skip to Main Content

বিশেষ ফিচার I বিয়েগাউনি

পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম বিয়ের গীত। বেশ আগেই বিনোদন প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠলেও এর কথা ও সুর বহমান রেখেছেন ‘বিয়েগাউনি’র দল। লিখেছেন চান্দ্রেয়ী দে

ঘটকালি থেকে পাকা দেখা
বান্ধবীর বিয়ে। অফিস থেকে যেনতেন-প্রকারেণ ছুটি করিয়ে বিয়ের দুদিন আগে থেকেই উপস্থিত হবার ফতোয়া জারি রয়েছে। ছোটবেলার স্কুলের সহপাঠী বলে কথা। অগত্যা হাতের কাছে ভদ্রস্থ যা কিছু পরিধেয় পেলাম, কোনোরকমে থলেবন্দি করে হাজির হলাম অকুস্থলে। ছেলেবেলায় এসেছি অনেকবার। বর্ধমানের বাবুরবাগ-সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছুটা জমি নিয়ে ফারহাদের বাড়ি, উঠোন, গাছগাছালি। বাড়িটা বরাবর চেনা। কিন্তু বিয়েবাড়িটা নয়। দুটো কারণ- প্রথমত, যেকোনো বাড়িই বিয়েবাড়ি হয়ে গেলে তার রূপ বদলে যায়। বিয়ে ঘটনাটা মূলত সামাজিক-ধর্মীয় হলেও, সংস্কৃতির পরিসরে এর আবেদন কিছু বেশি। বিয়ে একদিকে যেমন আচার-নির্দিষ্ট, অন্যদিকে ততটাই খোলামেলা। একদিকে নিয়মকানুন, অন্যদিকে বেলাগাম ফুর্তির ফোয়ারা। জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে/ তিন বিধাতা নিয়ে, কথায় আছে। তা জন্ম হলো আনন্দের ডিপার্টমেন্ট, মৃত্যু শোকের, কিন্তু বিয়ে? সে তো এই দুই নিয়েই। আর অনুভবের ঘরে দ্বিগুণ টান পড়ে বলেই হয়তো ধর্ম আর সমাজের দেউড়ি পেরিয়ে বিবাহ নামক অনুষ্ঠানটি আপনিই ঢুকে পড়ে সংস্কৃতির বৃহত্তর আঙিনায়- বিভিন্ন লোকাচার, লোকগীতি, সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার ঐতিহ্য গড়ে ওঠে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে। সে কারণেই বিয়ের পরিসরে কোথাও যেন গৌণ হয়ে যায় সাম্প্রদায়িক চিহ্নগুলো।
তবে, বান্ধবীর বিয়েতে তার চিরচেনা বাড়িটা না চিনতে পারার দ্বিতীয় কারণটা সাম্প্রদায়িক। হিন্দু পরিবার ও পারিপার্শ্বে বেড়ে ওঠার কারণে ফারহার বিয়ের আগে সেভাবে কোনো বাঙালি মুসলিম বিয়ের অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা হয়নি। আচারে বা আদবে এটা যে আমার দেখা হিন্দু বিয়ের চেয়ে সাংঘাতিক রকম আলাদা তা নয়; হ্যাঁ, ধর্ম-নির্দিষ্ট কিছু অনুষ্ঠান তো আছেই, কিন্তু তালটা এক, সুরও। তবে যেটা একেবারে আনকোরা আমার কাছে, সেটা ছিল কয়েক কলি গান। বিয়ের গান।
ফারহার দেশগাঁ থেকে এসেছিল গীতের দল। তাদের মধ্যে অনেকেই ওর আত্মীয়াও। মুসলমানি বিয়ের গীত সেদিন প্রথম শুনলাম- শুনলাম গাঁও-গেরামের এই মায়েরা মেয়েরা যুগ যুগ ধরে নিজেদের কথা কীভাবে বলে গেছেন বিয়ের ডামাডোলের আবডালে, আচার-বিচারে গা ঢাকা দিয়ে আর পরম্পরায় প্রথিত হয়ে গেছে সেই ইতিহাস। আজও সেটা বয়ে নিয়ে চলেছেন কেউ কেউ।
পানচিনি
