skip to Main Content

সম্পাদকীয়

শুভ নববর্ষ ১৪২৬। কৃষিনিবিড় বাংলার অর্থনৈতিক নিকাশ নিয়ে বর্ষগণনার যে ধারার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ ঘটেছে, তা বহুদিন ধরে বাঙালি ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়ের অংশ হয়ে আছে। এই ভূখন্ডের, বিশেষত শহরাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডেরও রূপান্তর ঘটেছে বর্ষশুরুর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে। এখন আমাদের নতুন বছরের উদযাপন কেবল হিসাবের খাতা, মন্ডা-মিঠাই, মেলা—এসবের মধ্যে আবদ্ধ নয়, এর আকর্ষণ বহুদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সমকালীন জীবন-প্যাটার্নের পটভূমিতে ঐতিহ্যের নবায়ন ঘটানোর নাগরিক তৃষ্ণার সঙ্গে এর সম্পর্ক।
এবারও আমরা ক্যানভাস সাজিয়েছি বিশেষভাবে, নতুন করে, বর্ষবরণ উদযাপনকে পাঠকদের কাছে আরও আনন্দদায়ক করে তোলার জন্য। আলাদা মলাটে পোর্টফোলিও থাকছে প্রতিবারের মতোই। কিন্তু প্রতিপাদ্যে তা নতুন। দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড, জুয়েলারি আর সুগন্ধি মিলিয়ে। বাড়তি সংযোজন রেসিপি বুকলেট। থাকছে আট বিভাগের মাছ নিয়ে ১৬ পদ। বৈশাখের রসনা আয়োজনে যোগ করবে বাড়তি মাত্রা। মূল ম্যাগাজিনের অভ্যন্তরেও থাকছে এমন আয়োজন। আর আপনাদের জন্য বিশেষ উপহার নতুনতর ও উৎসবসম্মত চারটি লুক নিয়ে আমার সিগনেচার।
ক্যানভাসের এই সংখ্যার কভারস্টোরি ‘পালাবদলের এখনই সময়’। এতে আলোকপাত করা হয়েছে বৈশ্বিক পরিবেশের সঙ্গে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক, সমস্যা এবং এর থেকে উত্তরণের উপায়গুলোর ওপর। জীবনধারার পরিবর্তনের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী পোশাকশিল্পের যে বদল, তাতে প্রকৃতি রক্ষা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে সমন্বিত করে কীভাবে মানববিকাশকে সচল রাখা যায়, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই রচনায়।
বাংলাদেশের পাহাড়ি মানবগোষ্ঠীর বর্ষবরণের উৎসব সমতলের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও বৈচিত্র্যময়। এখনো তারা প্রকৃতিনিবিড়, ফলে কৃত্রিম শহুরে জীবন তাদের খাদ্যসংস্কৃতির মৌলিকতায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। ক্যানভাসের এ সংখ্যায় আমরা এই বিষয়ের ওপর আলো ফেলতে চেয়েছি। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠা পাহাড়িদের তিনটি রেস্টুরেন্ট আর চারটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি। উৎসবে খাবার সম্পর্কে ভোজনরসিকদের আগ্রহ অফুরন্ত। এতে সাড়া দিতে গিয়ে আমরা প্রতিবেশী দেশে পা বাড়াতেও কুণ্ঠিত হইনি। ফলে, কলকাতার রঙিন রসগোল্লা আর জুসের শতবর্ষী দোকান প্যারামাউন্ট নিয়ে এবার রয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন। আশা করি সব মিলিয়ে এই সংখ্যা উপভোগ্য হবে।
শেষে একটা শূন্যতার কথা না বললেই নয়। কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহ আর আমাদের মধ্যে নেই। তাঁর গাওয়া অসামান্য গানগুলো আজও মুগ্ধ করে। এ দেশের সংগীত অঙ্গনে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ভালো থাকুন সবাই। উৎসব সম্প্রীতি আর আনন্দে ভরে উঠুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top