skip to Main Content

সেলুলয়েড I ন ডরাই (২০১৯)

পরিচালনা: তানিম রহমান অংশু
প্রযোজনা: মাহবুর রহমান
অভিনয়ে: সুনেরাহ বিনতে কামাল, শরিফুল রাজ, জোসেফাইন লিন্ডেগার্ড প্রমুখ
চিত্রনাট্য: শ্যামল সেনগুপ্ত
দৃশ্যায়ন: সুমন সরকার
সম্পাদনা: এস এম সরফরাজ ও তানিম রহমান অংশু
সংগীত: মোহন শরীফ ও প্রীতম হাসান
আবহ সংগীত: অমিত চট্টোপাধ্যায়
পোশাক পরিকল্পনা: এদিলা ফাবো তুরিন
দৈর্ঘ্য: ৩ ঘণ্টা (প্রায়)

নানা বিতর্ক, প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা— এসবের পর বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে ‘ন ডরাই’ ছবিটি। নারী সার্ফারের সংগ্রাম তথা পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর স্বাবলম্বনের লড়াই ঘিরে নির্মিত এই ছবি। সম্ভাবনা থাকলেও গড়পড়তা ছবির গন্ডি এটি পেরোতে পারেনি।
একসময় ‘বিগিনার সার্ফিং’ বিভাগ নামে প্রথম আন্তর্জাতিক সার্ফিং প্রতিযোগিতায় মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম হয়েছিলেন বাংলাদেশের কন্যা নাসিমা। ন ডরাই-এর আয়েশা নামক কেন্দ্রীয় চরিত্রটি তার ছায়া অবলম্বনে বলেই মনে করা যেতে পারে। কক্সবাজারের গরিব পরিবারের মেয়ে আয়েশা সমুদ্রকে নিজের বশে রাখে সার্ফিংয়ের মাধ্যমে। তার ভাইও সার্ফিং করে। আন্তর্জাতিক একটি সার্ফিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে আয়েশার ভাইয়ের বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার বয়স। তখন কক্সবাজারের সার্ফিং ট্রেনার আমির আবিষ্কার করে আয়েশাকে। কিন্তু যেহেতু তার ভাই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেনি, তাই বোনের ব্যাপারেও সে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ঈর্ষা থেকে। আয়েশার বন্ধু সোহেল। সেও দারুণ সার্ফার। শেষমেশ প্রতিযোগিতার জন্য তাকেই বেছে নেয় আমির। আয়েশাকে ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। ভাইয়ের হাতে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয় সে। তাকে ভালোবাসে সোহেল এবং বন্দিদশা থেকে বের করে আনতে ব্যর্থ হয়। উল্টো তাকেও আক্রান্ত হতে হয় আয়েশার ভাইয়ের কাছে। সোহেল শেষমেশ প্রতিযোগিতায় বিদেশে পাড়ি দেয়। কক্সবাজার থেকে তাকে বিদেশে নিয়ে যায় এস্থারসহ বিদেশি বন্ধুরা। যারা সার্ফিং প্রতিযোগিতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সফল হয়ে দেশে ফিরে আসে সোহেল। ফিল্মমেকার এস্থারের সঙ্গে সাময়িক প্রেমে জড়িয়ে পড়ে সে। ওই দিকে আয়েশাকে বিয়ে দেওয়া হয় তার চেয়ে বয়সে অনেকটা বড় এক ব্যক্তির সঙ্গে। বাপের বাড়ির মতোই শ্বশুরবাড়িতে পুরুষতান্ত্রিক বর্বরতার শিকার হয় সে। এইভাবে গল্প এগোয়। ক্রমে এস্থারের সঙ্গে সোহেলের বিচ্ছেদ, কক্সবাজার থেকে ঢাকায় চলে এসে তার নেশাসক্ত জীবনযাপন, শ্বশুরবাড়ি থেকে আয়েশার বের হয়ে আসা এবং নানা ঘটনাক্রমে সোহেল ও আয়েশার ছোটবেলার প্রেমের পূর্ণতা চার হাত এক হওয়ার মধ্য দিয়ে… এই হলো মোটামুটি আখ্যান। এখানে শেষমেশ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির গন্ডি থেকে আয়েশার বের হয়ে আসাটা ছবির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু এই আখ্যানের বুননে চিত্রনাট্য অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে টেনে বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু ছবির সিনেমাটোগ্রাফি অত্যন্ত ভালো। বার্ডস-আই ভিউ বা টপ-ভিউর শটগুলোতে কক্সবাজারের সৌন্দর্য ছবিতে প্রাণ জুগিয়েছে। লোকেশনই এই ছবির প্রাণ। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েছে সিনেমাটোগ্রাফি। কিন্তু সম্পাদনা অনেক ক্ষেত্রেই দুর্বল। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও সুখকর নয়। স্ক্রিপ্ট, এডিটিং ও মিউজিক এই ছবিকে দারুণ কিছু হয়ে উঠতে দেয়নি। বরং চিত্রনাট্য এ ছবিকে দুর্বল করে দিয়েছে। তারপরেও ছবিটি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে; প্রথমত, পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রান্তিক সমাজের একটি মেয়ের লড়াই এই ছবির কেন্দ্রীয় ভাবনার জায়গা। দ্বিতীয়ত, ছবিটির ভাষা। শিল্পের প্রমিত দৃষ্টিকোণ থেকে বের হয়ে স্থানীয় চাটগাঁইয়া ভাষাকে যেভাবে আন্তর্জাতিক পরিসরের সঙ্গে একাত্ম করা হচ্ছে, তা প্রশংসনীয়।
আয়েশা চরিত্রে সুনেরাহ বিনতে কামাল দারুণ অভিনয় করেছেন। সোহেল চরিত্রে শরিফুল রাজ, আমির চরিত্রে সাঈদ বাবুও প্রশংসনীয়। বেশ কয়েকজন বিদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রী রয়েছেন এ ছবিতে। তাদের প্রত্যেকেই সাবলীল। যেমন এস্থার চরিত্রে ডেনমার্কের জোসেফাইন লিন্ডেগার্ড। ছবির লোকেশন ও চরিত্রায়ণ অনুযায়ী পোশাক পরিকল্পনা যথাযথ।

 অতনু সিংহ

কুইজ
১। আয়েশা কী হতে চেয়েছিল?
ক। ভলিবল খেলোয়াড়
খ। সার্ফিংয়ে বিজয়ী
গ। মাউন্টেনিয়ার
২। আয়েশার প্রতি প্রেমের মাঝেই সোহেল কার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে?
ক। আয়েশার বান্ধবীর
খ। আমিরের স্ত্রীর
গ। বিদেশি ফিল্মমেকারের
৩। সার্ফিং ট্রেনার কে?
ক। আমির
খ। আজিজ
গ। হায়দার
গত সংখ্যার বিজয়ী

১. আফসানা আহমেদ, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।
২. ইশরাত জাহান, চকবাজার, ঢাকা।
৩. সাজেদুল ইসলাম, বিবির পুকুর, বরিশাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top