skip to Main Content

ফুড ফিচার I কিশমিশ মোরব্বা

আঙুর ভিটিস ভিনিফেরা বর্গের একটি ফল। শুকনো এই ফলকে বলা হয় কিশমিশ। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দেরও অনেক আগে কিশমিশের জন্ম পারস্য ও মিসরে। বাইবেলে শুকনো আঙুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। জানা যায়, ইসরায়েলের রাজা ডেভিড এক শ গুচ্ছ কিশমিশ উপহার পেয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, তিনি এটি পেয়েছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ১১১০ থেকে ১০৭০ অব্দে। প্রাচীনকালে গ্রিক ও রোমানরা কিশমিশ দিয়ে প্রার্থনার স্থানগুলো সুশোভিত করতো। সেই সময় কোনো খেলায় বিজয়ীকে পুরস্কার হিসেবে এটি দেওয়া হতো।
ধরে নেয়া হয়, ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় এর উৎপাদন শুরু হয়। পরবর্তীকালে আমেরিকার কিশমিশ কারখানা ক্যালিফোর্নিয়ায় স্থাপিত হয়। সেখানেই ১৮৫১ সালে আঙুর চাষ শুরু হয়। তারপরও বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এই শুকনো খাবার উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে সেরা ছিল তুরস্ক, গ্রিস ও ইরান।
বিভিন্ন ধরনের কিশমিশের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত থম্পসন সিডলেস। যা সুলতানিনা নামেও পরিচিত। এটি মূলত বীজহীন ফ্যাকাশে কমলা রঙের হয়।
আঙুরের নামে বৈচিত্র্য থাকায় কিশমিশও বিভিন্ন নামে পরিচিত। বীজযুক্ত কিশমিশকে অস্ট্রেলিয়ায় গরদো ব্লাংকো বলে। সাউথ আফ্রিকায় যা হোয়াইট হানিপুট নামে পরিচিত। লালচে কালো রঙের বীজহীন কিশমিশকে জান্তে কারেন্ট বলা হয়, যা গ্রিসের জান্তে দ্বীপে উৎপন্ন হয়।
এই শুকনো ফল পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এতে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি। এই উপাদানগুলো দেহের ভেতর রক্তসঞ্চালন সঠিক রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর আছে ৭০ ভাগ ফ্রুকটোজ, যা তাপে শুকিয়ে যায়। এই ফ্রুকটোজ রক্তের শর্করায় কোনো ক্ষতি করে না।
একে বলা হয় শুকনো ফলের রাজা। যা দিয়ে তৈরি করা যায় বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু খাবার। সাধারণত পায়েস, ক্ষীর, পোলাও ইত্যাদি রান্নায় কিশমিশ ব্যবহৃত হয়। তবে এটি দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু খাবার কিশমিশ মোরব্বা। তৈরির মূল উপাদান হলো কিশমিশ আধা কাপ, চিনি আধা কাপ, মধু দেড় টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো। পদ্ধতিও খুব সহজ। প্রথমে এক কাপ পানির সঙ্গে চিনি মিশিয়ে হালকা আঁচে গরম করতে হবে। এ সময় চামচ দিয়ে নেড়ে দেওয়া জরুরি। দুই মিনিট পর কিশমিশ ঢেলে দিতে হবে। সময় লাগবে পনেরো মিনিট। তবে চুলায় আঁচ থাকবে হালকা। একে বলে সিরা। ঘন হয়ে এলে নামিয়ে ফেলতে হবে। তারপর মধু ও লবণ ভালোভাবে মিশিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করা যায়। এটি ফ্রিজেও সংরক্ষণ করা যায়।
মোরব্বা সাধারণত সকালের নাশতায়, রুটি কিংবা পরোটার সঙ্গে খাওয়া হয়। ভাতের সঙ্গে অনেকে আচারের বিকল্প হিসেবে অনেকে এটি খেয়ে থাকেন।

 রেন্টিনা চাকমা
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top