skip to Main Content
চীন দেশের পথখাবার পোকামাকড়!

চীনারা খাবারের স্বাদ শুধু জিভ দিয়েই নয়, অন্তর দিয়েও গ্রহণ করে। দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ের পথে ঘুরতে ঘুরতে যদি হঠাৎ করেই ‘ওয়াং ফু চিং’ এর গলির মধ্যে ঢুকে পড়েন, দেখতে পাবেন পোকামাকড়ের ঘরবসতি! শাসলিকের মতো কাঠিতে গেঁথে বিক্রি হচ্ছে জ্যান্ত পোকামাকড়! প্রদর্শনীর জন্য নয়, খাওয়ার জন্য। এসব হচ্ছে চীন দেশীয় ব্যতিক্রমী পথখাদ্য। বেইজিংয়ের পথখাবার চৈনিক কিংবা বিদেশি সবার কাছেই জনপ্রিয়। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি সড়কেই আছে পথখাদ্যের বিপণি। কাবাব, বার্গার, চিকেন ফ্রাই, সুপ, রুটি, সেদ্ধ ভুট্টা, মিষ্টি, নুডলস, পোড়া আলু আর আইসক্রিম মিলবে সেখানে। বিশেষ ধরনের পথখাদ্যের জন্য চীনে যে কটি বিখ্যাত জায়গা আছে, সেগুলোর অন্যতম হলো ওয়াং ফু চিং।

পথখাদ্যের জন্য ‘শিয়ামেন ওয়াকিং স্ট্রিট’-এরও সুনাম আছে। ওয়াং ফু চিং-এর গলির মুখেই চোখে পড়বে চীনারীতিতে তৈরি বড় একটি তোরণ। এর ভেতর দিয়ে প্রবেশ করলেই দুপাশে খাবারের দোকান দেখা যাবে। খাবারগুলো খেতে হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে, দোকানের ভেতর বসার কোনো জায়গা নেই। অনেকটা আমাদের দেশের মতোই।  সেখানে বিছাজাতীয় একধরনের জ্যান্ত পোকা শিকে গাঁথা থাকে, খাবার হিসেবে। খেতে চাইলে অল্প ঝলসে নিতে হবে আগুনে। মাজরা পোকার মতোও একধরনের পোকাও খাওয়া হয়। আরও আছে কোকুন তথা পোকার ডিম। আছে মাকড়সাও।

পোকামাকড় ছাড়াও পথখাদ্য হিসেবে পাওয়া যাবে সি-ফুড। স্টারফিশ, সি-হর্স, জেলি ফিশসহ আরও নানা ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী। সবই জীবন্ত! তবে বিষাক্ত নয় কোনোটিই। এসবের পাশপাশি আছে শিকে গাঁথা ছোট পাখি বা মুরগির বাচ্চার রোস্ট। আকারে খুবই ছোট, পালক ছাড়ানো। আরও আছে গরু, ছাগল ও শূকরের মাংসের শিক কাবাব বা ‘ছুয়ান’ এবং জিহ্বা ভাজা। ছোট ছোট বাটিতে বিক্রি হয় ভুঁড়ি, চামড়া ভাজার সুপ।

ফলফলারি বলতে চেরিসহ বিভিন্ন ফল শিকে গেঁথে ওপরে গরম চিনির শিরা ঢেলে পরিবেশন করা হয় চীনের পথখাবারে। ও দেশে আরেকটি মজার পথখাবার হলো চিনির পুতুল। গরম চিনির শিরা সরু নলের মধ্যে ঢেলে ফুঁ দিয়ে বানানো চিনির পুতুল। শূকর, খরগোশ, ড্রাগন ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির বাতাস ভরা এই পুতুলগুলোর ওপর রং দিয়ে চোখ, মুখ এঁকে দেওয়া হয়। চিনির পুতুল একটি কাঠিতে গেঁথে বিক্রি করা হয়। পচা ডিমও বেশ জনপ্রিয় পথখাবার! তবে খাবার উপযোগী করেই বিক্রি করা হয়। অবশ্য পরিচিত রসনাগুলোর মধ্যে ‘ইয়াংরো ছুয়ান’ বা খাসির কাবাবও মেলে সেখানে। সেদ্ধ ভুট্টার মতো খাদ্যও পাওয়া যায়। এ ছাড়া ওয়াং ফু চিংয়ে রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকানে রঙিন কাগজে মুড়ে ‘শুঁটকির মাংস’ বিক্রি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top