skip to Main Content

সম্পাদকীয়

খুব উদ্বেগ আর কষ্ট নিয়ে লিখতে বসেছি। বেশ কয়েক দিন ধরেই পত্রিকার পাতাজুড়ে দেখতে পাচ্ছি বন্যায় বিপন্ন মানুষের ছবি ও খবর; টিভি অন করলেই একের পর এক দেখছি পানিবন্দি জনপদ, তলিয়ে যাওয়া সড়ক, রেলপথ, হাটবাজার আর ফসলের জমি; শিশু-নারী-বৃদ্ধের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের দৃশ্য। যখন লিখছি, গোটা উত্তরবঙ্গ প্লাবিত তখন। প্রাণহানিও উদ্বেগজনক। টিভির খবরে জানলাম, বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলও বন্যার কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি আর কয়েক দিন বৃষ্টি হয়, তবে এর ভয়াবহতা এত বেশি হতে পারে যে, তা গত দু’শ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
ভাবছি, ক’দিন পরেই কোরবানির ঈদ, যখন আপনজনদের নিয়ে মানুষের আনন্দে থাকার কথা, তখন তারা লড়াই করবে বাঁচার জন্য! শিশুদের কথা ভাবছিলাম আমি, আর অন্তরটা হুহু করে উঠছিল। কিন্তু কিছুই থেমে থাকে না। এমনকি এই বন্যার পানিও বহমান।
ক্যানভাসের ঈদসংখ্যা মানে কেবল বর্ধিত কলেবর নয়, বিচিত্র-বর্ণিল আয়োজনে পূর্ণ বিশেষ কিছু। প্রিয় পাঠক, এই দীর্ঘকাল সঙ্গে থেকে আপনাদের প্রত্যাশা সম্পর্কে আমরা জানি, কিন্তু ক্যানভাস দিতে চায় আরও বেশি এবং বিশেষ কিছু, যাতে আপনারা অনুভব করতে পারেন, পাঠক হিসেবে রয়েছেন সময়ের সামনেই। আমরা সবাই তো কমবেশি সমকালীন, কিন্তু নিজেকে সময়ের সামনে রাখা চাই। গত সংখ্যায় সে-চাওয়া পূরণের চেষ্টা করা হয়েছে। এবার যেহেতু একদিকে উৎসব, অন্যদিকে দুনিয়াজুড়ে আঞ্চলিক খাদ্যসংস্কৃতির একটা মিথস্ক্রিয়া চলছে- এর ঘটকালি স্বাদে-গন্ধে-রঙে সফলভাবে সম্পন্ন করছেন শেফরাই। হ্যাঁ, আমরা তাদের নিয়ে প্রকাশ করেছি কভারস্টোরি। মানে, একে ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক আরও কিছু তো থাকছেই। এডিটর’স কলামও কিন্তু শেফদের জন্য।
ওই যে, আঞ্চলিক খাবারের কথা বলছিলাম। আমরা জানি, একেক এলাকার রান্না একেক রকম এবং এগুলোর স্বাদ-গন্ধের পার্থক্য অঞ্চলভেদে মানুষের রুচির প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু এগুলো যখন একসঙ্গে ডাইনিংয়ে হাজির হয়, তখনকার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই মামুলি কিছু নয়। সেটাই আমরা এবার দিতে চেয়েছি ক্যানভাসের পাঠকদের, মাংসের দশটি রেসিপি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। আশা করি, ভালো লাগবে।
শুরুতে বন্যার্ত মানুষের অসহায়তার কথা বলেছি। শেষে একটা অনুরোধ করি? তাদের পাশে দাঁড়ান। আপনার যা কিছু আছে, তার সব তাকে দিতে হবে না। যা দিয়ে আপনি শান্তি পাবেন, তা-ই দিন। অন্তত ভাবুন এই বিপন্ন মানুষদের কথা। আপনজনের সঙ্গে শেয়ার করুন, তাদের জন্য কী করা যায়। ত্যাগের এই উৎসবে মানুষের প্রতি ভালোবাসাও না হয় যুক্ত হলো!
ঈদের শুভেচ্ছা সবার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top