skip to Main Content

ফিচার I দ্য বিউটি ‘ফুল’

ফুল ফুটুক চুলে। ট্র্যাডিশনাল থেকে ট্রেন্ডি- নানান কায়দায়। অতিথি সমাগমের মধ্যেও দিনভর স্নিœগ্ধতার মায়ায় নিজেকে মুড়ে রাখতে

টিকলি, টায়রা, ঝাপটার ঝলকানিকে অনায়াসেই মøান করে দিতে পারে এই অনুষঙ্গ। ফুল। সনাতন সাজের সঙ্গে যেমন জুতসই, তেমনি মানিয়ে যায় সমসাময়িক আধুনিক লুকের সঙ্গেও। বাঁধা কিংবা খোলা- যেকোনো ধরনের হেয়ারস্টাইলে সহজেই জুড়ে দেওয়া যায় ফুল। ব্যবহার করা যায় কাঁচা অথবা কৃত্রিম- দুটি ধরনই। ফুল বাছাইয়ের ব্যাপারেও বাজারে অপশন মিলবে মেলা। তাই সাদামাটা বিয়ের সাজকে আকর্ষক করে তুলতে এর থেকে সহজ-সুন্দর বিকল্প আর হয় না। যদিও বিয়ের সাজে অনেক সময়েই ফুলে জড়ানো হেয়ারস্টাইল পুরোপুরি দৃশ্যমান হয় না। তাতে কী, স্বচ্ছ ঘোমটার আড়াল থেকে দেখাতেই যে বাড়ে এর সৌন্দর্য। করে তোলে পরিপূর্ণ কনে। সঙ্গে কাঁচা ফুলের ম-ম গন্ধ চারপাশজুড়ে তৈরি করে সুগন্ধি ছড়ানো সুখকর পরিমন্ডল। তৈরি হয় জীবনের কাক্সিক্ষত পর্বে প্রবেশের পূর্ণাঙ্গ আবহ। মাথায় ফুল ব্যবহারের আগে বেশ কিছু ব্যাপারে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। দরকার পরিকল্পনা আর খানিকটা প্রস্তুতি। প্রেরণার জন্য পছন্দের তারকারা তো থাকছেই।
আলাপ-আলোচনা
ফুল কাঁচা হোক বা কৃত্রিম- তাতে চুল সাজানোর আগে হেয়ারস্টাইলিস্টের সঙ্গে আলাপ করে নেওয়া দরকার। পছন্দসই ব্রাইডাল লুক আর পোশাকে কোন ধরনের ফুল ভালো মানাবে, সেই পরামর্শের পাশাপাশি এর রঙ, আকার, চুলের কোন অংশে বসালে মানানসই হবে, এ ব্যাপারেও সুস্পষ্ট ধারণা মিলে যাবে। কনের মুখের আকৃতিও এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য। এ ছাড়া কথা বলে নেওয়া যেতে পারে ফুল সরবরাহকারীদের সঙ্গেও। কনের বিশেষ কোনো ফুলের চাহিদা থাকলে আগে থেকেই তাদের জানিয়ে দেওয়া ভালো। শেষ মুহূর্তে অস্থির হতে হবে না। অনেক সময় হেয়ারস্টাইলিস্টরাও ফুল জোগাড় করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সে ব্যাপারে পরিষ্কার কথা বলে নিলে ভালো।
যাচাই-বাছাই
সিদ্ধান্ত নিতে হবে কী ধরনের ফুল চান চুলে। কৃত্রিম, নাকি কাঁচা? উভয়েরই রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। সুবিধা ও অসুবিধা। কাঁচা ফুল প্রাকৃতিকভাবেই সুন্দর, সেই সঙ্গে ছড়ায় সুবাস। কিন্তু মাথায় গোঁজার সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দীর্ঘ সময় টেকেও না। অন্যদিকে ব্যবহৃত ফুল কৃত্রিম হলে একটু খেয়াল করলেই তা ধরে ফেলা যায়। ছড়ায় না সুবাসও। কিন্তু হেয়ারস্টাইলিংয়ের সময় ব্যবহারে সহজ। একইভাবে টিকে থাকবে আয়োজনের শেষ পর্যন্ত। তাই কৃত্রিম ফুল কেনার সময় লক্ষ রাখতে হবে যেন তা কাঁচা ফুলের কাছাকাছি দেখায়। বেশি রঙচঙে, পাথর কিংবা গ্লিটার বসানো ফুল এ ক্ষেত্রে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। আর কাঁচা ফুল ব্যবহারের আগপর্যন্ত তা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে এর স্থায়িত্ব বাড়ে। আয়োজনের আগের রাতে ফুল সুবিধাজনক সাইজে কেটে পানিতে রেখে যদি রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যায় সারা রাত, এর সতেজতা টিকে থাকবে দীর্ঘ সময়।
চুল বুঝে ফুল
