skip to Main Content

হেঁশেলসূত্র I মৎস্যে মাংসে উৎসব

মাছ ও মাংসের দশটি পদ। নিরীক্ষামনস্ক ও ব্যতিক্রমী। স্বাদে চমকপ্রদ। ঈদের ডাইনিং টেবিলে উপভোগ্য এই আয়োজন করেছেন আলপনা হাবিব
কৃতজ্ঞতা: পুষ্টিবিদ আয়েশা আনিকা নাজনীন
ছবি: সৈয়দ অয়ন

 

 

মাছের কাবাব

উপকরণ
যেকোনো মাছ ১ কাপ (১/২ চা চামচ লবণ ও ১/২ চা চামচ আদা বাটা দিয়ে সেদ্ধ করে বাছা), আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ৩/৪ কাপ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১/৪ কাপ, পাউরুটি ১/২ কাপ দুধে ভেজানো ২ স্লাইস, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, লেবুর খোসা কোরানো ১ টেবিল চামচ, সেমাই ১/৮ টুকরা করে ভাঙা ২ কাপ, এলাচি গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, দারুচিনি গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, লেবুর রস ২ চা চামচ, ডিম ফেটানো ২টা, রান্নার তেল ২ কাপ।
প্রণালি
কড়া আঁচে সরিষার তেল গরম করুন। আদা কুচি ভাজুন। ভাজা গন্ধ বের হলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভাজুন। সেদ্ধ মাছ দিয়ে ভাজা ভাজা করে নিন। দুধে ভেজানো পাউরুটি চটকে নিন। সেদ্ধ মাছে সেটা দিয়ে আরও ভালো করে ভুনা করুন। এলাচি গুঁড়া ও দারুচিনি গুঁড়া মেশান। চুলা থেকে নামিয়ে ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ কুচি, লেবুর রস, লেবুর খোসা দিয়ে ঠান্ডা করে নিন। মাছের ভুনা ১০ ভাগে ভাগ করুন। প্রতি ভাগ গোলাকার বলের মতো করে তারপর চ্যাপটা করে কাবাবের আকার করুন। তারপর ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে ভাঙা সেমাইয়ে গড়িয়ে নিন। কড়া আঁচে ডুবো তেলে সোনালি করে ভেজে পরিবেশন করুন।
খাদ্যশক্তি: ২৭৪৫ কিলোক্যালরি (প্রায়),প্রোটিন: ৭৬ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ১০৫ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ২২৪ গ্রাম (প্রায়)

ফাইভ স্পাইস মাটন

হাঁসের মাংস চামড়াসহ কিউব করে কেটেও এই রেসিপি করা যেতে পারে। গরম ভাত বা ফ্রাইড রাইসের সঙ্গে খেতে পারেন।
উপকরণ
মাংসের জন্য: খাসির মাংস হাড়সহ টুকরা ১/২ কেজি, স্টার অ্যানিস ২টা, সিচুয়ান পেপারকর্ন ১/২ চামচ, তেজপাতা ২টি, মৌরি ১/২ চা-চামচ, দারুচিনির টুকরা ২টা, গোলমরিচ ১/২ চা চামচ, পেঁয়াজ কলি ১ ইঞ্চি টুকরা, দেশি পেঁয়াজ প্রতিটি ৪ টুকরা করা ১ কাপ, আদা ১/২ ইঞ্চি মাপের ২টা, গাজর ১/২, লবণ ১ চা চামচ বা স্বাদমতো।
মূল রান্নার জন্য: তেল ২ টেবিল চামচ, কাঁচা পাকা মরিচ তেরছা করে কাটা ১ টেবিল চামচ, ক্যাপসিকাম চৌকা করে কাটা ১টা, গাজর চৌকা করে কাটা ১/২ কাপ, রসুন স্লাইস ১ চা চামচ, আদা কুচি ১ চা চামচ, সয়া সস ১ টেবিল চামচ, অয়েস্টার সস ২ টেবিল চামচ, সেসমি অয়েল ১ চা চামচ, অ্যারারুট ১/২ কাপ পানিতে গোলানো ২ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা চামচ, লবণ ১/২ চা চামচ।
প্রণালি
মাংস: লবণ ছাড়া মাংসের উপকরণের সব মসলা একটি সুতি কাপড়ের পুঁটলিতে বেঁধে নিন। এবার লবণ, পুঁটলি বাঁধা মসলা ও মাংস একটি পাত্রে পানি দিয়ে ২ ঘণ্টা সেদ্ধ করে পানি ছেঁকে নিয়ে মাংস আলাদা করে উঠিয়ে রাখুন। ছেঁকা পানিও তুলে রাখুন।
মূল রান্না: তেল গরম করে তাতে গাজর ভেজে নিন। তাতে আদা কুচি, রসুন কুচি দিয়ে নেড়ে হালকা ভাজুন। মাংস, ক্যাপসিকাম ও সব রকমের সস দিয়ে স্টার-ফ্রাই করুন, অর্থাৎ চড়া আঁচে তাড়াতাড়ি নেড়ে হালকাভাবে ভাজুন। মাংসের স্টক এবার সেই স্টার ফ্রায়েড মাংস ও সবজির মধ্যে ঢেলে দিন। তাতে গোলানো কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে ঝোলটা এমনভাবে ঘন করুন, যাতে মাখা মাখা না হয়ে খানিকটা ঝোল ঝোল ভাব হয়। সবশেষে রান্না করা মাংসে সেসমি অয়েল ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।

