skip to Main Content

ফিচার I একটা সিগারেট হবে?

শিরোনাম চমকে দেয়ার মতোই। আপনিও ধন্ধে পড়তে পারেন। প্যান্টের চলতি ট্রেন্ডে সিগারেট শলাকার ভূমিকা আর মাহাত্ম্যের কথা শোনাচ্ছেন আবদুল্লাহ আল কেমী
ফ্যাশনে অধিকাংশ ট্রেন্ডই এখন স্মোকার ফ্রেন্ডলি। ছেলেদের প্যান্টের বেলায় তা শতভাগ সত্য। স্মোকার স্টাইলস ফ্যাশনে ইন থাকার মানে এই নয় যে, স্টাইলিশ হতে হলে স্মোকার হওয়া জরুরি। মূল কথা হচ্ছে, সিগারেট আবিষ্কারের শুরুর দিকে তা হাতে গোনা কয়েকজন অভিজাত মানুষ উপভোগ করতো। সেই সব মানুষের স্টাইল এখন ভিন্টেজ স্মোকার ফ্যাশন। যা আজকালকার ট্রেন্ডে পিকড আপ। প্যান্টের বেলায় সেই ছায়া দেখা যায় বিশদে।
ওভারঅল লুক
একটি প্যান্টের ওভারঅল লুক ফোকাসড হয় দুই ভাগে। প্রথমত, প্যান্টের সারফেস বা কাপড়ের ওপরের চেহারা বিবেচনা করে। দ্বিতীয়ত, ফিট বা প্যান্টের শেপ অনুসারে। তাই ওভারঅল লুক নির্ভরশীল ফ্যাব্রিকের ধরন ও প্যাটার্নের ওপর।
প্যান্ট সারফেস
ট্রেন্ডি প্যান্ট ফ্যাব্রিকের তালিকায় রয়েছে সব স্মোকার স্টাইল। এর মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছে মোটা কাপড়। কর্ডুরয় বা চলতি ভাষায় যাকে আমরা কড বলি, এই ফ্যাব্রিক শুরুর দিকে ব্যবহৃত হতো বিলাসী মানুষের পোশাকে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে অনেক আগেই তা জনসাধারণের ওয়্যারড্রোবে প্রবেশাধিকার পেয়েছে। ফ্যাশনে দেখা গেছে এই যুগের আগেও। কয়েক যুগ আগে এই কাপড়ের প্যান্ট আর জ্যাকেটের স্টাইলিং করা হতো মেজাজি স্বভাবের থিম ধরে। যার সঙ্গে স্মোকার স্টাইল জড়িত। মোটা কাপড়ের আরেকটি উদাহরণ উলের ফেব্রিক। উলেন কাপড়ের চিনোগুলোকে ডাকা হয় উলেন ট্রাউজার। অনেকের ধারণা হতে পারে, এসবই শীতপ্রধান দেশের ফ্যাশন। কিন্তু সত্য হচ্ছে, এগুলোই বিশ্বব্যাপী গৃহীত ফ্যাশন। বাংলাদেশের মতো আবহাওয়ায় এসব প্যান্ট পরা হয় মার্জিত জায়গায়, উৎসব বা পার্টিতে। আর অন্যদের চেয়ে আমাদের এখানে বেশি পরা হয় গ্যাবার্ডিন। গ্যাবার্ডিন ফ্যাব্রিকও আর আগের মতো নেই। নতুনত্ব এসেছে বুননে। টুইল লাইনগুলো নিয়েছে মোটা আকার। যার জন্য এই চিনোজকে বলা হচ্ছে টুইল চিনো। আরেক মোটা কাপড়ের নাম ডেনিম। কিন্তু ডেনিম নতুন করে ট্রেন্ডে আসার কিছু নেই। সব সময়ই তা ফ্যাশনে থাকে। তবে প্রতিনিয়ত বদলায় ডেনিমের ট্রেন্ড। ডেনিম তাই আলাদা করে বিশাল অংশ নিয়ে থাকছে। নিট ফেব্রিকের প্যান্ট এখন জনপ্রিয়। জগার্স স্টাইলে সবার আগে। ট্রেন্ডে পাওয়া যায় নিট ডেনিমেরও জগার।
