skip to Main Content

ফ্যাশন উইক I হা ই লা ই ট স

চার ফ্যাশন ক্যাপিটালের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত ফ্যাশন উইকে তুলে ধরা হয়েছে স্প্রিং-সামার ২০১৯ ফ্যাশন-আভাস। এই নিবন্ধে তারই সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরেছেন সাকিব শাহমাত

নতুন বছর সামনে রেখে শেষ ৩-৪ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হয় ফ্যাশন উইকগুলো। তাতে পাওয়া যায় নতুন স্টাইল ও ফ্যাশনের আগমনী বার্তা। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে নিউইয়র্ক, লন্ডন, মিলান ও প্যারিসের শোগুলো। বিশ্বের নানা দেশে অনুষ্ঠিত ফ্যাশন উইকগুলোতেও ডিজাইনারদের সৃজনশীলতা ও স্বাতন্ত্র্য চোখে পড়ে। আন্তর্জাতিক পরিম-লের সঙ্গে নিজস্ব ঐতিহ্যের খাপ খাওয়ানো কালেকশন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ভারত, লাগোস, সিউল ফ্যাশন উইক। চার ফ্যাশন ক্যাপিটালের মধ্যে নিউইয়র্ক, লন্ডন ও মিলানের রিভিউ আগেই হাজির করা হয়েছে। এই আলোচনায় থাকছে প্যারিস ছাড়া আরও তিনটি ফ্যাশন উইকের খবর।

প্যারিস ফ্যাশন উইক

কোরিয়ান ফ্যাশন উইক ও প্যারিস ফ্যাশন উইক

চার দিনের প্যারিস ফ্যাশন উইক শুরু হয় ২৫ সেপ্টেম্বর। যেখানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্র্যান্ডগুলো স্প্রিং-সামার ২০১৯ কালেকশন প্রদর্শন করে। গুচির প্রধান আকর্ষণ ছিল সত্তরের দশকের ‘থিয়েটার আউটফিট’। ব্র্যান্ডটির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর আলেসান্দ্রো মিশেল এই থিমের জন্য ব্যবহার করেন উটপাখির পালক, ফ্লেয়ার স্যুট, রাফেল ড্রেস ইত্যাদি। ডিজাইনার ব্র্যান্ড বালাঁসিয়াগার মূল থিম ছিল ক্রিয়েটিভ ডিজাইন ও নিউ জেনারেশন লুক। স্কয়ার শোল্ডার, পুল ব্যাক, কোকুন কাট, সারং স্কার্ট ইত্যাদির মাধ্যমে ডিজাইনার দেমনা গাভাসালিয়া তা ফুটিয়ে তুলেছেন। এ ছাড়া ছিল বালাঁসিয়াগার সিগনেচার কালেকশন এক্সট্রা লার্জ লোগো স্টেটমেন্ট ডিজাইন।
প্যারিস ফ্যাশন উইকে শ্যানেল, দিওর, সেন্ট লরাঁ, লুই ভুইতোঁর মতো ব্র্যান্ডগুলো যথেষ্ট আলোচনায় থাকলেও এবার সবার নজর কেড়েছে মেইসঁ মারজিয়েলা। ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার ডিজাইনার জন গ্যালিয়ানোর ডিজাইনে ছিল মেল-ফিমেল ফিউশন ড্রেস। তাতে উল্লেখযোগ্য ছিল ব্রোকেড ড্রেস, ক্ল্যাসিক মেনজ জ্যাকেটের সঙ্গে স্কার্টের ফ্যাশন।

ইন্ডিয়া ফ্যাশন উইক

ইন্ডিয়ান ফ্যাশন উইক

৩২তম ইন্ডিয়া ফ্যাশন উইক ২০১৮-এর মূল বিষয় ছিল ফ্যাশনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলা। দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে এটি অনুষ্ঠিত হয়। এই ফ্যাশন উইকে অংশগ্রহণ করেন ১২০ জনের বেশি ডিজাইনার। পুরো ইভেন্টে দেশি-বিদেশি খ্যাতিমান মডেল, ডিজাইনারদের পাশাপাশি ছিলেন বলিউড সেলিব্রিটিরাও।
এবারের আয়োজনে উইমেনস ওয়্যারের বিশেষত্ব ছিল অ্যাবস্ট্রাক্ট প্যাটার্ন ও মেটালিক কালার। ছিল বিভিন্ন ডিজাইনের ম্যাক্সি, পাগড়ি, স্কার্ট, মিনি ড্রেস, প্রিন্ট ড্রেস, শার্ট ইত্যাদি। এ ছাড়া দেখা মিলেছে চাদর, লেহেঙ্গা, স্টেটমেন্ট স্লিভসহ আকর্ষক সব উপাদান।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগ ডিজাইনারের শো স্টপার হিসেবে দেখা মিলেছে বলিউড সেলিব্রিটিদের। তাদের মধ্যে ডিজাইনার জুটি ‘ভূমিকা অ্যান্ড জ্যোতি’র ডিজাইন করা ‘লিমনসেলো’ ড্রেসে সুস্মিতা সেন, সঞ্জয় দত্তের ডিজাইন করা মেখলা চাদরে টাবু এবং বিধি ওয়াদওয়ানি অনসম্বলে ডায়ানা পেন্টি সবার নজর কাড়েন।
এবারের আসরে ছেলেদের পোশাকেও ছিল চমক ও নতুনত্ব। স্ট্রিট স্টাইল এবং ফ্লোরাল মোটিফের নান্দনিক প্যাটার্নের পোশাক ছাড়াও দেখা গেছে এস্কিউ লং লাইন কুর্তার সঙ্গে ঢিলেঢালা প্যান্ট ও স্টেটমেন্ট স্নিকার, ভিন্ন ধাঁচের পরিবর্তিত গোলাপি স্ট্রাইপড প্যান্টের সঙ্গে সাদা শার্ট ও সাদা স্নিকার, রঙিন প্যাটার্নড শার্ট, কালো ফ্লোরাল শার্ট ইত্যাদি।

