skip to Main Content

ফরহিম I ওভারনাইট হেয়ার প্যাক

সারা দিনের কর্মব্যস্ততায় চুলের পরিচর্যায় সময় পাওয়া কঠিন। তাই রাতভর যত্নের কিছু দাওয়াই। লিখেছেন সিফাত বিনতে ওয়াহিদ

চুলের স্বাস্থ্যের ওপর জিনের গভীর প্রভাব আছে। পুরুষদের এটি অনেক ক্ষেত্রেই বংশানুক্রমিক ব্যাপার হলেও কখনো কখনো পুষ্টির অভাবে চুল পড়া শুরু করে। কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি এর সমাধানে দারুণ কাজে দেয়।
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও চুল ঝরে যেতে পারে। তবে ঠিকমতো যত্ন নিলে চুলের পুরোনো সুস্থতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সোরিয়াসিস বা ক্রনিক পেট খারাপের সমস্যা থাকলেও চুল পড়তে শুরু করে। এ জন্য বিশেষ নজর দিতে হবে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে।
ঘন কালো একঝাঁক চুল দেখলেই মনে প্রশ্ন জাগে, এ রকম চুল কি সবার মাথায় থাকা সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব! এ জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে একটি ওভারনাইট প্যাক। কর্মব্যস্ত জীবনে গোসলের আগে সবার প্যাক লাগিয়ে ভেজা চুলে বসে থাকার সময় হয় না। তবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এ রকম ঝুট-ঝামেলা এড়ানো সম্ভব। ঘরে বানানো এই ওভারনাইট প্যাকটি মাথায় লাগিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়া যায়।
প্যাকটি এমনভাবে বানানো হয়, যা এর উপাদানগুলোকে চুলের গভীর পর্যন্ত ঢুকতে সাহায্য করে। ঘুমের সময়টুকু এই প্যাক চুলকে গোড়া থেকে বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
ওভারপ্যাক বানানোর ঘরোয়া পদ্ধতি-
অ্যালোভেরা, অলিভ অয়েল এবং ডিমের কুসুম
ঝরে পড়া কমানো এবং চুলের পুষ্টি বৃদ্ধিতে দীর্ঘদিন ধরেই অ্যালোভেরা ব্যবহৃত হচ্ছে। খুশকি রোধেও তা কার্যকর। অ্যালোভেরার সঙ্গে ডিমের কুসুম এবং অলিভ অয়েলের মিশ্রণ সুস্থ চুল পেতে সহায়তা করে। চারটা ডিমের কুসুমের সঙ্গে এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা এবং এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে এই মিশ্রণ তৈরি করা যায়। পুরো মাথায় মিশ্রণটি মেখে একটা শাওয়ার ক্যাপ পরতে হবে। ঘুম থেকে উঠে সকালে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে গোসলের সময় মাথা ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হয়। নিয়মিত এই মিশ্রণ ব্যবহারে কিছুদিনের মধ্যেই উপকার পাওয়া যাবে।
পেঁয়াজের রস
কয়েকটি পেঁয়াজ ছেঁচে রস বের করে একটি বাটি বা স্প্রে বোতলে নিতে হবে। মাথার ত্বকে সবটুকু রস মেখে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে পুরো মাথা ঢেকে রাখতে হয়। রাতের বেলায় পেঁয়াজের রসের এই ব্যবহার দ্রুতই ইতিবাচক ফল এনে দেবে।
দুধ ও মধু
চুল নরম ও মসৃণ রাখতে কাঁচা দুধ ব্যবহৃত হতে পারে। অন্যদিকে মধুতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। মাথার ত্বকের সংক্রমণ এবং শুষ্কতা থেকে সুরক্ষিত করতে দুধ ও মধুর মিশ্রণ উপকারী। আধা কাপ দুধে এক টেবিল চামচ মধু ভালোভাবে মেশালেই তৈরি হয়ে যাবে। রাতে ভালোভাবে চুলে মেখে শাওয়ার ক্যাপ পরে ঘুমানো যায়। সকালে হালকা গরম পানিতে ভালোভাবে চুল ধুতে হবে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন এই মিশ্রণ ব্যবহারে দ্রুতই ভালো ফল পাওয়া যাবে।
গ্রিন টি এবং লেমন এসেনশিয়াল অয়েল
চুলের গুণগত মান বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা যেতে পারে তাজা লেবুর রস অথবা লেমন অয়েল। এই তেল দেবে স্বাস্থ্যকর চুল। বৃদ্ধিতেও সহায়ক। গ্রিন টির অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য চুলের ক্ষতি রোধ করে এবং পুনর্বার গজাতে সহায়ক। ৪-৫ ফোঁটা লেবুর রসের সঙ্গে ৫ টেবিল চামচ গ্রিন টি মিশিয়ে এটি তৈরি করা যায়।
মেথির গুঁড়া এবং টক দই
ঝরে যাওয়া রোধে এবং পাতলা চুল ঘন করতে মেথি খুবই কার্যকর। এটি মাথার ত্বকে রক্তচলাচল সচল রাখে এবং দ্রুত চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এক চা-চামচ মেথির সঙ্গে দু-তিন চা-চামচ টক দই দিয়ে এই মিশ্রণ তৈরি করা যাবে। এটি পুষ্টি জোগান দেবে এবং চুলের শিকড়কে শক্তিশালী করবে।
নারকেল তেল
চুলের সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ সমাধান। ঝরে পড়া রোধে নারকেল তেল সবচেয়ে কার্যকর বলে বিবেচ্য। এটি মাথার ত্বককে শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এবং চুলের গোড়া সুরক্ষা দেয়। নারকেল তেলে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এ ছাড়া ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা থেকেও এই তেল রক্ষা করতে পারে।
প্রক্রিয়াগুলোতে ধৈর্যসহকারে সময় দিতে হয়। ফলাফল দেখার জন্য অন্তত তিন মাস অপেক্ষা করা জরুরি।

মডেল: রাব্বি
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top