skip to Main Content

ফিচার I মহালয়া : ‘আয় গো উমা কোলে লই’

বাংলায় দুর্গার নাম উমা এবং গৌরী। উমা এখানে ঘরের মেয়ে। পুরাণের দেবীর লৌকিক বিনির্মাণ হয়েছে বাংলায়। দুর্গাপূজায় উমার আগমনের অপেক্ষা করেন এই ভূখন্ডের বড় অংশের মানুষ। তা পূর্ণতা পায় মহালয়ায়। দুর্গার আগমন উপলক্ষে মহালয়ায় পশ্চিম বাংলার বেতার অনুষ্ঠান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ওই দিন পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনা। এসব নিয়েই লিখেছেন অতনু সিংহ

মহালয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে ঘরের মেয়ে উমার আগমনের ‘প্রতীক্ষা’ বা ‘অপেক্ষা’। কৃষিনিবিড় বাংলায় আর্য বলয়ের বেদ-পুরাণনির্ভর ধর্মীয় আখ্যানই বলুন অথবা আরবে সংগঠিত প্রাতিষ্ঠানিক ইসলামই বলুন, এ সবকিছুকেই নিজের ভূসাংস্কৃতিক ও লোকজগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে নিয়েছে। পারস্যে এসে ইসলামের মধ্যে যেভাবে সুফিয়ানার ব্যাপ্তি ঘটে যায়, ঠিক সেভাবেই বাংলায় এখানকার লোকজগৎ, টোটেম, কৃষিসভ্যতা ইত্যাদির মিথস্ক্রিয়ায় বেদ-পুরাণেরও বিনির্মাণ ঘটে যায়। সেভাবেই তন্ত্র, শাক্ত, বৈষ্ণব ইত্যাদি ধারার পুরাণের দুর্গা বা চন্ডীর বঙ্গীয় রূপ তৈরি হয়েছে। যেভাবে নদীয়ার চৈতন্যধারার সঙ্গে ইসলাম মিলেমিশে বাংলায় গড়ে উঠেছিল ফকিরির নিজস্ব ধারা, যা ঠিক চিস্তিয়া সুফি ধারার মতো নয় অথচ একাদিক্রমে আধ্যাত্মিক ও লৌকিক। সেখানে পুরাণের দেবীর ঘরের মেয়ে উমা হয়ে ওঠা খুব স্বাভাবিক। তার আগমনের প্রতীক্ষায় থাকেন বাংলার মানুষ। মহালয়ায় এর অবসান হয়। বলা হয়, কৈলাশ থেকে উমা তাঁর সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে আসছেন পিতৃগৃহে। এই বিশ্বাস উত্তর ভারতের শঙ্করাচার্য নির্দেশিত হিন্দুত্বের নয়, কৃষিপ্রধান বাংলার মানুষের। এখানে মর্ত্য বলতে আসলে যা বোঝানো হয়, তা বাংলা ভূমি। কারণ, দেবীকে ঘরের মেয়ে হিসেবে অন্য কেউ দেখেনি, দেখেছে বাংলার মানুষ।
অবশ্য মহালয়ার অন্য আরেক গুরুত্ব রয়েছে। তা হলো, আশ্বিনে পিতৃপক্ষের শেষ দিন মহালয়া। সনাতন শাস্ত্রমতে, ওই দিন পিতৃপক্ষের অবসানের পর সূচনা হয় দেবীপক্ষের। নদীর ঘাটে জমায়েত হয়ে সনাতন ধর্মবিশ্বাসী পিতৃমাতৃহীন মানুষেরা সেদিন মৃত পূর্বজনদের প্রতি যে জলদান বা তর্পণ করেন, আসলে তা উৎসবে শামিল হওয়ার আগে অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অতীতের স্মৃতিচারণা। যদিও ধর্মীয় এই আচার বাদেও মহালয়ার জনপ্রিয়তার কারণ, এই দিন থেকেই সূচনা হয়ে যায় শারদোৎসবের। বাঙালি হিন্দুপ্রধান এই উৎসব তার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যাপ্তির কারণে কেবল একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আবদ্ধ নয়, বরং কালক্রমে এটি আপামর বাঙালির সাংস্কৃতিক যাপনেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় দেবীর আবাহন তথা উৎসবে মেতে ওঠার বিষয়টি।
আর বাংলার এই উৎসবকে সামাজিক তথা সাংস্কৃতিক করে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে আসছে গণমাধ্যমগুলো। দুই বাংলায় বেতার ও টেলিভিশনে মহালয়া তথা দেবীপক্ষে দেবীকে বরণ করে নেওয়ার জন্য সম্প্রচারিত হয় শারদকালীন বিশেষ অনুষ্ঠান। পশ্চিমবঙ্গে সুদীর্ঘকাল ধরে বেতারকেন্দ্র আকাশবাণী ভবন থেকে সম্প্রচারিত হয়ে আসছে মহালয়ার বিশেষ গীতি-আলেখ্য। চন্ডীপাঠ, শারদসংগীত ও দেবী দুর্গাকে কেন্দ্র করে বাংলায় পৌরাণিক কাহিনির বিবরণ সহযোগে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের নেতৃত্বে নির্মিত স্তোত্রপাঠ ও গীতি-আলেখ্য আজও সম্প্রচারিত হয় পশ্চিমবঙ্গজুড়ে। যার নাম ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। অখন্ড বাংলার সময় থেকেই কলকাতার আকাশবাণী ভবন থেকে এই অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়ে আসছে। আগে লাইভ অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হতো। বেশ কয়েক দশক ধরে ওই অনুষ্ঠানের রেকর্ড সম্প্রচারিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও সেই গীতি-আলেখ্য অনেকের কাছেই সুপরিচিত। মূলত বেতারের ওই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শারদোৎসবের সূচনায় মহালয়া জনপ্রিয় একটি দিন।