সিউল ফ্যাশন উইক

সিউল ফ্যাশন উইক

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীর প্রসিদ্ধ ডংডায়মুন ডিজাইন প্লাজায় অনুষ্ঠিত সিউল ফ্যাশন উইকের এবারের থিম ছিল তারুণ্য, স্ট্রিট স্টাইল ও বৈশ্বিক সম্প্রীতি।
সিউল ফ্যাশন উইকে অন্য সব ফ্যাশন উইকের মতো সেলিব্রিটি শো স্টপার, ডিজাইনার আউটফিট, স্টেটমেন্ট ড্রেস সবই ছিল; তবু এই ফ্যাশন উইক অন্যগুলোর থেকে একটু আলাদা। কারণ, এটি সবকিছুর চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয় তারুণ্য, নবীন মডেল-ডিজাইনার ও স্ট্রিট স্টাইলকে।
সিউলের স্ট্রিট স্টাইলের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। এবারও তাই বেশ কিছু স্ট্রিট ওয়্যার ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে। ডিজাইনার উ ইয়ং মির মেনজ ওয়্যার ব্র্যান্ড ‘সলিড হোম’-এর কালেকশনে ছিল বম্বার জ্যাকেট ও ওভারসাইজড স্যুট, চেক ব্লেজার, ইউটিলিটি ভেস্ট। এ ছাড়া ছিল মিলিটারি আউটফিট ও দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলার প্রতীক হিসেবে ‘পিস এনগ্রেভড’ ক্রসওভার অ্যাকসেসরি ব্যাগ।
সলিড হোম ছাড়াও ফ্যাশন ব্র্যান্ড টি-ব্যাগের পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহারে তৈরি পোশাক, ডজো ইন্টারন্যাশনালের ইউনিসেক্স আউটফিট, ডিজাইনার আর শেমিস্তের টারটেল নেক, প্রিন্ট টি-শার্ট ইত্যাদি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এসএ ফ্যাশন উইক

প্যারিস ফ্যাশন উইক

সাম্প্রদায়িকতা ও বর্ণবৈষম্যের শিকার আফ্রিকানদের ঘুরে দাঁড়ানোর এবং বিশ্বের কাছে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের একটি প্রশংসনীয় মাধ্যম সাউথ আফ্রিকান ফ্যাশন উইক। এ বছরের ২৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জোহানেসবার্গে এই ফ্যাশন উইক অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়েই উদযাপিত হয় আফ্রিকান ফ্যাশনের ২১ বছরে পদার্পণ। এবারের আসরে মোট ৭১টি রেডিমেড গার্মেন্টস কোম্পানি ও ৫৬ জন খ্যাতনামা ডিজাইনার অংশ নেন। আফ্রিকার বর্তমান বাজার, ক্রেতাদের চাহিদা ও সাধ্য অনুযায়ী দামের কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা সব পোশাকের মূল অনুপ্রেরণা ছিল আফ্রিকান বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর বিচিত্র পোশাক। ডিজাইনারদের মধ্যে ওমেনস সেকশনে মকুবাং ও মেনজ সেকশনে বাকুসাসা ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছেন।

লাগোস ফ্যাশন উইক

লাগোস ফ্যাশন উইক

আফ্রিকান ফ্যাশনের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পে সাউথ আফ্রিকান ফ্যাশন উইকের পাশাপাশি আরও অবদান আছে নাইজেরিয়ার লাগোসে অনুষ্ঠিত লাগোস ফ্যাশন উইকের। ২০১১ সালে ফ্যাশন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি ‘স্টাইল হাউজ ফাইলস’-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ‘ওমোয়েমি আকিরেলে’র হাত ধরে শুরু হওয়া এই ফ্যাশন উইক খুব অল্প সময়েই বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রধান ফ্যাশন উইকগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
চার দিনব্যাপী উদ্যাপিত এই অনুষ্ঠানেও সব ডিজাইনার, ব্র্যান্ড ও মডেল ছিলেন বৃহত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত। এবারের আসরে সব ডিজাইনারের কালেকশনেই লক্ষ করা যায় প্রাকৃতিক বিভিন্ন রঙের ব্যবহার। যার মধ্যে ‘আন ইয়াঙ্গো এম্পিঙ্গা’ ও কেনিয়ান ব্র্যান্ড ‘কিকো রোমিও’-এর ডিজাইন ছিল সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও প্রশংসিত।
সর্বোপরি এই ছিল এ বছরের স্প্রিং-সামার ২০১৯ সেশনের সব ফ্যাশন উইকের চিত্র।

ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top