মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা মিস ওয়ার্ল্ডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে সদ্যই দেশে ফিরেছেন আকলিমা আতিকা কনিকা। ভারতের হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত এবারের আসরে, মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ হিসেবে আরও ১০৮ দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রায় মাসখানেক সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর আজরা মাহমুদ পরিচালিত প্রশিক্ষণকেন্দ্র আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প (এএমটিসি) কার্যালয়ে মঙ্গলবার (৩ জুন ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে সেই গল্প সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন কনিকা।

৩ জুন ২০২৫, সংবাদ সম্মেলনে আকলিমা আতিকা কনিকা
এএমটিসি’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে কনিকার মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে শুরু করে বৈশ্বিকমঞ্চে অংশগ্রহণের এই অভিযাত্রাকে তুলে ধরা হয়। কনিকা খোলামেলাভাবে জানান তার প্রস্তুতির কঠোরতা, আবেগঘন মুহূর্ত আর স্মরণীয় সব অভিজ্ঞতা সম্পর্কে। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, ‘আমি যখন ওই মঞ্চে পা রাখি, তখন শুধু একজন প্রতিযোগীই ছিলাম না; ছিলাম বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রতিনিধি। প্রতিটি পদক্ষেপ, হাসি ও শব্দে আমি আমার জাতির গর্ব বহন করেছি।’

আকলিমা আতিকা কনিকা
যদিও তিনি বিজয়ীর মুকুট জিততে পারেননি, তবু তার আচরণ, স্বতঃস্ফূর্ততা আর দৃঢ় উপস্থিতি দেশ-বিদেশের দর্শক ও বিচারকদের মন জয় করেছে।

৩ জুন ২০২৫, মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর আজরা মাহমুদ ও টিমের সঙ্গে আকলিমা আতিকা কনিকা
অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। মিস ওয়ার্ল্ড ২০২৫-এ কনিকার অংশগ্রহণ সম্ভব করে তুলতে যারা অবদান রেখেছেন, এই অনুষ্ঠানে তাদেরও স্বীকৃতি জানানো হয়ে। এতে উপস্থিতি ছিল এমবিআইটি (মিস বাংলাদেশ টিম ইন ট্রেনিং) সদস্যদের, যারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের প্রস্তুতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। কনিকার বেলায়ও যার ব্যত্যয় ঘটেনি।

আকলিমা আতিকা কনিকা
অনুষ্ঠানে সম্মাননা দেওয়া হয় কনিকার পোশাক পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত প্রধান ফ্যাশন ডিজাইনার মেহরুজ মুনিরকে। এ ছাড়াও সম্মাননা জানানো হয় প্রতিভাবান ডিজাইনার রাইসা আমিন শৈলী, ফারদিন বায়েজিদ, বিশ্বজিৎ ও তৃষার প্রতি– যারা কনিকার পোশাক পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিল কনিকাকে পরিপাটি করে তোলা ক্রিয়েটিভ টিমও। এদের মধ্যে ছিলেন ফটোগ্রাফার নাইমুল ইসলাম, সিনেমাটোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান শেখর, এডিটর পলাশ বিশ্বাস এবং কোরিওগ্রাফার আসাদ খান। কনিকার স্টাইলিস্ট ও ইমেজ আর্কিটেক্ট হিসেবে পুরো সময় ছিলেন এফা তাবাসসুম। এই অনুষ্ঠানে তার প্রতিও সম্মান জানানো হয়।

আকলিমা আতিকা কনিকা
কনিকা বলেন, ‘এই যাত্রা কখনোই আমার একার ছিল না। এই প্রয়াস পূর্ণতা পেয়েছে আমার মেন্টর, সৃজনশীল দল, বন্ধু আর আমার ওপর যারা আস্থা রেখেছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।’
অন্যদিকে, আজরা মাহমুদ বলেন, ‘কনিকার জন্য আমি ভীষণ গর্বিত। তিনি বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের নারীদের প্রতীক– সাহসী, সহানুভূতিশীল এবং আন্তর্জাতিক মনোভাব সম্পন্ন।’

৩ জুন ২০২৫, আজরা মাহমুদের সঙ্গে আকলিমা আতিকা কনিকা
এদিন ভবিষ্যৎ ভাবনাও জানিয়েছেন কনিকা। তিনি বলেন, “আমি এখন আমার দুটি প্রকল্প ‘বিউটি উইদ আ পারপাস’ ও ‘ইয়ং মাইন্ড ম্যাটারস’-এ মনোযোগ দেব। তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য ও এর উন্নয়নে কাজ করে এই প্রকল্প দুটি। মিস ওয়ার্ল্ড প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে আমি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নানা প্রচারণা চালাব। পাশাপাশি নতুন উদ্যোগও গ্রহণ করব, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চলার পথ সুগম হতে পারে।’
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: এএমটিসি’র সৌজন্যে