গানগুলো মেয়েদের। মেয়েরাই এর গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। সাধারণ গেরস্ত পরিবারের গৃহবধূ বংশপরম্পরায় মা-দাদি-চাচি-খালাদের কাছে শুনে এসেছে এই গান। নিজেদের মতো করে সুর বা শব্দ বদলে বদলে নিয়ে পরিবার বা আত্মীয়স্বজনের বিয়েতে আসর জমিয়েছে। গানের মধ্য দিয়েই আশা-আনন্দের কথা বলেছে, বলেছে আবেগ-অনুভূতির কথা, সংসারে অত্যাচার-বঞ্চনা, বাল্যবিবাহ, পণপ্রথার নানান দিক উঠে এসেছে, আবার রঙ্গ-ব্যঙ্গের আড়ালে করেছে প্রতিবাদ। গানের আঙ্গিক বিনোদনের; অথচ বিষয় ও পরিবেশনায় উঠে এসেছে সামাজিক-রাজনৈতিক সচেতনতা- একজন নারী হিসেবে এবং সমাজের অংশ হিসেবেও। শুধু বিয়ে আর পরবর্তী দৈনন্দিনতা নয়, লোকসমাজের প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যাবে বাঙালি মুসলমান মেয়েদের বিয়ের গানে।
একসময়ে দীর্ঘ এক মাস ধরে বিয়ের প্রস্তুতির সঙ্গে বিয়ের গান চলত। এখনো পরম্পরা মেনে বিয়ের মূল আচার-অনুষ্ঠানের দিন এবং বিয়ের আগের দুদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিশেষ করে বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও মালদায় এই গানের চল আছে। গানের আসরে পরিবারের বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন প্রজন্মের মেয়েরা যোগ দেয়। ঢোল, ঘুঙুর, খোল ইত্যাদি বাদ্যের সঙ্গে সঙ্গে খালি গলায় গান চলে দিন-রাত। শুধু গান নয়, সঙ্গে আছে নাচ এবং কাপ। কাপ বা রঙ্গকৌতুকের সময় দুজন বা তার বেশি মহিলা একেক চরিত্রে অভিনয় করে কৌতুকের ছলে নেচে নেচে গান গায় বা চাপান-উতোরের মধ্য দিয়ে মত্ত হয় সুরে বাঁধা কথোপকথনে। বেশির ভাগ সময়েই এই কাপের মধ্য দিয়ে উঠে আসে সংসারে ও সমাজে মেয়েদের প্রতি নানান অত্যাচারের কথা। গানের আসরে কোনো আগল নেই, তাই নির্দ্বিধায় মেয়েরা সুর-ছন্দের আড়ালে কখনো জানিয়ে দিত গোপন ক্ষোভ আর ব্যথার কথা, কখনো চটুল পরিহাস বা নিষিদ্ধ ইচ্ছার কথা- বিয়ের গানগুলো তাদের কাছে একই সঙ্গে প্রতিবাদ ও কামনার অভিব্যক্তি। এখানে সমাজের সব রকম বিধিনিষেধের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এই চর্চার পরিসরে মেয়েরা স্বাধীন এবং অবাধ।
ষাটের দশক পর্যন্ত এক মাসব্যাপী বিয়ের গানের আসরে একরকম পালার চল ছিল। নাচ-গান-বাজনা-কাপ-অভিনয় মিলিয়ে বিষয়ভিত্তিক পালা। আশপাশের পাড়া বা গ্রাম থেকে দল বেঁধে মেয়েরা আসত এসব পালা দেখতে এবং তাতে যোগ দিতে। বিয়ের এক মাস আগে থেকে একদিকে বারমহলে চলত ছেলেদের লেটো, আলকাপ প্রভৃতি, অন্যদিকে অন্দরে জমে উঠত মেয়েদের পালাগান। অন্তঃপুরের ঘেরাটোপে বন্দি এসব মেয়ের অভিনয়দক্ষতা ও সৃজনশীলতার বিচার করার কেউ ছিল না, তাদের খ্যাতি-স্বীকৃতির কোনো আকাক্সক্ষাও ছিল না।
প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা যেকোনো লোকধারার পরিসরেই প্রাথমিকভাবে শিল্প আর যাপনের ভেদ না থাকলেও, ক্রমশ চর্চা আর প্রতিভার সাপেক্ষে দক্ষতার ভেদ ঘটে এবং সেই অনুযায়ী আলাদা করে বিশেষ বিশেষ শিল্পীসত্তা তৈরি হয়। বাঙালি মুসলিম পরিবারে প্রায় সব মেয়ে এই গান গাইলেও তাদের মধ্যেই কেউ কেউ গীতালি শিল্পী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। আর এ রকম গীতালি দলের ‘হাঁড়িমানা দাওয়াত’ বিয়ের আচারের অঙ্গ হয়ে ওঠে। বিয়ের কাজেও অংশ নেবেন এরা, পাশাপাশি গানও গাইবেন। বিয়ের আগেও বিশেষ বিশেষ দিনে যেমন পাকা দেখা, পানচিনি, লগন ধরা, গায়েহলুদ ইত্যাদির সময়ে আশপাশে যারা খুব ভালো গান করেন, তাদের আলাদা করে নিমন্ত্রণ করার চল আছে। বর্ধমান জেলায় এসব শিল্পীকে বলা হয়েছে ‘গীতগাহুনি’ বা ‘গীতগাউনি’, বীরভূম, মালদা, মুর্শিদাবাদে এরা ‘গীতগাহিরি’ বলে পরিচিত আর উত্তরবঙ্গে এদের বলা হয় ‘গীতালি’ বা ‘গিদালি’। তবে এদের কেউই পেশাদার নন, অন্দরমহলের সাধারণ গৃহবধূ।