খাদ্যশক্তি: ১৮০০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ৫০ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ৫০ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ১৫৫ গ্রাম (প্রায়)

জিঞ্জার ফিশ

এটি চীনা রান্না। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
উপকরণ
মাছের জন্য: বাছা মাছের ফিলে ৩ ইঞ্চি মাপে কাটা ৮ টুকরা, অ্যারারুট ২ কাপ।
সসের জন্য: আদা ঝুরি কুচি ১ টেবিল চামচ, পাকা মরিচ ঝুরি কুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ, চিনি ১/৩ কাপ, সিরকা ১ টেবিল চামচ, সেসমি অয়েল ১ টেবিল চামচ, পানি ১ কাপ, অ্যারারুট ২ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ।
ভাজার জন্য: রান্নার তেল ৩ কাপ।
প্রণালি
মাছের ফিলে সামান্য লেবুর রস মেখে ৩০ মিনিট রাখুন। কড়া আঁচে রান্নার তেল গরম করুন। একটি বড় প্লেটে অ্যারারুট বিছিয়ে নিন। তাতে মাছের টুকরা গড়িয়ে তেলে ছাড়ুন। সোনালি মচমচে করে ভেজে তুলে তেল ঝরিয়ে আরেকটি পাত্রে রাখুন। ভাজা মাছ ১ ইঞ্চি বাই ১ ইঞ্চি মাপে কেটে পরিবেশন-পাত্রে সাজান। মাছ ভাজার তেল থেকে ৩ টেবিল চামচ তেল নিয়ে আলাদা কড়াইয়ে কড়া আঁচে গরম করুন। আদা ও মরিচ কুচি দিয়ে হালকা ভাজুন। এবার দেড় কাপ পানি দিন। সিরকা, লবণ ও চিনি দিন। এবার মাছ ভাজার সময় বেঁচে যাওয়া ২ টেবিল চামচ অ্যারারুট ১/৫ কাপ পানিতে গুলে নিন। গোলানো অ্যারারুট ঝোলে দিন। ঝোল ফুটে বেশ নরম হয়ে এলে সেসমি অয়েল দিয়ে পরিবেশন-পাত্রে মাছের ওপর ঢেলে দিন।

খাদ্যশক্তি: ৩৮০০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ৬০ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ১২২ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ৩৪১ গ্রাম (প্রায়)

