skip to Main Content

বিজ্ঞাপন ফিচার I ব্র্যান্ড গড়বো বলে

আমাদের প্রতিদিনের জীবনে অন্যতম অনুষঙ্গ পোশাক। ব্যক্তির স্টাইল স্টেটমেন্টই তুলে ধরে তার ব্যক্তিত্ব ও রুচিশীলতা। এ জন্যই আটপৌরে শহুরে জীবনে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে নানা ফ্যাশনধারা। নিত্যনতুন চাহিদা, প্রয়োজন ও জনপ্রিয়তা অনুসারে ফ্যাশন ডিজাইনার এবং ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো তৈরি করে নানা ধরনের কালেকশন। আর এই পোশাক তৈরির পেছনেও থাকে নানা গল্প। জানা-অজানা এই সব গল্পে লুকিয়ে থাকে একাগ্রতা, শ্রম, সাহস ও ভালোবাসা। এমনই এক গল্পের মূল কুশীলব তাসনুভা। ভিন্নধারার ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে হুট করে ফ্যাশন উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সাহস সচরাচর চোখে পড়ে না। শুধু আগ্রহ আর চারপাশের মানুষকে সুন্দর পোশাকে সাজিয়ে তোলার একাগ্রতায় ডিজাইনিং বা ফ্যাশন ব্যবসায় তার পথচলা শুরু। শুরুতে ফ্যাশন সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা না থাকলেও, একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শুরু করার কথা কতজন ভাবতে পারে।

এ ক্ষেত্রে বলা যায় তাসনুভা রশিদ এই কাজ করেছেন বেশ সাবলীলভাবেই। ভিন্নমাত্রার ডিজাইন, প্যাটার্ন, বাহারি রঙের রেশমি কাপড়ে কারচুপি ও এমব্রয়ডারির কাজ দিয়ে বানানো প্রতিটি পোশাকই স্বতন্ত্র। এ ক্ষেত্রে হুর অন্যদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে। ট্রেন্ডি যেকোনো ধরনের পোশাক থেকে শুরু করে ট্র্যাডিশনাল পোশাক— সবই এখানে তৈরি হয় সুনিপুণভাবে, গভীর মমতায়। উৎসবের পোশাক দিয়ে হুর পথচলা শুরু করলেও পরবর্তীকালে যোগ হয় আরও নানা ধরনের পোশাক। তাসনুভার ভাষায়, ‘আনুষ্ঠানিক কোনো শুরু নেই। মানুষকে সাজাতে ভালো লাগত। সে ধারণা থেকেই হুরের জন্ম। আমার কাছে হুর হচ্ছে সৌন্দর্যের প্রতীক। শুরুটা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। আর এত কম সময়ে এত বেশি সাড়া পাব কখনো ভাবিনি।’
কম সময়ে মানুষের এত কাছে পৌঁছানোর কারণ হিসেবে তাসনুভা বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল সময় উপযোগী সুন্দর পোশাক তৈরি। যে পোশাকগুলো মানুষের ব্যক্তিত্ব ও স্বকীয়তাকে বাহ্যিকভাবে প্রকাশ করে। এ জন্য আমাদের কাস্টমাইজড পোশাকের ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দিতে হয়েছে। এ বিষয়টিই সবার আগ্রহের প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। আরও একটি বিষয়কে আমরা প্রাধান্য দিয়ে থাকি, তা হচ্ছে রঙ। এ সময়ের ছেলেমেয়ে উভয়ের পোশাকে রঙের ব্যবহার অনেকটা সীমাহীন। সে রঙ যদি হয় প্রকৃতির ফুলেল আভায়, তবে তো কথাই নেই। যেমন বৃষ্টিভেজা কৃষ্ণচূড়ার টকটকে লাল অথবা রাধাচূড়ার হলুদ মিশে গেছে পোশাকের গায়ে। অথবা জারুল রঙা কামিজ পরে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে।

তবে রঙের সঙ্গে পরিবর্তন আনা হয়েছে পোশাকের ডিজাইনে। কাপড়ে ধরন, বুনন থেকে শুরু করে প্যাটার্ন— সবকিছুই ডিজাইনের অন্তর্ভুক্ত। কাপড় বেছে নেওয়া উচিত আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে। যেমন রঙিন পোশাকে লিনেন ভালো। লম্বা কামিজে তা মানায়ও ভালো। আমাদের আবহাওয়ায় সুতি কাপড়, এককথায় দারুণ। হুরের পোশাকের এই বিশেষত্বগুলো আমাদের গ্রাহক জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে।’ ট্রেন্ডি বা জনপ্রিয় পোশাক তৈরির পাশাপাশি হুর তুলে ধরতে চায় দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে। তাসনুভা বলেন, ‘এই যেমন জামদানি ও খাদি। আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে এর সম্পর্ক নিবিড়। জামদানি ও খাদির বিশেষত্ব রয়েছে এর অসাধারণ বুননে। আধুনিক ডিজাইনের ধারায় তা জায়গা পেয়েছে উন্নত পোশাকে। এ ধরনের কাপড়ে নানা ধরনের বৈচিত্র্য প্রকাশ পাচ্ছে বরাবরের মতোই।

তাসনুভা রশীদ, স্বত্বাধিকারী, হুর

আর বৈচিত্র্য আসে প্রথম বুননে। পরে নকশায়। বুননের সময় বর্জ্য সুতা থেকে হাতে কেটে খাদি কাপড় তৈরি হয়। যা পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে। জামদানির বেলাতেও তাই। তাই এই ঐতিহ্য তুলে ধরা উচিত, তবে একটু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। মানে আন্তর্জাতিক বাজারের কথা ভেবেই জামদানি ও খাদি দিয়ে করা উচিত পরিপূর্ণ ডিজাইন। এতে আমাদের দেশের কাপড় বিশ্ববাজারে সাড়া ফেলবে। একই সঙ্গে বুননশিল্পীদেরও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সারা বিশ্বে অনেক আগে থেকেই পছন্দের কাপড় হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে এগুলো। তাই গতানুগতিকের বাইরেও ডিজাইন হোক আন্তর্জাতিক মানের। এসব কাপড়েই করা সম্ভব আধুনিক ডিজাইন। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে এখন পরিবেশবান্ধব পোশাক পরার আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও এগিয়ে আমাদের খাদি ও জামদানি। মেশিনে তৈরি কাপড়ের তুলনায় এই কাপড় অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top