পেশাদারিভাবে বিয়ের গান গাইতেন ‘মেরাসিন’ শিল্পীরা। ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত বর্ধিষ্ণু মুসলিম পরিবারে বিয়ের সময় রায়বেঁশে, আলকাপ প্রভৃতি পুরুষপ্রধান লোকশিল্পের পেশাদারদের পাশাপাশি মহিলা শিল্পীদের ‘মেরাসিন’ দলকেও আনা হতো। এই মেরাসিনরাও বিয়ের গানই করেন। বিয়ের আচার-রীতি প্রসঙ্গ এবং এর পাশাপাশি প্রেম, ভালোবাসা, দৈনন্দিন জীবন নিয়েই তাদের গান। পার্থক্যটা হলো, বিয়ের গানের মাধ্যমে এরা জীবিকা নির্বাহ করেন। পারিবারিক বিবাহ অনুষ্ঠান এবং বিনোদনের বারোয়ারি মঞ্চ- দুই জায়গাতেই এদের যাতায়াত। পারিবারিক অনুষ্ঠানে এদের নিয়ে আসার জন্য কিছু নজরানা দিতে হয়। একই সঙ্গে বিয়ের আসরে উপস্থিত দর্শকদের থেকেও ‘ফেরি’ বা বকশিশ আদায় করেন এরা। বর্ধমান, বীরভূম, মালদা ও মুর্শিদাবাদে একসময় মেরাসিন দল খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
লগন ধরা
বিয়ের সময়েই মূলত গাওয়া হয় বলে বিয়ের অনুষ্ঠানের সঙ্গে একটা পারম্পর্যগত যোগাযোগ রয়েছে বিয়ের গীতের। বাঙালি মুসলমানের ঘরে বিয়ের একের পর এক আচারের সঙ্গে সঙ্গে গান অথবা গানের সঙ্গে এক এক করে রীতি-রকম; এই হলো পরম্পরা। গানগুলো আচারসর্বস্ব নয়, আবার আচার-অনুষ্ঠানের থেকে বিচ্ছিন্নও নয়। যেমন আসর শুরু হচ্ছে বন্দনা গান দিয়ে। কার বন্দনা? আল্লাহ-নবী-ধর্মীয় গুরু থেকে শুরু করে যাবতীয় গুরুজন ও প্রতিবেশীদের সালাম জানিয়ে শিল্পী শুরু করেন, ‘সালাম সালাম সালাম আমার আল্লা নবীকে/ আমার আল্লার পিয়ারা বসল লাল তকত-এ…’। তারপর এই আল্লার পিয়ারা বর বা কনের ক্ষীর খিলানি দিয়ে শুরু হয় পরবর্তী আচার। ক্ষীর খিলানির গানে বিয়েগাউনি যখন বলেন, ‘সোনার পালংকে গেরেদা লাগায়া কতই নিদ্রা যাও/ মায়ের ডাকে ওঠো হে বানেরা, উঠিয়া ক্ষীরসা খাও’… মা যে কত দুঃখ চেপে ছোট্ট সন্তানকে ঘুম থেকে জোর করে তুলছে, গানের সুরে আর কথায় তা যেন ছাপা হয়ে থাকে। শিশুবিবাহের এ রকম ইঙ্গিত আরও পাই শিরতেল বা গায়েহলুদের গানে, যেখানে তেল হলুদ মেখে অবোধ কনে রাস্তায় বসে খেলা করছে। বিয়ের আগের দিন সকাল থেকেই সরষে চালা, ঝুমুর ডালা, ঝুমুর খেলা, সোহাগ মানা, পানি খিলানো, মঙ্গলস্নান- এ রকম পরপর আচার চলতে থাকে। আর তার সঙ্গে চলে বিয়ের গান। সারা দিনের আচার অনুষ্ঠানের পর সন্ধ্যায় আসে বিয়ের আগের শেষ খাওয়া বা থুবড়া ভাত খাওয়ার রাত। বিয়ের গানের আসর ওই রাতে কিছু সময়ের জন্য হলেও বিচিত্রানুষ্ঠানের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে। সেখানে ভিড় করে দাঁড়ায় আত্মীয়-প্রতিবেশী। এই থুবড়া আসরে গানের বিষয় বদলাতে থাকে বিয়ে, প্রেম, বিরহ, প্রতিদিনের জীবন থেকে ক্রমশ সমাজ ও দৈনন্দিনতার নানা পরিসরে। বিশ্বযুদ্ধ থেকে জরুরি অবস্থা, ব্রিটিশ আমল থেকে স্বাধীনতার দিনগুলো, ইন্দিরা গান্ধী, বাম জমানা সব রকম বিষয় উঠে আসে বিয়েগাউনিদের সুরে-কথায়। গানের আসর চলতে থাকে বিদায়ের পালা অবধি। আনন্দ আর উদ্যাপনের পরে কনের মায়ের শোকে বুক ফাটে পাড়ার গাউনি বউটির। আম্মা, ভাই আর বাপজান কত অবহেলা করেছে সেই অভিমানের কথা বলতে বলতে বাড়ি ছাড়ছে কনে, কখনো ভাবী জীবনের আশঙ্কায় কাঁপছে সে, গাইছে, ‘পরের মায়ের এমনি কথা/ শিয়াকুলের কাঁটা… মাজান, আপন মায়ের এমনি কথা/ ঠান্ডা কলসির পানি… শ্বশুরবাড়ি যায় রে জাইলি/ কলিজা হল খালি খালি…’।
