skip to Main Content

ফিচার I ব্রাশিং বেনিফিট

শুধু দাঁতেরই নয়, দেহত্বকের যত্নেও ব্রাশিংয়ের প্রচলন এখন প্রবাদস্বরূপ। মুখমন্ডলের জন্য প্রক্রিয়াটি নতুন। পদ্ধতিগত ফারাকও আছে, তবে ফায়দা কম নয়

গর্জাস, গ্লোয়িং স্কিন চান? সবচেয়ে সহজ এবং শর্টকাট উপায় হচ্ছে ড্রাই ব্রাশিং। সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক সব তথ্য-উপাত্ত আর বিশ্লেষণ তাই বলে। দেহত্বকের যত্নে যে পদ্ধতি বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সেই একই সূত্র শামিল এতে। উপকারিতাও মিলবে একই ধরনের। তবে কৌশল স্বতন্ত্র। ফেশিয়াল ড্রাই ব্রাশিং ত্বকের লিম্ফেটিক সিস্টেমকে উদ্দীপ্ত করে। ফলে ত্বকস্তরের নিচে জমে থাকা দূষণ দূর হয়। ব্লকেজের জট খুলে যায়। ত্বকের ফোলা ভাব সেরে যায়। হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। ত্বকের পরিপূর্ণ যত্নে এক্সফোলিয়েশন এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে ফেশিয়াল ড্রাই ব্রাশিং চমৎকার অপশন। এতে ত্বকের মৃতকোষ সহজেই সরে যায়। বেরিয়ে আসে নতুন এবং দাগছোপমুক্ত উজ্জ্বল ত্বক। ত্বক প্রাইম করার জন্যও জুতসই ব্রাশিং। কারণ, ত্বকের শোষণক্ষমতা এতে আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। সেরাম, ময়শ্চারাইজার কিংবা সানস্ক্রিন দ্রুততার সঙ্গে সহজেই শুষে নেয় ত্বক। দারুণ ব্যাপার হচ্ছে সব ধরনের ত্বকে, এমনকি স্পর্শকাতর ত্বকেও ড্রাই ব্রাশ করে নেওয়া যায়। তবে বেছে নিতে হবে সঠিক ব্রাশটি। ব্যবহার করতে হবে নির্ভুল উপায়ে।
ন্যাচারাল ব্রিসলে তৈরি ফেস ব্রাশগুলো ফেশিয়াল ড্রাই ব্রাশিংয়ের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এগুলো কোমল হওয়ায় স্পর্শকাতর ত্বকেও ব্যবহার করা যায় অনায়াসে। বডি ব্রাশের চেয়ে তুলনায় ছোট হয়ে থাকে ফেশিয়াল ব্রাশের আকার। গোলাকার কিংবা ডিম্বাকৃতিরগুলো বেছে নেওয়া ভালো। এগুলো সহজেই মুখের ভাঁজগুলোতে পৌঁছে যেতে পারে। হাতলসহ অথবা স্ট্র্যাপ দেওয়া ফেস ব্রাশ বেছে নেওয়া যেতে পারে সুবিধা বুঝে।
মুখত্বক শরীরের অন্য অংশের চেয়ে বেশ পাতলা ও স্পর্শকাতর। ফলে দেহের তুলনায় অনেক বেশি হালকা হাতে ব্রাশ করতে হবে মুখত্বক। খুব চাপাচাপি করে বা টেনে ব্রাশ করা যাবে না একদমই। বডি ব্রাশিং প্রায় প্রতিদিন করা গেলেও মুখত্বকের ব্যাপারটা ভিন্ন। শুষ্ক, স্বাভাবিক আর বুড়িয়ে যাওয়া ত্বকে সপ্তাহে দুদিন ফেস ব্রাশিং যথেষ্ট। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে তা বেড়ে চার দিনে ঠেকতে পারে। ত্বকে কাটা-ছেঁড়া বা আঘাতজনিত সমস্যা থাকলে ড্রাই ব্রাশিং একদম মানা।
শুরুতেই ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর মুছে শুকনো করে নেওয়া প্রয়োজন। চুল পেছনে টেনে বেঁধে নিতে হবে। তারপর ব্রাশিং। গলা থেকে শুরু করতে হবে। গলার মাঝ এবং পাশের অংশ আপওয়ার্ড স্ট্রোকে ব্রাশ টানতে হবে। চিবুকের নিচের অংশের পুরোটা ছোট ছোট স্ট্রোকে উদ্দীপ্ত করে নিতে হবে। তারপর ইনভার্টেড ইউ স্ট্রোকে বুলিয়ে নিতে হবে ব্রাশ। গালে সার্কুলার মোশনের সঙ্গে আপ এবং আউটওয়ার্ড মোশনে তা টানতে হবে। ঠোঁটের উপরের অংশে ব্রাশ চালানোর আগে মাঝ বরাবর ব্রাশটা সেট করে একবার ডান দিকে, আরেকবার বামে আউটওয়ার্ড স্ট্রোক দিতে হবে। নাকের ডগায় সার্কুলার মোশনে বোলাতে হবে ব্রাশ। তারপর নাকের হাড়ের অংশে নিচ থেকে উপরের দিকে ব্রাশ টেনে নিতে থামতে হবে দুই আইব্রাওয়ের মাঝে। তারপর আইব্রাওয়ের উপর থেকে চোখের চারপাশজুড়ে ব্রাশ বুলিয়ে নিতে হবে। কপালও বাদ দেওয়া যাবে না। মাঝ বরাবর রেখে একবার ডানে, আরেকবার বামে ব্রাশ স্ট্রোক দিয়ে শেষ করতে হবে ব্রাশিং সেশন।
মুখের প্রতিটা অংশে পাঁচটা করে স্ট্রোক দিলেই চলবে। পুরো সেশন শেষ হতে মিনিট দশেক সময় লাগবে। ড্রাই ব্রাশিং শেষে মুখটা পানিতে ধুয়ে মেখে নিতে হবে ত্বক উপযোগী সেরাম কিংবা ময়শ্চারাইজার। তবে ব্রাশ করার সময় বেশি অস্বস্তি অনুভূত হলে কিংবা ত্বক লাল হতে শুরু করলে বন্ধ করে দিতে হবে সঙ্গে সঙ্গে। অন্য কারও সঙ্গে ফেশিয়াল ব্রাশ শেয়ার করা একদম মানা। কেমিক্যাল পিল বা ম্যানুয়াল এক্সফোলিয়েটের সঙ্গে একই সময়ে ড্রাই ব্রাশিং ব্যবহার করা যাবে না। অন্তত এক সপ্তাহের একটা ফাঁক যেন থাকে দুই পদ্ধতি ব্যবহারের মধ্যে।
ব্রাশ পরিষ্কারের কথা ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না। উষ্ণ পানিতে সাবান গুলে তা দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। তারপর বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে পুরোপুরি। ব্যবহারের আগে দেখতে হবে ব্রাশ একদম শুকনো কি না।
ক্লিনজিং, টোনিং আর ময়শ্চারাইজিংয়ের সঙ্গে বিউটি রেজিমে যোগ হোক ব্রাশিংও। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, সুন্দর ত্বকের জন্য।

 জাহেরা শিরীন
মডেল: ইফা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top