skip to Main Content
ডিসেম্বরে এফডিসিবি’র তিন দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ কটুর উইক ২০২১’

বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইনারদের প্রতিষ্ঠান এফডিসিবি আয়োজন করেছে ‘বাংলাদেশ কটুর উইক ২০২১’-এর। ২, ৩ ও ৪ ডিসেম্বর গুলশান ২-এর বে’স ওয়াটার গ্যালারিতে তা অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের প্রতিদিনই আলাদা আলাদা কিছু কার্যক্রম থাকবে বলে জানা গেছে।

‘বাংলাদেশ কটুর উইক ২০২১’-এর উদ্বোধন হবে ২ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায়। উদ্বোধন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন জাপানের রাষ্ট্রদূত মিস্টার ইতো নাউকি। তা ছাড়া আরও কজন বিশিষ্ট ব্যক্তি থাকবেন। সেদিন বিকাল ৫টা নাগাদ বিশেষ ‘ফ্ল্যাশ ফ্যাশন শো’ হবে। পরের দিন বিকাল ৪টায় ফ্যাশন ডিজাইনের অগ্রগতি বিষয়ক প্যানেল আলোচনায় বসবেন সংশ্লিষ্টরা। বিকাল ৫টায় মডেল ও ডিজাইনারদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের পর বিতরণ হবে কারুশিল্পের শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার।

শেষ দিনে বিকাল ৪টায় মোস্ট স্টাইলিশ পারসোনালিটি অ্যাওয়ার্ড প্রদানের পর আবার ‘ফ্ল্যাশ ফ্যাশন শো’অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সমাপনী।

উল্লেখ্য এফডিসিবি একটি অলাভজনক সরকার অনুমোদিত বাংলাদেশের ডিজাইনাদের প্রতিষ্ঠান। এখানে ডিজাইনাররা তাদের মেধা ও চর্চার মাধ্যমে দেশের কারু, লোকজ, তাঁতশিল্পের বিকাশে আত্মনিয়োগ করেছে। এফডিসিবি ইতিমধ্যে দেশি ও বিদেশি ডিজাইনারদের সমন্বয়ে শুরুতেই খাদির পুনঃউন্নয়ন ও জাগরণের প্রচেষ্ঠায় তিনবার ‘খাদি-শো’ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে খাদির ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে।

এফডিসিবি বিশ্বাস করে দেশের লোকজ শিল্পের উন্নয়নে পারস্পরিক সম্পর্ক ও চর্চার মধ্য দিয়ে শিল্পের বিকাশ সম্ভব। এর ফলপ্রসু উদাহরণ আমাদের খাদি শিল্প। এই বিশ্বাস নিয়েই এফডিসিবির সিল্ক শিল্পের উন্নয়ন, ব্যবহার, উৎপাদনের নানান দিক নিয়ে এই তিন দিনব্যাপী কর্মসূচী।

বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের তাঁত শিল্প প্রায় নিম্নমুখী। চরম দারিদ্রতা তাঁত শিল্পের তাঁতিদের শহরমুখী, অন্য পেশার অন্বেষণ, অনুপোযোগী পরিবেশ কাঁচামালের স্বল্পতা, মান সমন্বয়হীনতা, ধীর বাজারজাত, ইত্যাদি সিল্ক শিল্পের উন্নয়নকে ব্যাহত করেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী গত বছর দেশে সিল্ক উৎপাদিত হয়েছে মাত্র ১২,২১১ কেজি, যা চাহিদার অনুপাতে খুব অপ্রতুল। তাঁত শিল্পে পূর্ব-পুরুষদের পেশায় অনিহার জন্য সিল্ক শিল্পের সাথে এ প্রজন্মের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে। আমাদের ইতিহাস শিল্প-সংস্কৃতি নির্ভর। প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে বহমান শিল্প জীবন যাত্রা।

একটি দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি তার সময়কার সভ্যতাকে প্রকাশ করে। আমাদের খাদি, সিল্ক, জামদানি আমাদের সম্পদ। এই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তিকে সংরক্ষণ ও পরিচর্যা অনতিবিলম্বে করা আবশ্যক।

কটুর উইক বলতে আমরা এক অর্থে ফ্যাশন উইক বলতে পারি। এখানে মূলত ডিজাইনারের হাতে তৈরি পোশাকের লাইন আপ, সেলাই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় যাতে পোশাকের উন্নতমান বজায় থাকে।

সিল্ক একটি বিলাসী তন্তু। আমাদের রাজশাহী চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকা সিল্কের জন্য বিখ্যাত। তাই এফডিসিবি এবার সিল্ক নিয়ে তার আয়োজন তুলে ধরবে। উল্লেখ্য সিল্ক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত থাকে নানান পর্যায়ে কর্মসংস্থান। সিল্ক চাষের সঙ্গে তুঁত গাছ উৎপাদন, পরিবেশবান্ধব অনুকূল অবস্থান, পশু লালন পালন, কোকন তৈরি ও সেদ্ধ, রিলিং, ডিগামিং, ডাগাং ও বুনন সম্পৃক্ত।

এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ নারী; কিন্তু বুননশিল্পী পুরুষ নির্ভর হলেও নারীরা এ বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন। তাছাড়া সিল্ক উৎপাদন মূলত পরিবার নির্ভর। সিল্কের নানান উপকরণ দেখা যাবে এই আয়োজনে। সাদা শুভ্র সিল্ক সবার কাছে বলাকা সিল্ক নামে পরিচিত। নরম বা টাফোটা সিল্ক, ডুপিয়ান, এনডি, আরগানজার পোশাক, শাড়ি প্রদর্শিত হবে এই শোতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top