skip to Main Content

ফরহিম I আলটিমেট বিউটি বেসিক

সহজে সম্পন্ন এমন বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিনের প্রতি আগ্রহের পাল্লা ভারী হচ্ছে। অল্প সময়ে সহজ সমাধানে স্বস্তি। আবার বিউটি বেসিক এড়িয়ে সৌন্দর্য ধরে রাখা মুশকিল। কেননা, এখন রূপের ধার নয়, সজীবতাতেই আগ্রহ বাড়ছে তরুণদের

স্কিন কেয়ার
সৌন্দর্যচর্চার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্কিন কেয়ার। বেসিক কিছু টিপস ফলো করলে ত্বক সমস্যার লাগাম টানা সম্ভব। ঘরের বাইরে বেশি সময় কাটলে ত্বকে ময়লা, ধুলাবালি ও ঘাম জমে। বাসায় ফিরেই চটজলদি একটি ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে পারলে দূর হবে ডাস্ট। তারপরে ময়শ্চারাইজার অ্যাপ্লাই। ত্বকে কোমলতা আর মসৃণতা এনে দিতে।
অনেকের ত্বকে ডার্ক সার্কেল, ব্রণ দেখা যায়। শুরুতে গা করেন না, পরে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। স্কিন কেয়ারের সঙ্গে তাই যোগ করতে পারেন সেরাম। ডার্ক সার্কেলের প্রবলেম থাকলে বেছে নিতে পারেন ক্যাফেইনযুক্ত সেরাম। আর স্কিনে পোরস ও পিম্পলের সমস্যা থাকলে ময়শ্চারাইজারের পরেই কয়েক ফোঁটা করে ব্যবহার করতে পারেন নিয়াসিনামাইড ও ভিটামিন সি সেরাম। পাশাপাশি, দিনের বেলা সানস্ক্রিনের ব্যবহার মাস্ট! এ সময় ঘরে থাকুন বা বাইরে যান, সানস্ক্রিন ব্যবহারে নিয়মিত হলে সুফল পাওয়া যাবে দীর্ঘ সময় ধরে।
অ্যাপ্লাই-রিঅ্যাপ্লাই
বাইরে থাকার পর আমাদের স্কিনের ময়শ্চারাইজার বা সানস্ক্রিনের উপযোগিতা অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই অন্তত চার ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করা জরুরি। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ফেস থেকে আগে ব্যবহার করা সানস্ক্রিন তুলে নিতে হবে সম্পূর্ণভাবে। এ জন্য ব্যবহার করতে পারেন ক্লিনজার অয়েল।
শেভিং-ট্রিমিং
ক্লিন শেভ অথবা বিয়ারডেড, যা-ই হোক আপনার সিদ্ধান্ত, উভয় ক্ষেত্রে মনোযোগ রাখতে পারেন পারিপাট্যে। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিয়ারড অয়েল রয়েছে। ফেস হেয়ারে এই অয়েল ব্যবহারে কার্যকারিতা ভালো বলে জানা যায়। হেয়ার ট্রিমিংয়ে নিয়মিত হতে পারেন। মাসে একবার যেতে পারেন স্যালনে। গোছানো চুল ও দাড়িতে চেহারার পরিপাটি ভাব চলে আসবে সহজে। নিউইয়র্ক সেলিব্রিটি গ্রুমার হোয়াইটের মতে, ফেশিয়াল হেয়ার ছোট হলে ফেশিয়াল হেয়ার ক্রিম, আর যাদের দাড়ি আছে তাদের জন্য বিয়ারড অয়েল সবচেয়ে কার্যকর। নিউইয়র্কের ত্বক বিশেষজ্ঞ শন গ্যারেট বলেছেন, ছেলেদের বিউটি কনসার্নের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রেজার বার্ন। ত্বকে মরা চামড়া থাকলে, তার ওপরে শেভ করলে স্কিনে র‌্যাশ হওয়ার শঙ্কা থাকে। এ ছাড়া দাড়ির গোড়ায় মরা চামড়া আটকে থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে দাড়ি উঠে আসারও প্রবণতা থাকে। গ্যারেট আরও বলেছেন, বিএইচএ (স্যালিসাইলিক অ্যাসিড) এবং এএইচএ (গ্লাইকোলিক, ল্যাকটিক এবং ম্যান্ডেলিক অ্যাসিড) স্কিনের ডেড সেল এক্সফোলিয়েট করতে দারুণ কাজের। তাই চেষ্টা থাকুক শেভিংয়ের আগে এই উপাদানগুলো উপস্থিত আছে এমন কোনো এক্সফোলিয়েশন ব্যবহার করার।