ল্যাম্ব লেগ রোস্ট

ইংরেজি রান্না এই রেসিপির উৎস, তবে আরও উপাদেয় করার জন্য আমি কিছু পরিবর্তন করেছি।
উপকরণ
মূল রান্নার জন্য: খাসির পেছনের রান দেড় কেজি, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা পেঁপে খোসাসহ বাটা ৩ টেবিল চামচ, সয়া সস ১ টেবিল চামচ, উস্টার সস ১ টেবিল চামচ, সিরকা ২ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, টমেটো সস ৩/৪ টেবিল চামচ, বারবিকিউ সস ২ টেবিল চামচ, ময়দা ৩ টেবিল চামচ, রান্নার তেল দেড় কাপ, চিনি ১ চা চামচ, লবণ ১ চা চামচ, গোলমরিচ আধভাঙা গুঁড়া ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক), লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৪টা।
সাজানোর জন্য: কাঁচা পেঁপে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো টুকরা ১ কাপ, গাজর ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো টুকরা ১ কাপ, বরবটি ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো টুকরা ১ কাপ, মাখন ১ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ।
প্রণালি
মূল রান্নার জন্য: খাসির রানের পর্দা ফেলে হাঁটুর কাছে কেটে ভাঁজ করে নিন। আধভাঙা গোলমরিচ, লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, টমেটো সস, বারবিকিউ সস, ময়দা আর রান্নার তেল বাদে সব মসলা দিয়ে খাসির রান মাখিয়ে ৩/৪ ঘণ্টার জন্য মাখানো অবস্থায় রাখুন। খাসির রানের গায়ের মসলা মুছে নিয়ে তুলে রাখুন। কড়া আঁচে তেল গরম করে রান এপাশ-ওপাশ করে লাল করে ভাজুন। এবার তাতে ডুবো পানি ও তুলে রাখা মসলা ঢেলে দিয়ে ঢেকে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সেদ্ধ করুন। মাংস যখন সেদ্ধ হয়ে নরম হবে, তখন রান তুলে রাখুন। রানের মাংসল অংশ আধা ইঞ্চি পরপর ছুরি দিয়ে হাড় পর্যন্ত চিরে দিন, যাতে ঝোল মাংসের ভেতর ঢুকতে পারে। রান সেদ্ধ করা পানি জ্বাল দিয়ে শুকিয়ে ঘন করে নিন। এবার ময়দা দিয়ে মসলা ভাজা ভাজা করুন। আরও ২ কাপ পানি দিন। টমেটো সস ও বারবিকিউ সস দিন। লবণ ও চিনির স্বাদ ঠিক আছে কি না দেখে ঝোল ঘন হলে এর মধ্যে খাসির রান দিন। ঢেকে ৫ মিনিট ঢিমা আঁচে রান্না করুন। ঢাকনা খুলে রান উল্টে দিন। এরপর ঢেকে আরও ৫ মিনিট ঢিমা আঁচে রান্না করুন। লেবুর রস, কাঁচা মরিচ আর আধভাঙা গোলমরিচ গুঁড়া দিন। ঢেকে ৩ মিনিট ঢিমা আঁচে রান্না করে চুলা থেকে নামান।
সাজানোর জন্য: কড়া আঁচে পানি ফুটতে দিন। গাজর ও পেঁপে পানিতে ছাড়ুন। সবজি আধা সেদ্ধ হয়ে গেলে বরবটি দিন। মিনিট তিনেক রেখে পানি ঝরিয়ে সবজি ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। কড়া আঁচে মাখন গরম করুন। কয়েক সেকেন্ড সবজি নাড়াচাড়া করে নামিয়ে ফেলুন। পরিবেশন পাত্রে খাসির রান সাজিয়ে রাখুন। এবার রানের রান্না করা ঝোল থেকে কাঁচা মরিচ ফেলে দিন। ঝোল ঢেলে চারপাশে সবজি দিয়ে পরিবেশন করুন।
খাদ্যশক্তি: ৫৩৩০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ১১২ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ৮৮ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ৫০৩ গ্রাম (প্রায়)

