skip to Main Content

সাজসারাই I ভাঁজ ভাবনা?

চাই এমন মেকআপ, যাতে গলার একটি ভাঁজও চোখে না পড়ে। সে জন্য নজর দিতে হবে উপকরণে। প্রয়োগের কৌশলও জানা দরকার

মুখত্বকের চেয়েও দ্রুত বয়সের রেখা ফুটে ওঠে গলায়। কারণ, তুলনামূলকভাবে পাতলা এই অংশের ত্বক। যদি যত্নের জরিপ করা হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শরীরের এই অংশ অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। ফলে বলিরেখার প্রকোপ বাড়ে। বয়সের তুলনায় বেশি বয়স্ক দেখায়। তাই এই অংশের নিয়মিত দেখভাল প্রয়োজন। নজর রাখতে হবে মেকআপ প্রডাক্টের দিকে। ত্বকচর্চার সঠিক কৌশল জানতে হবে। মেকআপ ব্রাশের টানে একটু এদিক-ওদিক হলে গলা আরও বয়স্ক দেখাতে পারে।
মেকআপের শুরুতে ময়শ্চারাইজেশন খুব জরুরি। সে ক্ষেত্রে ত্বকের উপযোগী উপকরণ বেছে নিলেই চলবে। আলতো হাতে মেখে নিতে হবে গলায়। তারপর সঠিক উপায়ে ম্যাসাজ করা দরকার। সার্কুলার বা টপ টু বটম মোশনে করা যাবে না। ম্যাসাজে হাতের তালু দিয়ে গলার নিচ থেকে ওপরের দিকে উঠতে হবে, ভার্টিক্যাল মুভমেন্টে। এই ময়শ্চারাইজেশনের ফলে ত্বক পরিপুষ্ট হয়ে উঠবে, বলিরেখা খানিকটা আড়াল হতে শুরু করবে।
প্রাইমারও প্রয়োজন গলায়। সিলিকন বেসড হলে সবচেয়ে ভালো। এটা মেকআপকে দীর্ঘ সময় টিকিয়ে রাখে। গলার বলিরেখাগুলো ভরাট করে মসৃণ সারফেস তৈরি হয়, ফাউন্ডেশন মাখার জন্য। এ ছাড়া পাউডার দিয়ে গলার মেকআপ সেট করার পর তা যেন ভাঁজে ভাঁজে জমতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করে প্রাইমার। হাত দিয়েই এটি সবচেয়ে ভালো মাখা যায়। চাইলে ছোট ব্রাশও ব্যবহৃত হতে পারে। তবে স্পঞ্জ বা বিউটি ব্লেন্ডার একেবারেই নয়। কারণ, এগুলো প্রাইমারের পুরোটাই শুষে নেয়। গলায় ভালোভাবে মেখে নিতে হবে, বিশেষ করে ভাঁজ বা বলিরেখাযুক্ত জায়গায়। মাখার পর কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয় ফাউন্ডেশন দেওয়ার জন্য।
গলায় বলিরেখা দেখা দিচ্ছে বলে বেশি করে ফাউন্ডেশন মাখতে হবে, তা নয়। অনেক ঘন করেও দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এতে মেকআপ গলার ভাঁজে বসে যেতে শুরু করবে। দৃষ্টিকটু দেখাবে। তাই হালকা বা মিডিয়াম কাভারেজ দেওয়া ফাউন্ডেশনই গলার ত্বকে বেশি উপযোগী। ভিজিয়ে চিপে নেওয়া স্পঞ্জ দিয়ে মেখে নিতে হবে, নিখুঁত কাভারেজের জন্য। ফাউন্ডেশন বাদও দেওয়া যায়। বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে বিবি ক্রিম, টিন্টেড ময়শ্চারাইজার অথবা এয়ারব্রাশ মেকআপ। এগুলো বলিরেখা বা সূক্ষ্ম রেখায় জমে যায় না।
রিংকেলড নেক বা বলিরেখা যুক্ত গলায় কনটুরিংটা একটু আলাদা। বলিরেখাযুক্ত জায়গাগুলোকে আড়াল করে সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলাই এর মূল উদ্দেশ্য। প্রথমে গাঢ় কনটুর কালার দিয়ে নিতে হবে চোয়ালের দুপাশের আউটার কর্নার থেকে গলার নিচ অব্দি। সরলরেখায়। চিবুকের চারপাশজুড়েও দিয়ে হবে এটি। তবে তা হতে হয় গাঢ় থেকে একটু হালকা, উষ্ণ টোনের। দ্বিতীয় ধাপে, গাঢ় কনটুর কালার দিয়ে গলার আউটার পার্টে মেখে নিতে হয়; কারণ, এই অংশের বলিরেখা বেশি চোখে পড়ে। তৃতীয় ধাপে, হাইলাইটার কালার ব্যবহার করতে হবে গলার মাঝ বরাবর। ওপর থেকে নিচ অব্দি। এতে বলিরেখা আড়ালে চলে যাবে। লম্বা দেখাবে গলা। তারপর সব কটি কালার আলতো হাতে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এই কৌশলে নিখুঁত ত্বকের গলার ইলিউশন তৈরি হয়।
কনটুরিং সেরে একটা বড় পাউডার ব্রাশ শিমারি হাইলাইটারে ডুবিয়ে গলার মাঝবরাবর বোলাতে হবে, আপ অ্যান্ড ডাউন স্ট্রোকে। হাইলাইটার হতে হয় ত্বকের রঙের সঙ্গে মানিয়ে। যেমন অলিভ স্কিন টোনের সঙ্গে মানাবে ওয়ার্ম হাইলাইটার। তারপর পাউডার দিয়ে সেট করা যেতে পারে গলার মেকআপ। তবে বিউটিশিয়ানরা বলিরেখাযুক্ত গলায় সেটা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ, এতে মেকআপ জমে যাওয়ার শঙ্কা। পাউডার ব্যবহার করতে চাইলে মাইক্রো পার্টিকল যুক্ত মিনারেল পাউডার জুতসই অপশন। এ ছাড়া মেকআপের বিশেষ কিছু কৌশলে গলার বলিরেখা থেকে নজর সরানো সম্ভব। যেমন যাদের নেক রিংকেলের সমস্যা আছে, চেষ্টা করতে হবে লুকে হাই ইমপ্যাক্ট আই মেকআপ ক্রিয়েশনের। নতুন সব শেডের আইশ্যাডো নিয়ে দেখা যেতে পারে। আইলাইনারের টানটাও হোক বোল্ড। সঙ্গে দুই তিন কোটের মাসকারা। ব্যস! আইল্যাশ পাতলা হলে ফলস আইল্যাশ লাগিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এতে ইনস্ট্যান্ট ভলিউম দেবে, চোখটাও বড় দেখাবে। ফলে গলা থেকে দৃষ্টি সরে আকর্ষিত হবে চেহারায়। ব্রাইট, বোল্ড রঙা লিপস্টিকের বদলে ব্যবহার করা চাই নিউট্রাল অথবা ন্যাচারাল রঙের লিপস্টিক ও গ্লস। এতে চেহারার নিচের অংশে আর গলায় চোখ আটকে যাবে না। নেক রিংকেলও চোখ এড়িয়ে যাবে।

 জাহেরা শিরীন
মডেল: আন্নি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top