গ্যারেটের মতে, ছেলেরা যে শেভিং ফোম এবং শেভিং শেষে আফটার শেভ ব্যবহার করেন, এতে হার্স কেমিক্যাল উপস্থিত থাকতে পারে। তাই প্রতিবার শেভিং শেষে অবশ্যই স্কিনে সেরাম ব্যবহার নিশ্চিত করা চাই। তালিকায় রাখতে পারেন হায়ালুরনিক অ্যাসিডের উপস্থিতিসহ কোনো সেরাম। এই অ্যাসিড স্কিন ব্যারিয়ার রিপেয়ারে কাজে দেয়। এক্সফোলিয়েশন এবং শেভিংয়ের পরে স্কিন যখন অনেকটাই সেনসিটিভ হয়ে যায়, তখন হায়ালুরনিক অ্যাসিড স্কিনকে নমনীয় করে তোলে অনেকটা। এ ছাড়া যাদের স্কিনে ব্রণের সমস্যা আছে, তারা ব্যবহার করতে পারেন সালফারযুক্ত সেরাম। যেসব ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে স্কিনে ব্রণ হওয়ার শঙ্কা থাকে, সালফার ব্যবহার করলে সেগুলো থেকে রেহাই মেলে। স্কিনে ব্রেকআউটও মিলিয়ে যায় দ্রুত।
নিয়মে-ব্যায়ামে
নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে রাখবে একদম ফিট। অনেকে মনে করেন, ব্যায়াম শুধু ওজন কমানোর জন্য। অথচ তা নয়। ওজন কমানোর পাশাপাশি শরীর ফিট রাখতেও ভীষণ কাজে দেয় ব্যায়াম। এ ছাড়া তারুণ্য ধরে রাখতেও জুড়ি মেলা ভার এর। কিছুদিন রেগুলার ব্যায়াম করলে নিজের বডি ও চেহারায় দেখতে পাবেন পরিবর্তন। মনও থাকবে প্রফুল্ল।
হাইড্রেশন
ত্বকে হাইড্রেশনের অভাবে উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। শুষ্কতা বাড়ে। স্কিন হাইড্রেড রাখার এবং ন্যাচারাল গ্লো পাওয়ার জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা জরুরি। একই সঙ্গে আলকোহল ও ক্যাফেইন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণও প্রয়োজন। নিতে পারেন বিশেষজ্ঞ পরামর্শ।
পরিপূর্ণ ঘুম
সৌন্দর্যের অনেকটাই ঘুমনির্ভর। শুষ্কতা, মলিনতার কারণ হতে পারে প্রতিদিন ঠিকমতো ঘুম না হওয়া। অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন; অথচ ভার্সিটি, অফিস অথবা অন্যান্য কাজ থাকায় উঠে যেতে হয় বেশ সকালে। এতে প্রয়োজনীয় ঘুম না হওয়ায় স্কিনের ওপর বেশ প্রভাব পড়ে। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল হওয়ারও অন্যতম কারণ পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া। ডার্ক সার্কেলের জন্য বাজারে বিভিন্ন আই ক্রিম থাকলেও পরিপূর্ণ ঘুম না হলে কাজ হবে না কোনো কিছুতে।
গ্রুমিং টুলস
ছেলেদের শেভ ও ট্রিমিং যেহেতু একটি রেগুলার প্রসেস, তাই চেষ্টা করুন একটু দেখেশুনে ভালো মানের গ্রুমিং টুলস কেনার। অনেক সময় শেভিং রেজর একাধিকবার ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামিত হওয়ার শঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে রাখা চাই বাড়তি সতর্কতা। সবচেয়ে ভালো হয় ওয়ান টাইম রেজর। এতে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে কম। হেয়ার ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে ট্রিমিং টুলসগুলো চেষ্টা করবেন একটু ধারালো ও তীক্ষè দেখে বাছাই করতে। এতে কমফোর্টও মেলে এবং হেয়ার ট্রিমিং শেপও হয় বেশ সুন্দরভাবে।
প্রসাধনে সচেতনতা
স্কিনের জন্য সঠিক বিউটি প্রডাক্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ—দুই-ই জরুরি। আপনি কোন পণ্যগুলো চাচ্ছেন, তা আগে ঠিক করুন, তারপর স্কিন শেড মিলিয়ে নিন একদম সঠিকভাবে। তবে চেষ্টা করুন একটু টাইম দিয়ে ধাপে ধাপে প্রসেসটা সম্পন্ন করতে। সব সময় স্কিনের ওপর ট্রায়াল করে মেকআপ প্রডাক্ট কিনলে শেড মিসম্যাচ হওয়ার হার কমে। আপনার টোনের কাছাকাছি যে শেড আছে, চেষ্টা করুন সেটি বাছাই করতে। এতে পাবেন একটি নিখুঁত মেকআপ ফিনিশিং।

 সাদিয়া আফরিন আইভী
মডেল: নিহাফ
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top