সুরমা মাছের কোফতা

উপকরণ
কোফতার জন্য: সুরমা মাছের পেস্ট ১ কাপ (অথবা এশিয়ান গ্রোসারির ফিশ পেস্ট), ডিমের সাদা ২টি, আদা বাটা ১/৪ চা চামচ, রসুন বাটা ১/৪ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১/২ চা চামচ, অ্যারারুট গোলানো ২ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ চা চামচ, লবণ ১/৪ চা চামচ।
ঝোলের জন্য: পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ, পেঁয়াজ বাটা ৩ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, মিষ্টিদই ২ টেবিল চামচ, (অথবা টকদই ২ টেবিল চামচ ও চিনি ২ চা চামচ), ময়দা ১/২ চা চামচ, রান্নার তেল ৩ টেবিল চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, নারকেলের দুধ ১ কাপ, পাকা মরিচ ৬-৭টি, লবণ ১ চা চামচ।
প্রণালি
কোফতার জন্য: মাছের পেস্টে লবণ, ডিমের সাদা ও অ্যারারুট দিয়ে এগ বিটারে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। (এশিয়ান গ্রোসারি ফিশ পেস্ট হলে ডিমের সাদা আর অ্যারারুট বাদ দিন)। তারপর এতে আদা, রসুন, পেঁয়াজ বাটা, কাঁচা মরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে একসঙ্গে মাখান। হাতে খানিকটা তেল মেখে নিন, তাহলে আর মাছ তালুতে লেগে থাকবে না। ২ ইঞ্চি মাপের গোল বলের আকারে কোফতা বানিয়ে নিন।
ঝোলের জন্য : কড়া আঁচে তেল ও ঘি একসঙ্গে গরম করুন। পেঁয়াজ কুচি লালচে করে ভেজে নিন। সব বাটা মসলা ও লবণ দিয়ে ভালো করে কষিয়ে দই, ময়দা মিশিয়ে ফেটিয়ে তাতে দিয়ে আবার কষান। তারপর অর্ধেক নারকেল দুধ দিয়ে ভালো করে কষান। আঁচ ঢিমা করে কোফতাগুলো কষানো মসলায় ছেড়ে দিন। কোফতা কাঁচা অবস্থায় কড়াই ঝাঁকিয়ে রান্না করুন, যাতে তা না ভাঙে। আঁচ ঢিমা রাখুন, না হলে কোফতা কড়াইয়ে লেগে যেতে পারে। রঙ পরিবর্তন করে কোফতা যখন সেদ্ধ হয়ে যাবে, তখন বাকি নারকেলের দুধ ও পাকা মরিচ দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে ঢেকে ঢিমা আঁচে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রান্না করুন। এই সময় মাঝে দু-একবার একটু নেড়ে দেবেন। ঝোল শুকিয়ে তেল ভেসে উঠলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

খাদ্যশক্তি: ২০৫০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ৭৫ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ৬৫ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ১৬৬ গ্রাম (প্রায়)

স্লাইসড ফিশ উইথ ভেজিটেবল

এটা চীনা রান্না। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

উপকরণ
যেকোনো কাঁটা ছাড়া মাছের আস্ত টুকরা বা ফিলে পাতলা স্লাইস করা ১ কাপ, ক্যাপসিকাম, চৌকো করে কাটা ১ কাপ, পেঁয়াজ কলি ১ ইঞ্চি করে কাটা ১/২ কাপ, শসা বিচি ফেলে তেরছা করে কাটা ১ কাপ, গাজর পাতলা স্লাইস ১/২ কাপ, পেঁয়াজ ভাঁজখোলা ১ কাপ, রসুন স্লাইস ১ কোয়া, আদা স্লাইস ৫-৬টা, ফিশ সস ১ টেবিল চামচ, অ্যারারুট পানিতে গোলানো ২ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা চামচ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, সেসমি অয়েল ২ চা চামচ, ডিমের সাদা অংশ ১টা, রান্নার তেল ২ কাপ, লবণ ২ চা চামচ।
প্রণালি
মাছের টুকরাগুলো ২ চা চামচ লবণ দিয়ে মাখিয়ে ১/২ ঘণ্টা পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। পরিষ্কার পানিতে মাছ ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার মাছের টুকরাগুলো ১ টেবিল চামচ শুকনা অ্যারারুট, ডিমের সাদা, ১/২ চা চামচ ফিশ সস আর ১/২ চা চামচ সেসমি অয়েল দিয়ে মাখিয়ে নিন। কড়া আঁচে তেল গরম করুন। ডুবো তেলে হালকা করে মাছের স্লাইস আলাদা করে এমনভাবে ভেজে তুলে রাখুন, যাতে ভাজা মাছের টুকরোগুলো চকচকে দেখায়। কিছুতেই কড়া ভাজা চলবে না। আলাদা কড়াইয়ে ৩ টেবিল চামচ তেল দিয়ে তাতে আদা রসুন স্লাইস হালকা করে ভাজুন। সবজি ও ভাঁজখোলা পেঁয়াজ দিয়ে ৩ থেকে ৪ মিনিট হালকা ভেজে নিন। সবজিতে ২ টেবিল চামচ গোলানো অ্যারারুট ও ১ কাপ পানি দিন। পানি ফুটে উঠে ঝোল ঘন হলে ভাজা মাছের টুকরা দিয়ে আলতো করে নাড়ুন। নামানোর আগে ২ চা-চামচ সেসমি অয়েল ছিটিয়ে পাত্রে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