মহল হলো খালি
পারিবারিক পরম্পরায় একের পর এক প্রজন্ম ধরে এই বিয়ের গান হয়ে এসেছে বাঙালি মুসলমান পরিবারে। কীভাবে বাঁধা হতো এই গান? এক বিয়েগাউনি বললেন, ‘বাড়ির মেয়েরা সবাই অবসর সময়ে বসে কথায় কথায় গান বাঁধতেন। কোনো প্রবাদ, কোনো প্রচলিত কথা নিয়ে আলাপ শুরু হতো তারপর মেয়েরা নিজের সৃজনশীলতা দিয়েই একেকজন একেক কলি যোগ করে দিতেন মুখে মুখে। এই নিয়ে একেকটা গান তৈরি হতো। আর আত্মীয়স্বজনের বিয়েতে সেই গানই গাইত সবাই মিলে।’ তবে ’৯৫ সালের পর থেকে নতুন করে গান বাঁধার চল কমে এসেছে। পুরোনো গানই ঘুরেফিরে গাওয়া হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠানে। তারপর গান গাওয়ার চলই হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। একদিকে যেমন বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিনোদনের অভাব নেই, অন্যদিকে শিক্ষা এবং সামাজিক অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রাচীন গানের ঐতিহ্য তার মর্যাদা হারাচ্ছে। রুচিবান শহুরে অভিজাত পরিবারে নগরজীবনের চাকচিক্যের সামনে মান্যতা হারিয়ে ফেলেছে মুখে মুখে গাওয়া এই গানের আড়ম্বরহীন সহজ অভিব্যক্তি।
তবে চর্চার পরিসর বদলে যাচ্ছে। আশির দশক থেকে লোকশিল্পের সংরক্ষণ ও প্রচারের নতুন তাগিদ পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম মেয়েদের এই গানের ধারাকে হয়তো আরও একবার বাঁচিয়ে তুলতে পারে নতুন করে। মুর্শিদাবাদের রাসিনা ও মহিমা বেওয়ার আশা অন্তত এমনটাই। তারা সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগে মঞ্চে গাইছেন বিয়ের গীত। নতুন করে বাঁধছেন সমসময়ের সঙ্গে মিলিয়ে নতুন গান। বিয়ের আচারের সঙ্গত নেই, পটভূমি হয়তো আলাদা, কিছুটা আলাদা এর আঙ্গিকও, কিন্তু মুসলিম বিয়ের গীতের মূল সুর বাঁধা আছে অন্তরে। লড়াই রয়েছে। যে লড়াই এতকাল ছিল বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানের আবডালে, আকার-ইঙ্গিত আর সংকেতের ভাষায় অন্দরমহলের ঘেরাটোপে যে লড়াই যে প্রতিবাদ আটকে ছিল, সেটাই এখন মুখোমুখি লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে রাসিনা মহিমাদের। ১২ বছর নিজেদের সমাজে ব্রাত্য তারা; প্রতিবেশীর সাহায্য নেই, পাড়ার বিয়েতে ডাক পড়ে না মেয়েদের, বাড়ির পুরুষদের নেই মসজিদে প্রবেশের অনুমতি, তবু মুর্শিদাবাদের রাসিনা আশপাশের ১০টি মেয়েকে নিয়ে রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ‘প্রোগ্রাম’ করতে। সে দশ বছর আগেকার কথা। এখন সেই ১০টি মেয়েকে নিয়ে রাসিনার গীতের দল। এখন তারা আল্লা, নবী, গুরুজনের পর দর্শককে সালাম জানিয়ে শুরু করেন গানের আসর।
লেখক: পশ্চিমবঙ্গের প্রথম দশকের কবি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের ছাত্র, গবেষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top