উমার আখ্যান
‘যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী
উমা না কি বড় কেঁদেছে
দেখেছি স্বপন নারদ বচন
উমা মা মা বলে কেঁদেছে।

সোনার বরনী গৌরী আমার
ভাঙ্গর ভিখারী জামাই তোমার
মেয়ের বসন ভূষণ সব আভরণ
তাও বেঁচে নাকি ভাঙ খেয়েছে।’

এই ভক্তিগীতির মধ্যেই স্পষ্ট, বাংলায় দুর্গার দেবী রূপের চেয়ে তাঁর লৌকিক রূপান্তরই জনপ্রিয়। এখানে উমা গিরিরাজের কন্যা, বাংলার মেয়ে। তাঁর জামাই শিব। যে শিব গঞ্জিকা, ভাঙ সেবন করে শ্মশানে-মশানে পড়ে থাকেন, সেই শিবের আলয় থেকে উমাকে তাঁর গৃহে নিয়ে আসার জন্য তাড়া দিচ্ছেন উমার মা মেনকা। তিনি বলছেন, তাঁর স্বর্ণবর্ণের মেয়ে গৌরীর হালত খারাপ শিবের সঙ্গে সংসার করে। কেননা, মেয়ের বসন-ভূষণ সব বেচে নেশা করেছেন জামাই শিব। তাই উমাকে নিজের ঘরে ফিরিয়ে আনার তাড়া দিচ্ছেন মেনকা। মেয়ের জন্য প্রতীক্ষায় দিন কাটছে তাঁর। মা মেনকার ঠিক এই প্রতীক্ষা ক্রিয়াশীল দুর্গাপূজাকে ঘিরে। তবে যে পূজা সাবেকি, ঘরোয়া, আন্তরিক, করপোরেটের থাবা পড়েনি যেখানে, যে পূজা বাণিজ্যের নয়, সেসব ক্ষেত্রে এই প্রতীক্ষার প্রসঙ্গ উল্লেখযোগ্য।
দুর্গাপূজাকে ঘিরে ভিন্ন এক ন্যারেটিভ অবশ্য রয়েছে। সে ন্যারেটিভ হলো বাংলা তথা উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চল দখলের চেষ্টায় আসুরিক সমাজতন্ত্রকে ভাঙতে আর্যরা নানা সময় পরাস্ত হয়। কিন্তু শেষমেশ এক সুন্দরী নারীকে সামনে রেখে অধিপতি মহিষাসুরকে পরাস্ত করে এই পূর্বাঞ্চল দখল করে নেয়। এই ন্যারেটিভের পক্ষে নানা লোকাচার আজও রয়েছে সাঁওতাল, ওঁরাও, কোল-ভিল-মুন্ডাদের মধ্যে। তারা দুর্গাপূজার সময় অসুর স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
কিন্তু আর্য বিজয়ের ন্যারেটিভ যা-ই হোক না কেন, যে দুর্গা এখানে উমা বা গৌরী, তিনি ঠিক আর্য সাম্রাজ্যের নন, বরং কৃষিনিবিড় লৌকিক বাংলায় মিলেমিশে থাকা চিরন্তন কন্যাসন্তানের রূপ।
কবি ফরহাদ মজহারের ‘শিবানী বন্দনা’ কবিতায় গৌরী বা উমা কিংবা শিবানির এই লৌকিক বঙ্গীয় রূপ ফুটে উঠেছে। যেমন-

