skip to Main Content

লেবেল অ্যালার্ট I পার্কি প্যাস্টেল

প্যাস্টেল। অনলাইন ফ্যাশন ব্র্যান্ড। এর যাত্রা শুরুর গল্পটা একটু ভিন্ন। ‘মাটি, ভোরের রোদ, হালকা মেঘলা আকাশ, ফুলের পাপড়ির রং খুব ভালো লাগে আমার। কালার প্যালেটের লাইট শেড মনের অনুভূতিকে প্রকাশ করার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে হয়। ছোটবেলায় নিজের পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এ ধরনের শেড বেছে নিতাম। এরপর যখন নিজের লেবেল শুরু করি, বেছে নিই প্যাস্টেল নামটি। কারণ, তত দিনে জেনে গেছি, হাজার রঙের ভেতরে আমার প্রিয় যে রংগুলো, সেই গ্রুপটি প্যাস্টেল নামে পরিচিত।’ বলছিলেন স্বত্বাধিকারী ইফফাত-ই-ফারিয়া।
প্যাস্টেলের অনলাইন যাত্রা শুরু ২০১৪ সালে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কার্যক্রম শুরু করেন ফারিয়া। এর পেছনে দেশের ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ফারিয়া নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তাদের গল্প শুনতে গিয়ে তাড়না অনুভব করেছেন একটি উদ্যোগ গ্রহণের। নান্দনিকতার সঙ্গে সৌন্দর্যের প্রতি নিজ আগ্রহ প্রকাশ ঘটাতে পারবেন যেখানে।
কোনো বিষয়ে কাজ করার জন্য সে বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে বিশ্বাস করেন প্যাস্টেল কর্ণধার। তাই তিনি ডিজাইনিং, টাই ডাই, হ্যান্ড এমব্রয়ডারি ও কাটিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রডাক্ট লাইন শুরু করেছিলেন শুধু ক্লদিং আইটেম নিয়ে। কলেবর বাড়িয়েছেন। বর্তমানে প্যাস্টেলের ব্যানারে অ্যাপারেলের পাশাপাশি হ্যান্ডি ক্র্যাফটের বিভিন্ন পণ্য নিয়েও কাজ করছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাঠ ও পরিবেশবান্ধব উপাদান। প্যাস্টেলে প্রডাক্টের ক্ষেত্রে কমফোর্ট, বাজেট ফ্রেন্ডলি এবং এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি বিষয়গুলো গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিজের উদ্যোগে কিছু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার শুরু থেকে চেষ্টা করেছেন সরাসরি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরির। সোশ্যাল মিডিয়ায় কমিউনিটি গ্রুপ তৈরি করে তিনি সম্ভাব্য ক্রেতাদের চাহিদা সম্পর্কে তথ্য নিতেন এবং তাদের প্রয়োজনে এগিয়ে আসতেন।
প্যাস্টেল দেশের বাস্তব অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে সবার জন্য পণ্য প্রস্তুতে মনোযোগী। তাই পণ্যমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে। প্রয়োজন থেকে শুরু করে বিলাস—সব ধরনের পণ্যই তৈরি করে ব্র্যান্ডটি।
প্যাস্টেল মূলত সব উপাদান দেশের ভেতর থেকে সংগ্রহ করে। নিজস্ব তত্ত্বাবধানে তৈরি করে পণ্য। বাংলাদেশ ও বাঙালি ঐতিহ্যকে থিম হিসেবে নিয়ে বিভিন্ন কাজ করছে প্যাস্টেল। দেশের ম্যাপ তারা নিয়ে এসেছে বিভিন্ন পণ্যের নকশায়। যেমন পিলো কাভার, হ্যান্ড ব্যাগ, টি-শার্ট।
দেশের বিভাগগুলোকেও চিত্রিত করেছে প্যাস্টেল। চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগকে দৃশ্যমান করে তুলেছে রাউন্ড নেক টি-শার্টের বুকে। উডেন অর্গানাইজিং বক্স নিয়েও কাজ রয়েছে এদের। এই ক্যাটাগরিতে আছে গয়নার বাক্সও।
বাংলা শিশু সাহিত্যের জনপ্রিয় রূপকথার সংকলন ঠাকুরমার ঝুলি নিয়েও কাজ করছে ব্র্যান্ডটি। রিফাবরিশড আর্টিফিশিয়াল লেদারের হ্যান্ডেলসহ ক্যানভাস ফ্যাব্রিকের ব্যাগ তৈরি করেছে। মূল্য ১ হাজার ৫৫০ টাকা। দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার জায়গাতেও অবদান রাখতে সক্রিয় এই ব্র্যান্ড। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে গেছে এই লেবেলের বাংলাদেশ থিমে তৈরি পণ্য।
ক্রেতা সন্তুষ্টি বিষয়ে ইফফাত-ই-ফারিয়া বলেন, ‘আমি সব সময় কাস্টমার স্যাটিসফেকশনের বিষয়টি মাথায় রাখি। নিজের ডিজাইনের পাশাপাশি কাস্টমারের চাহিদামতো কাস্টমাইজেশনের সুযোগ রাখি।’ আরও জানালেন, ক্রেতার ক্রয়কৃত ফ্যাব্রিক ব্যবহারেও পোশাক তৈরি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন তিনি। ফ্যাশন কনসালট্যান্সির মাধ্যমে সাজেশন এবং ড্রেস প্রোডাকশন করে সাহায্য করেন। ক্রেতা-বিক্রেতার সরাসরি যোগাযোগ প্যাস্টেলকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে বলে দাবি তার।
সামনের দিনের পরিকল্পনা বিষয়ে ফারিয়া বলেন, ‘ঢাকায় একটি আউটলেট করার এবং দেশের বাইরে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার চিন্তা করছি। ইতিমধ্যে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে পণ্য পৌঁছে দিতে পেরেছি।’
 ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: প্যাস্টেলের সৌজন্যে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top