে এসব স্মার্ট ব্যান্ড বা ফিটনেস ব্যান্ড।

ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top