skip to Main Content

রূপরসদ I আরবিউটিন

উজ্জ্বলতার অব্যর্থ উপকরণ। যেকোনো ধরনের ত্বকের জন্য। বয়সের ছাপ দূর করার মোক্ষম দাওয়াই

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমবেশি সবাই উদ্বিগ্ন হন ত্বক নিয়ে। কেননা বলিরেখা, অমসৃণ ত্বক বয়সের ছাপ ফেলে। তবে এইজ স্পট, ত্বকে লালচে ভাব বা গাঢ় পিগমেন্টেশনের কারণে ফাইনলাইনের চেয়েও বেশি বয়স্ক দেখাতে পারে। আর এখন তো কোনো সাইড ইফেক্ট ছাড়া উজ্জ্বলতা ধরে রাখা বেশ ঝক্কির ব্যাপার। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ। চেহারা উজ্জ্বল ও দীপ্তিময় করে তোলার বেশির ভাগ পণ্যই এ ধরনের ত্বককে আরও শুষ্ক ও রুক্ষ করে তোলে। তাই যারা এমন সমস্যায় ভুগছেন, তারা বেশ উচ্ছ্বসিত উপকরণটি নিয়ে। কারণ, এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য নিরাপদ।
পরিচিত হওয়া যাক আরবিউটিনের সঙ্গে। ভিটামিন সি, কোজিক অ্যাসিড এবং লাইকোরিস—এগুলো দারুণ ন্যাচারাল স্কিন ব্রাইটনার। কিন্তু আরবিউটিন এসবের চেয়েও কার্যকর। পরীক্ষায় প্রমাণিত, এটি ব্রণের জন্য সেরা প্রতিকারক এবং এর সক্রিয় উপাদান ধীরে ধীরে কাজ করে। তাই সংবেদনশীল ত্বকের পক্ষে বেশ সহায়ক। এটি বিয়ারবেরি গাছ থেকে সংগৃহীত অণু, যা মেলানিন গঠনে বাধা দেয়। কোজিক অ্যাসিড (মাশরুম থেকে প্রাপ্ত) এবং লাইকোরিসের (যষ্টিমধু) মতোই আরবিউটিন ত্বকের জন্য কোমল। আলাদা আলাদা প্রাকৃতিক উপকরণ থেকে নেওয়া হলেও এগুলোর প্রতিটিই ত্বককে উজ্জ্বল ও দীপ্তিময় করে তুলতে টাইরোসিনেজ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। অনেকে বাদামি দাগ বা মেছতা নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকেন। মূলত পিগমেন্ট থেকেই এমনটা হয়। এর উৎপত্তি মেলানোসাইট নামক কোষে। যার মধ্যে টাইরোসিনেজ এনজাইম রয়েছে। এগুলো অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে সক্রিয় হতে পারে। এ জন্য দেখা যায়, রোদে বেশি সময় থাকলে ফ্রেকল (মেছতা) ও সান স্পট পড়তে শুরু করে। আরবিউটিন টাইরোসিনেজকে ঠেকিয়ে দেয় এবং ডার্কস্পট দূর করে। এখন প্রশ্ন থাকতে পারে, কেন আরবিউটিন বিশেষ কিছু। এটি অন্যান্য ত্বক-উজ্জ্বলকারী উপকরণের তুলনায় কোমল। কারণ, আরবিউটিনের সক্রিয় উপাদানটি ধীরে ধীরে কাজ শুরু করে। তাই এতে জ্বলুনির মাত্রা কম হয়। ফলে সংবেদনশীল ত্বকে এটি বিরূপ প্রভাব ফেলে না। অন্যান্য এজেন্টের তুলনায় ত্বককে কম শুষ্ক করে এবং কম জ্বলুনি তৈরি করে। টাইরোসিনেজকে আটকে রাখার কারণে মেলানিন উৎপাদনে বাধা পায়, তাই এটি ডার্ক স্পট দূর করতে সক্ষম। অন্যান্য স্কিন কেয়ার পণ্যের সঙ্গে কোনো নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে না। কার্সিনোজেনিক হিসেবে এফডিএ প্রদত্ত স্বীকৃতির আগপর্যন্ত হাইড্রোকুইনন ‘মিরাকল’ স্কিন-লাইটনিং উপকরণ বলে পরিচিত ছিল। মূলত পিগমেন্টেশন ও মেলানিন উৎপাদনকারী কোষগুলো মেরে ফেলার মাধ্যমে এটি কাজ করে। অন্যদিকে আরবিউটিন এনজাইমগুলোকে বাধা দেয়, যা পিগমেন্ট-প্রোডিউসিং সেলগুলোকে উদ্দীপিত করে। ফলে ডার্ক স্পট ম্লান হয়ে আসে। দীর্ঘদিনের বা নতুন করে হওয়া ব্রণের লাল-কালো দাগও দূর হয়। আরবিউটিন ব্যবহারে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে হাইড্রোকুইননের মতোই ত্বক উজ্জ্বল করার কারণে অনেকেই এর ব্যবহার সম্পর্কে দ্বিধান্বিত। সত্য যে, এর কার্যকারিতা নিয়ে যত নিরীক্ষা হয়েছে, কোনোটারই ফল নেতিবাচক নয়।
দিনে দুবার আরবিউটিন ব্যবহার করা যায়। ত্বক পরিষ্কার করে নিয়ে এবং ভারী ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের আগে এটি মাখতে হবে। বিশেষ করে ত্বক উজ্জ্বলকারী পণ্যে আরবিউটিন পাওয়া যায়। স্কিন কেয়ার সিরাম হলেও, ওভারনাইট মাস্ক ও ওয়াটার ক্রিম হিসেবেও আরবিউটিনকে সেরা উপকরণ বলা যায়।

উপকরণের ধরন: ব্রাইটনার
মূল কাজ: ডার্ক স্পট, ব্রণের দাগ হালকা করা। বহিঃত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানো।
যে ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যায়: সব ধরনের ত্বকের জন্য নিরাপদ।
ব্যবহার বিধি: দিনে দুবার ব্যবহার করা যায়। এটি পরিষ্কার ত্বকে ভারী ময়শ্চারাইজার ছাড়া অন্যান্য ক্রিম বা সিরামের সঙ্গে ব্যবহারযোগ্য।
ভালো কাজ দেয়: ভিটামিন সি ও এএইচের সঙ্গে। অন্যান্য স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের সঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব না থাকলেও তাপ এর কার্যকারিতা নষ্ট করে।

 তাসমিন আহমেদ
মডেল: মানসী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top