শিবানি বন্দনা-২
এক
হাজার বছর নামাজ পূজায়
পেয়েছি ধন শিবের কৃপায়
সাক্ষী জগৎ চাঁদ সেতারা
বৃক্ষ জীব কীট পতঙ্গেরা।

সরীসৃপ ও পশুপাখি
তোমার সাক্ষ্যে উঠছে ডাকি
তোমার সাক্ষ্যে মেঘ ও বৃষ্টি
ঋতুর চক্রে প্রাণ ও সৃষ্টি।

বঙ্গে জেনো রাষ্ট্র আছে
শিব আছেন পার্বতীর কাছে
সাধু বাক্য ধার্য জানি
তুমিই সত্য ওঁ শিবানি।।

দুই
গৌরি, বঙ্গে নদ ও নদী
বইছে বইবে নিরবধি
তোমার পায়ের ধুলা চেয়ে
সাগর পড়ছে আছাড় খেয়ে।

শঙ্খে ফেনায় সাগরবেলা
ফর্সা রোদে করছে খেলা
পিঠ দেখিয়ে তিমির মেয়ে
সালাম দিচ্ছে তোমায় পেয়ে।

তুমিই নুন আর তুমিই ফেনা
মহেশ্বর তাই তোমার কেনা।
সাধু বাক্য ধার্য জানি
তুমিই সত্য ওঁ শিবানি।।
আজ প্রভাতে সে সুর শুনে…
১৯৩১ সালে অবিভক্ত বাংলার বেতার কেন্দ্র কলকাতা আকাশবাণী ভবন থেকে মহালয়া উপলক্ষে প্রথমবার প্রভাতি অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়। এর আয়োজন করেছিলেন প্রেমাঙ্কুর আতর্থী, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় ও রাইচাঁদ বড়াল। পরবর্তী সময়ে ওই অনুষ্ঠানের নতুন করে চিত্রনাট্য রচনা করেন বাণী কুমার। সংগীত পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পঙ্কজকুমার মল্লিক। গ্রন্থনা ও স্তোত্রপাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। তার ভরাট ও গম্ভীর কণ্ঠে স্তোত্রপাঠ ও পৌরাণিক কাহিনির গ্রন্থনার কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠলো এই অনুষ্ঠান। তার সঙ্গে ছিল কালজয়ী সংগীতশিল্পীদের গান। স্তোত্রপাঠ, গ্রন্থনা ও সীতে সমৃদ্ধ মহিষাসুরমর্দিনী এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠলো যে শারদোৎসবের অঙ্গ হয়ে উঠলো মহালয়ার দিন বেতারের এই প্রভাতি অনুষ্ঠান। ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ নামক গীতি-আলেখ্যে প্রসিদ্ধ সংগীতশিল্পীদের সুরের জাদু ও বীরেন্দ্রকৃষ্ণের উপস্থাপনায় গড়ে ওঠা এই অনুষ্ঠান কালক্রমে পশ্চিম বাংলার সাংস্কৃতিক যাপনচিত্রে একটি মহীরুহ হিসেবে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছে। বাংলা ভাষার বেতার অনুষ্ঠানই শুধু নয়, গোটা বিশ্বের বিভিন্ন বেতার অনুষ্ঠানের মধ্যে এটি বিশেষ গুরুত্ব অর্জন করেছে। পঙ্কজ মল্লিকের সংগীত পরিচালনায় এই অনুষ্ঠানে নিয়মিত গান গাইতেন সুপ্রীতি ঘোষ, শিপ্রা বসু, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, সুমিত্রা সেন, শ্যামল মিত্র, আরতি মুখোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, কৃষ্ণা দাশগুপ্ত, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, উৎপলা সেন, বিমলভূষণ, অসীমা ভট্টাচার্য প্রমুখ। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানটির আকাশবাণী ভবন থেকে লাইভ সম্প্রচার হতো। তারপর থেকে মহালয়ার দিন এর রেকর্ড সম্প্রচারিত হতে থাকে। যদিও এরই মধ্যে দু-একবার লাইভ সম্প্রচার হয়েছে। ১৯৭৪ সালে বীরেন্দ্রকৃষ্ণর বদলে উত্তমকুমারকে দিয়ে মহিষাসুরমর্দিনীর গ্রন্থনা ও স্তোত্রপাঠ করানো হয়। মজার বিষয়, উত্তমকুমারের জনপ্রিয়তা গগনচুম্বী হলেও তার কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী মেনে নেননি শ্রোতারা। পরের বছরেই আবার স্বমহিমায় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ অনুষ্ঠানে ফিরে আসেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। তারপর থেকে আজ অবধি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর উপস্থাপনাতেই ওই অনুষ্ঠানের রেকর্ড সম্প্রচারিত হয়ে আসছে। অনুষ্ঠানের অডিও-সিডি, ডিভিও এখন সহজলভ্য। অজ¯্র ইউটিউব চ্যানেলেও রয়েছে ওই অনুষ্ঠানের রেকর্ড। সারা বছর ইচ্ছে করলেই যে কেউ শুনে নিতে পারেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’, কিন্তু মহালয়ার প্রভাতে ওই অনুষ্ঠান শোনার জন্য মানুষের উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো। ধর্মীয় কারণে নয়, বরং বাংলার গণজীবনের একটা বড় অংশের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আছে এটি। প্রয়াত বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রও অমর হয়ে আছেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’তে তার ভরাট কণ্ঠের জাদুতে। আজও মহালয়া এলেই পশ্চিম বাংলার ঘরে ঘরে প্রভাতের আলো ফোটার আগেই রেডিওতে শঙ্খধ্বনি বেজে ওঠে, সুরে সুরে সমবেত কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন চন্ডীকা পুরাণের স্তোত্র। আর গ্রন্থনায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ বলে ওঠেন-
আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর; ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা; প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা। আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি অসীম ছন্দে বেজে উঠে রূপলোক ও রসলোকে আনে নব ভাবমাধুরীর সঞ্জীবন। তাই আনন্দিতা শ্যামলীমাতৃকা চিন্ময়ীকে মৃন্ময়ীতে আবাহন। আজ চিৎ-শক্তিরূপিণী বিশ্বজননীর শারদ-স্মৃতিমন্ডিতা প্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানবোধিতা।
এই গীতি-আলেখ্য, গ্রন্থনা ও চন্ডীপাঠের অনুষ্ঠানের একটা বড় অংশ অসুর বধের কাহিনিকে বাংলায় বর্ণনা করা হয়েছে, বাণী কুমারের রচনায়, পঙ্কজ মল্লিকের সুরারোপে তা যেমন ভাবগম্ভীর, ঠিক তেমনই নান্দনিক; একই সঙ্গে দেবী দুর্গার আগমনের বয়ানকে ভাববাদী অলৌকিকতার পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে লৌকিক রূপ। অন্যদিকে, শাস্ত্র মেনে চন্ডীপাঠের মাধ্যমে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ পুরাণ ও লোকাচারের মধ্যে একটা ভারসাম্য তৈরি করে গেছেন।

ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top