খাদ্যশক্তি: ২৬০০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ৫০ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ৬৫ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ২৩৮ গ্রাম (প্রায়)

বিয়েবাড়ির রোস্ট

উপকরণ
রোস্টের মসলার জন্য: দারুচিনি দেড় টেবিল চামচ, এলাচি দেড় টেবিল চামচ, জায়ফল ১টি, জয়ত্রী ১ চা চামচ, শাহি জিরা ১ চা চামচ, সাদা গোলমরিচ ১ চা চামচ।
মুরগির জন্য: ছোট মুরগি, ৪ টুকরা করে কাটা ৩টি (অথবা বড় মুরগির রান-থান ৬ টুকরা), সয়াবিন তেল আধা কাপ, ঘি আধা কাপ, চিনি ২ চা চামচ, লবণ ২ চা চামচ, আদা বাটা ৩ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া দেড় টেবিল চামচ, রোস্টের মসলা দেড় চা চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৩/৪ কাপ, মাওয়া ১/২ কাপ, মালাই ১/২ কাপ, আলুবোখারা ৮টি, গোলাপজল ১ চা-চামচ, কিশমিশ ১ টেবিল চামচ, ১ টেবিল চামচ পানিতে গোলানো এডিবল কালার ১/৮ চা চামচ।
প্রণালি
রোস্টের মসলা: সব মসলা একসঙ্গে গুঁড়া করে নিন।
মুরগির জন্য: রান্নার সময় মাংসের টুকরাগুলো যেন শক্ত না হয়ে যায়, সে জন্য মাঝখানে চিরে দিন। কড়া আঁচে তেল গরম করে মুরগি লবণ ও চিনি দিয়ে ভাজুন। রঙ দিয়ে নেড়ে ঢাকুন। আঁচ ঢিমা করে দিন। ৫ মিনিট পর ঢাকনা সরান। মুরগির রঙ বদলে গেলে আদা, রসুন ও মরিচের গুঁড়া দিয়ে নাড়ুন। মসলার কাঁচা গন্ধ চলে গেলে বেরেস্তা ও রোস্টের মসলা দিন। ১/২ কাপ পানি, কিশমিশ, আলুবোখারা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে দিন। মুরগি সেদ্ধ হলে ঢাকনা খুলে মালাই, মাওয়া, ঘি ও গোলাপজল দিয়ে নেড়ে মেশান। নামিয়ে পরিবেশন করুন।

খাদ্যশক্তি: ৩৩০০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ৮৫ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ১৪০ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ২৬৭ গ্রাম (প্রায়)

