skip to Main Content

ফরহিম I গ্রুমিং মিথ

ছেলেদের নিয়মিত ত্বকচর্চায়ও রয়েছে কিছু মিথ। অনেক সময় বিভিন্ন ব্র্যান্ড কিংবা নন-ব্র্যান্ড তা ছড়িয়ে দেয় বিপণনের স্বার্থে। বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যাখ্যা না থাকা সত্ত্বেও অনেক তরুণ এসব মেনে ত্বকচর্চার রুটিন তৈরি করে থাকেন।
দাড়ি দ্রুত বাড়ায় শেভিং
মেনজ গ্রুমিংয়ে সর্বাধিক প্রচলিত বিভ্রান্তি। ছেলেদের দাড়ি বা ফেশিয়াল হেয়ারের পরিমাণ পূর্বনির্ধারিত বা জেনেটিক। তাই বেশি শেভ করলে দাড়ির ধরন পাল্টে যাবে, এটা ভুল ধারণা। শেভিংয়ের পরে মুখে নতুন দাড়ি জন্মালে তা স্বভাবতই অপেক্ষাকৃত ঘন হয়। কারণ, এগুলো তখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। তাই অনেকে ধরেই নিতে পারেন, অতিরিক্ত শেভিংয়ের ফলে মুখে বাড়তি দাড়ি জন্মাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভুল।
ত্বকচর্চার নতুন পণ্যে দাগ হয়
নতুন কোনো স্কিনকেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহার শুরু করলে ত্বকে দাগ দেখা দিতেই পারে। সেটা অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে নয়, বরং ত্বক ওই পণ্যের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর প্রক্রিয়ার একটা চিহ্নমাত্র। এ ধরনের দাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে ভালো ব্র্যান্ডের ময়শ্চারাইজার জরুরি। কারণ, যখন এক্সফোলিয়েট করা হয়, তা ত্বকে থাকা প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে দেয়। সেই ঘাটতি পূরণ করতে বাড়তি ময়শ্চারাইজার ব্যবহারই যথেষ্ট।
অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েশন ত্বকের ক্ষতি করে
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এক্সফোলিয়েশন বা স্ক্রাবিং ত্বকের জন্য ভালো। বিশেষ করে যারা দাড়ি রাখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি শুধু উপকারী নয়, প্রয়োজনও। আর এক্সফোলিয়েশন ক্ষতিকর নয়। বরং এর মাধ্যমে ত্বকের মৃতকোষ উঠে আসে। ভালো মানের এক্সফোলিয়েটরে বালি কিংবা প্রাকৃতিক কঙ্কর ব্যবহার করা হয়। প্লাস্টিকের বিডস দেওয়া এক্সফোলিয়েটর থেকে ত্বককে দূরে রাখাই ভালো।
পুরুষের জন্য তৈরি পণ্যই ব্যবহারযোগ্য
ছেলে হোক কিংবা মেয়ে, ত্বক তো ত্বকই! ছেলেদের ত্বক মেয়েদের তুলনায় একটু বেশি শক্ত আর রুক্ষ বটে। তাই বলে ছেলে আর মেয়েদের পণ্যে যে খুব বেশি রকমফের হচ্ছে, তারই-বা প্রমাণ মিলবে কোথায়! অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলো শুধু রঙ, গন্ধ কিংবা প্যাকেজিংয়ের পার্থক্যেই তৈরি করা হয়।
দাড়ি নিয়মিত পরিষ্কার না করলেও চলে
এই বিশাল ভুল ধারণা মুখত্বকের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। দাড়িতে অপেক্ষাকৃত বেশি ময়লা কিংবা খাদ্যকণা আটকে যেতে পারে। তাই এটি পরিষ্কার রাখা খুব দরকার। তা ছাড়া দূষণ কিংবা আবর্জনায় চুল যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঠিক ততটাই হয় দাড়ি। কোনো কোনো ছেলের চুলের চেয়ে দাড়ির পরিমাণ বেশি থাকতে দেখা যায়! তাদের দাড়ির যত্নও বেশি দরকার।
টাক রোধে চুলের পণ্য
কোনো প্রডাক্টই টাক মাথায় নতুন হেয়ার ফলিকলস তৈরি করতে পারে না। তবে কিছু ওষুধপথ্য কিংবা ক্যাফেইন শ্যাম্পু রয়েছে, যা চুল পড়ার গতি কমিয়ে আনতে পারে। সে জন্য মাথায় কিছু চুল থাকা প্রয়োজন। আর চুল পড়া রোধে হেয়ার প্রডাক্টের পাশাপাশি নিয়মিত অয়েল ম্যাসাজ প্রয়োজন। চুল পড়া রোধে এর চেয়ে কার্যকর কিছু হতে পারে না।
প্রতি গোসলের পর ময়শ্চারাইজার
এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই যে, প্রতিবার গোসলের পরে পুরো শরীর ময়শ্চারাইজ করতে হবে। এটা নির্ভর করে ত্বকের ধরন কিংবা চাহিদার ওপর। যাদের ত্বক তৈলাক্ত, ময়শ্চারাইজার তাদের কোনো কাজেই লাগে না; বরং এতে ত্বকে চিটচিটে ভাব চলে আসতে পারে।
নিয়মিত ব্যবহার্য ট্রিমারের রক্ষণাবেক্ষণ অপ্রয়োজনীয়
কেনার পরে ট্রিমার ইউজার ম্যানুয়াল মনোযোগ দিয়ে পড়লেই এটি দিয়ে তিন বছর অনায়াসে কাটিয়ে দেওয়া যায়। তাই ট্রিমার কিনে বক্সটা ফেলে না দিয়ে ম্যানুয়াল দেখে নেওয়া জরুরি। অনেক ট্রিমারের সঙ্গে ছোট ক্লিনিং ব্রাশ এবং খানিকটা তেলও থাকে। এগুলোও সংরক্ষণ করতে হবে। ঠিকভাবে ও সযত্নে ব্যবহার করলেও নিয়মিত পরিষ্কার করলে ট্রিমারের আয়ু বাড়াবে। শেভিংও হবে আরামদায়ক ও কার্যকর।

 শিরীন অন্যা
মডেল: নিহাফ
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top