ফিট
প্যান্টের একটি বহুল প্রচলিত ফিটের নাম সিগারেট ফিট। এখনকার ট্রেন্ডি ফিটগুলো সেই ফিটের আশপাশেই সীমাবদ্ধ। শেপ-প্যাটার্নে সেগুলো স্মোকার স্টাইলের অন্তর্ভুক্ত। সে ক্ষেত্রে স্ট্রেচি প্যান্টগুলো স্কিনি ফিট হতে পারে। নন-স্ট্রেচির মধ্যে ন্যারো, সেমি-ন্যারো, স্লিম, রেগুলার ফিট পুরোনো। নতুন আঙ্গিকে যোগ হয়েছে ট্যাপেয়ার্ড ফিট, স্লিমলাইন জগার, রিল্যাক্স লেগড ফিট। চলমান ট্রেন্ডে নতুন-পুরোনো মিলিয়ে অধিকাংশ ফিটে একটি সাধারণ বিষয় হচ্ছে ক্রপড ফ্যাশন। মানে প্যান্টের বটম লাইন থাকবে গোড়ালির উপরে। কখনো সরাসরি ক্রপড মুডে পরা হয়, আবার কখনো লম্বা প্যান্টকেই নিচের দিক থেকে গুটিয়ে নেয়া হয়। এমনকি কার্গো প্যান্টের বেলাতেও এখন ক্রপড ফ্যাশন জনপ্রিয়।
ফিট কারেকশন
ট্রেন্ডি প্যান্ট স্টাইলসে রয়েছে ফিটের মধ্যে কিছু সূক্ষ্ম কাজ। বেসিক ফিটকে পরিবর্তন করার পাশাপাশি ডিজাইনের অগ্রিম সময়ে এই পরিবর্তন চোখে পড়ে। তার মধ্যে অন্যতম কারেকশনের নাম ফ্ল্যাট-ফ্রন্ট প্যান্ট। ছেলেদের মার্জিত প্যান্টগুলোর সামনে এখন আর ডার্ট, গ্যাদার বা কুঁচি দেখা যায় না। সিম্পল প্যাটার্নের ক্যাজুয়াল প্যান্টের মতোই সমান থাকে। তাই এই কারেকশনের নাম ফ্ল্যাট-ফ্রন্ট। জগার ফিট থেকে প্রাণিত হয়ে এখন ডিজাইনারদের দেখা যাচ্ছে অন্যান্য ন্যারো ফিটেও রিল্যাক্সেশন আনতে। টাইট ফিটগুলোর মধ্যে নতুনত্ব আনা হয়েছে হাঁটুর কাছে রিল্যাক্স রেখে। কার্গো শেপের মোবাইল প্যান্টের ফিটে এসেছে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন। ক্রপড ফ্যাশনের খাতিরে এই স্টাইলের প্যান্টে টাইট ফিটের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। যা ট্রেন্ডে ইন।
অন্যান্য
স্মোকার স্টাইলসে প্যান্টের অংশও অন্যান্য অংশের মতো লিঙ্কড আপ। মানে ওভারঅল ফ্যাশনে এই লুকের অংশগুলো একে অন্যের সঙ্গে জড়িত। সিগারেট প্যান্টের মতো ইউনিসেক্স সানগ্লাস, ভিন্টেজ টি-শার্ট, শার্ট এই গেটআপের বিশেষ বিশেষ অঙ্গ। আর দাড়িগোঁফ ভর্তি রাফ ফেস। সঙ্গে সাইড সুইপ, ম্যান-বান বা রক স্টাইলের হেয়ার ও বিয়ার্ড কাট। এমনকি ব্যাগপ্যাক থেকে শুরু করে জুতা- সবই গেটআপের অংশবিশেষ। প্যান্টের ট্রেন্ডের এই জায়গা এখন এমন, যা মার্জিত সমাজে সিগারেট আড্ডার কল্পনা এনে দেয়। যেখানে স্মার্টলি বলা যায়, ‘একটা সিগারেট হবে?’

মডেল: তন্ময়
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top