থাই স্টাইল চিকেন উইংস

উপকরণ
মুরগির পাখনা ১৬টা, সয়া সস ২ চা চামচ, অয়েস্টার সস ২ টেবিল চামচ, সিজনিং সস ২ চা চামচ, গুড় ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১/৪ কাপ, রসুন ছেঁচা ৮ কোয়া, কাঁচা মরিচ কুচি ছেঁচা ৬টা, থাই ফিশ সস ২ চা চামচ, সেসমি অয়েল ২ চা চামচ, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ, সুইট চিলি গার্লিক সস ৪ টেবিল চামচ, রান্নার তেল ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালি
পাখনার ছোট অংশটি ছেঁটে ফেলুন। পাখনার গায়ে ছুরি দিয়ে গভীরভাবে চিরে নিন, যাতে মসলা ভেতরে ঢুকতে পারে। তেল আর সুইট চিলি সস বাদে আর সব উপকরণ মুরগির পাখনার সঙ্গে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। কড়া আঁচে চুলায় তেল গরম করুন। মুরগির পাখনার বাইরের দিক থেকে ম্যারিনেটের মসলা মাখিয়ে প্যানে বিছিয়ে দিয়ে দুই মিনিট ভাজুন। কাঁচানো ম্যারিনেটের মসলা আলাদা পাত্রে তুলে রাখুন। এ সময় পাখনা নাড়বেন না। পোড়া রঙ ধারণ করলে চিন্তা করবেন না। দুই মিনিট পর পাখনাগুলো উল্টে দিয়ে অপর দিক একইভাবে আরও দুই মিনিট ভাজুন। আঁচ ঢিমা করে ঢেকে ৫ মিনিট রাঁধুন। ঢাকনা খুলে পাখনাগুলো উল্টে আবার ঢেকে ৫ মিনিট রাঁধুন। এবার পাখনাগুলোতে কাঁচানো মেরিনেশনের মসলা দিন। সঙ্গে সুইট চিলি গার্লিক সস দিয়ে দুই মিনিট নাড়াচাড়া করে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

খাদ্যশক্তি: ১২৮০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ৩২ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ৫০ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ১০৬ গ্রাম (প্রায়)

চিকেন কস্তুরি কাবাব

উপকরণ
মুরগির রানের হাড় ছাড়ানো মাংস ১ ইঞ্চি বাই ১ ইঞ্চি মাপে কাটা ১ কেজি
প্রথম পর্বের মসলা: মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, জায়ফল-জয়ত্রী গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, দারুচিনি, এলাচি গুঁড়া ১/৮ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, বেসন ১/৪ কাপ, রান্নার তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ ১/২ চা চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১/২ কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, ডিম ১টা।
দ্বিতীয় পর্বের মসলা: কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, পানি ২ টেবিল চামচ, দারুচিনি, এলাচি, গোলমরিচের গুঁড়া ১/৮ চা চামচ, জয়ত্রী গুঁড়া, জায়ফল ১/৮ চা চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ২ টেবিল চামচ, টকদই ৩ টেবিল চামচ, ভাজা জিরাগুঁড়া ১/২ চা চামচ, চিনি ১ চা চামচ, হুইপিং ক্রিম ২ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ।
তৃতীয় পর্ব: ৪ ইঞ্চি মাপের কাঠি ১০ থেকে ১৫, ডিম ৩টা, রান্নার তেল ৩ টেবিল চামচ, ঘি ১/৪ চা চামচ, কয়লা ৩ টুকরা
প্রণালি
প্রথম পর্ব: তেল গরম করে বেসন ছেড়ে সোনালি করে ভাজুন। মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। সব মসলা ও ভাজা বেসন মাংসে মাখিয়ে রাখুন।
দ্বিতীয় পর্ব: ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে কাঁচা মরিচ কুচি ভাজুন। ক্রিম ছাড়া সব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে ক্রিম মেশান। নামিয়ে মসলা ঠান্ডঃা করে মসলা মাখানো মুরগিতে মেশান।
তৃতীয় পর্ব: মাংসের টুকরা কাঠিতে গাঁথুন। ডিম ফেটিয়ে নিন। কড়া আঁচে তেল গরম করুন। কাবাব ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে প্যানে দিন। ঢেকে ১ মিনিট ভাজুন। এক মিনিট পর অন্যদিকে ডিম ব্রুশ করে আবার এক মিনিট ভাজুন। আরেক দিকে একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করুন। একটি বড় হাঁড়ির মাঝখানে একটা ধাতব পাত্র রাখুন। চারপাশে কাবাব সাজান। এরপর জ্বলন্ত কাঠকয়লা মাঝখানের হাঁড়িতে দিয়ে তার ওপর ঘি ঢেলে ঢেকে দিয়ে আধঘণ্টা রাখুন। পরে প্রয়োজনে মাইক্রোওয়েভ আভেন অথবা তাওয়ায় গরম করে পরিবেশন করুন।