চুলের ধরনের ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে ফুল নির্বাচন। সটান সোজা চুলের সাদামাটা হেয়ারস্টাইলে বড় সাইজের একটা ফুলই যথেষ্ট। আভিজাত্য সৃষ্টিতে। কোঁকড়া চুলের অন্যতম আকর্ষণ এর ঢেউ খেলানো টেক্সচার আর ফোলা ভাব। সে ক্ষেত্রে ছোট ছোট ফুল চুলে জড়িয়ে নিলে চমৎকার দেখাবে।
ট্রেন্ড ২০১৯
বুকে বান
বলিউড তারকা আনুশকা শর্মার বদৌলতে গেল বছরে ব্রাইডাল হেয়ার ট্রেন্ডের শীর্ষে ছিল এ হেয়ারস্টাইল। নিপাট খোঁপার সামনের দিক টান টান করে বেঁধে পেছনের পুরোটা মোড়ানো হয়েছিল পিঙ্ক পিওনিতে। তাতেই হয়ে গেল বুকে বান। দেখতে ফুলের তোড়ার মতো, তাই এমন নামকরণ। জরিপ বলছে, এ বছরও খোঁপায় ফুল পরার এই লেটেস্ট কৌশল দেখা যাবে কনের কেশসজ্জায়। খুব উঁচুতে নয়, এই হেয়ারস্টাইলে খোঁপা বাঁধা হয় মাথার পেছনের মাঝ বরাবর অথবা একটু নিচে, ঘাড় ছুঁয়ে। পিওনি ছাড়াও গোলাপ দিয়ে দারুণ দেখায় বুকে বান। কারনেশিয়া, ডেইজি, জারবারা, হাইড্রেঞ্জা দিয়েও করা যায় এ হেয়ারস্টাইল। তবে যারা খোঁপার পুরোটা ফুলে মোড়ানো চান না, তাদের জন্য থাকছে অন্য অপশন। এ ক্ষেত্রে বেলি ফুলের ভারী লহর খোঁপায় বৃত্তাকারে পেঁচিয়ে দেওয়া যায়। ফুলের জাল তৈরি করে তা দিয়েও ঢেকে দেওয়া যায় খোঁপা। বুকে বানে স্বচ্ছন্দ না হলে, কম ফুলের ব্যবহারও হতে পারে। এক পাশে নয়তো নিচের দিকে গুঁজে নেওয়া যেতে পারে গোলাপ অথবা গার্ডেনিয়া। এক গুচ্ছ জিপসি জুড়ে দিলেও দারুণ দেখাবে। এ ছাড়া কৃত্রিম ফুলে তৈরি আস্ত খোঁপাও মিলবে বাজারে। খোঁপা বেঁধে এটা পরে নিলেই তৈরি বুকে বান।
বিকল্প বিনুনি
ক্ল্যাসিক এই হেয়ারস্টাইলেও ফুল জুড়ে দেওয়া যায় হরেক রকম উপায়ে। ফ্রেঞ্চ ব্রেইড থেকে ফিশটেইল, বেণির স্টাইলিং বুঝে ফুল সেট করে নিতে হবে চুলে। জুঁইয়ের মালা জড়ানো বেণি যেমন মায়াবী লুক তৈরি করে, তেমনি ফিশটেইলের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেওয়া ছোট ছোট গোলাপ, ডেইজি আর জিপসিতেও সৃষ্টি হতে পারে স্টেটমেন্ট ব্রাইডাল হেয়ারস্টাইল। আরও এক্সপেরিমেন্টাল লুকের জন্য বেণি আর খোঁপার মিশেলও করে নিতে পারেন। সামনের চুল বেণিতে বেঁধে পেছনে একটু ঢিলেঢালা অগোছালো হাত খোঁপায় গুঁজে নেওয়া যায় পছন্দসই ফুল। মেসি ব্রেইডেড বানে ফুলেল টায়রাও চলতে পারে ট্রেন্ডি লুক তৈরির জন্য।
খোলা চুলে
শুধু বাঁধা চুলে ফুল গুঁজে নেওয়া যায়- এ ধারণা এখন বড্ড সেকেলে। যে কনেরা চুল ছেড়ে রাখতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ভিন্ন উপায়ে ফুল ব্যবহারের কৌশল। সবচেয়ে সহজ উপায়- ফুলে তৈরি টায়রা মাথায় চড়িয়ে নেওয়া। এ ছাড়া হাফ আপ হাফ ডাউন হেয়ারস্টাইলেও অনায়াসে জুড়ে নেওয়া যায় ফুল। এ ক্ষেত্রে ছোট ফুল যেমন- গোলাপ কলি, বেলি, ডেইজি, জিপসি ইত্যাদি বেশি জুতসই। তবে খোলা থাকলেও চুল যেন ঢেউ খেলানো আর টেক্সচারযুক্ত হয়, সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন। নতুবা খোলা চুলে ফুল গোঁজার কাজ বেশ কঠিন হবে। ভালো দেখাবে না।

 জাহেরা শিরীন
মডেল: অন্তরা ও ওশিন
ওয়্যারড্রোব: রিলা’স
জুয়েলারি: স্পার্কেল
ফ্লোরাল জুয়েলারি: ফ্লাওয়ার ব্লুমস্
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top