খাদ্যশক্তি: ৩৫১৩ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ২৩২ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ৫০ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ২৬৫ গ্রাম (প্রায়)

বেকড ফিশ উইথ ক্রিমি মাশরুম সস

এটি জমকালো পাশ্চাত্যের রান্না। খাবারের তালিকায় মেইন কোর্স হিসেবে রাখতে পারেন

উপকরণ
ভেটকি/বাছা ফিলে ৭৫০ গ্রাম ২টি, মাখন ৮ টেবিল চামচ, ময়দা ১ কাপ, ইতালিয়ান সিজনিং ১/২ চা চামচ, মাস্টার্ড পেস্ট ১ চা চামচ মাঝারি লেবু, ১টা লেবুর খোসা কোরানো ১ টেবিল চামচ, উস্টার সস ১ চা চামচ, গুইপিং ক্রিম ১/৪ কাপ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, মাশরুম কুচি ১/২ কাপ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, চিকেন স্টক পাউডার ১ চা চামচ, ১ ইঞ্চি টুকরা আলু সেদ্ধ ২ কাপ, লবণ ২ চা চামচ।
প্রণালি
মাছের ফিলের চামড়া ছাড়িয়ে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে মাছ ডুবানো যায় এমন পরিমাণ পানি নিয়ে তাতে ১ চা চামচ লবণ, ৩/৪ অংশ লেবুর রস ও লেবুর খোসা দিন। এতে মাছ ৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর মাছের থেকে সব পানি ঝরিয়ে মুছে রাখুন। এবারে মাস্টার্ড, উস্টার সস, রসুন বাটা ও ১ চা চামচ লবণ দিয়ে মাছের ফিলে মাখান। কড়া আঁচে ২ টেবিল চামচ মাখন গরম করুন। এবার মাছের ফিলে শুকনা ময়দায় গড়িয়ে নিয়ে মাখনে হালকা করে এপাশ-ওপাশ করে ভেজে নিন। হালকা ভাজা মাছের ফিলেগুলো মাইক্রোওয়েভ-প্রুফ পাত্রে সাজান। সেলোফেন দিয়ে মুড়ে মাইক্রোয়েভে ১০ মিনিট বেক করুন। অথবা ফয়েল দিয়ে ঢেকে আভেনে ১৮০ ডিগ্রিতে ২০ মিনিট বেক করুন। মাঝারি আঁচের চুলায় অন্য একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ বাকি মাখন গরম করুন। তাতে ২ টেবিল চামচ ময়দা হালকা বাদামি করে ভাজুন। ভাজা ময়দায় দেড় কাপ পানি দিন। এতে ইতালিয়ান সিজনিং, চিকেন স্টক পাউডার ও মাশরুম কুচি এখানে দিয়ে রান্না করুন। সস ফুটে উঠলে তাতে ক্রিম ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মেশান। ঘন মাশরুম সস বেক করা ভাজা মাছে ঢেলে দিন। সেদ্ধ আলুর টুকরা ২ টেবিল চামচ মাখনে ঢিমা আঁচে লালচে করে ভাজুন। পরিবেশনের পাত্রে ভাজা আলু মাছের চারপাশে ছড়িয়ে সাজিয়ে দিন।

খাদ্যশক্তি: ২৭৫০ কিলোক্যালরি (প্রায়), প্রোটিন: ১৪৫ গ্রাম (প্রায়), কার্বোহাইড্রেট: ১৫৫ গ্রাম (প্রায়), ফ্যাট: ১৭২ গ্রাম (প্রায়)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top