skip to Main Content

তনুরাগ I অ্যাট হোম রিলাক্সেশন

বাসায় ফিরে গা এলিয়ে বিশ্রামের সময় একই সঙ্গে যদি সম্পন্ন হয় ত্বকের যত্নও, কেমন হয়?

অনেকে মনে করেন, ত্বক প্রাকৃতিকভাবে স্বাস্থ্যকর না হলে স্কিন টেক্সচার ইমপ্রুভ করা সম্ভব হয় না। এই ধারণা কিন্তু প্রমাণিত নয়; বরং ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক স্কিন কেয়ারের পাশাপাশি ত্বককে যদি প্রোপারলি রিলাক্সেশন দেওয়া হয়, কিছুদিনের মধ্যেই উপলব্ধি করতে পারবেন পরিবর্তন। ঘরে বসে ত্বকের যত্নের জন্য খুব বেশি কিছু করতে হবে না। প্রতিদিনের রুটিনে বরাদ্দ রাখতে পারেন অল্প কিছু সময়। সঙ্গে দৈনন্দিন অভ্যাসের তালিকায় স্কিনের রিলাক্সেশনের জন্য উপকারী দৈনন্দিন কিছু স্টেপ অ্যাড করলেই, ব্যস।
ত্বক যখন কোনো সমস্যায় ভোগে, আমরা সাধারণত কারণ খুঁজতে শুরু করি। বেশির ভাগ সময় দায়ী করি দূষণকে। এটি একটি কারণ অবশ্যই; তবে একমাত্র তো নয়ই, অনেক ক্ষেত্রে প্রধান কারণও নয়। ক্ষেত্রবিশেষে স্ট্রেস ও টেনশন থেকে হতে পারে এপিডারমিস। পিম্পল, স্কিনে ডালনেস, স্কিন এজিংসহ হতে পারে আরও নানান ধরনের প্রবলেম। অন্যদিকে, স্কিন রিলাক্সেশন প্রসেস স্কিনকে রিলাক্স করে; ব্লাড সার্কুলেশন করে ত্বরান্বিত। এতে স্কিনের লিমপ্যাথিক ড্রেইনেজ ভালো হয় এবং আমরা যেসব স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহার করি, তা স্কিনে কাজও করে ভালোভাবে। তবে স্কিন রিলাক্সেশনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ত্বকের ধরন বুঝে নেওয়া দরকার। সঙ্গে দেখে নিতে পারেন, স্কিন রিলাক্সেশনে ব্যবহৃত হয় এমন কোনো কিছু আপনার ত্বকের জন্য অ্যালার্জিটিক কি না।
প্রাত্যহিক ব্যস্ততায় অনেককেই দিনের বেশ কিছু সময় ঘরের বাইরে কাটাতে হয়। ঘরে ফেরার পর শরীরের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকও বেশ পরিশ্রান্ত থাকে। তাই বাসায় ফিরে চেষ্টা করুন আগে ফেসটা ক্লিন করে নিতে। ক্লিনজিংয়ের জন্য ত্বকের সঙ্গে মানানসই মৃদু কোনো ক্লিনজার বেছে নেওয়াই ভালো। ক্লিনজিংয়ের পরে হাইড্রেটিং টোনার ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ব্যবহার করা যায় সুন্দর মৃদু সুগন্ধিযুক্ত ফেস সেরাম; যাতে রয়েছে ক্যামোমাইল, ল্যাভেন্ডার, রোজ কিংবা সুন্দর কোনো মাইল্ড রিফ্রেশিং ফ্লেভার। সুগন্ধে সুন্দর হবে মন। এরপর লাইট কোনো ময়শ্চারাইজার ব্যবহারেই স্কিন লেয়ারগুলো লক হয়ে যাবে। ফলে সুস্বাস্থ্য ও উজ্জ্বলতা—দুই-ই পাবে ত্বক। দিন শেষে ঘরে ফেরার ক্লান্তি কমে আসবে ধীরে ধীরে। আয়নায় চোখ রাখলে পরিবর্তনে পজিটিভ এনার্জি পাবে মন।
ফেস রিলাক্সেশনের জন্য নিয়মিত ফেশিয়াল ম্যাসাজ উপকারী। এতে স্কিনে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে, হরমোনও বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। ম্যাসাজ শুরু করার জন্য প্রথমে ফেসে একটু বেশি পরিমাণে ফেস অয়েল প্রয়োগ করা ভালো। ড্রাই স্কিনে ফেস ম্যাসাজ করলে ত্বকে র‌্যাশ হতে পারে; তাতে ত্বকের রুক্ষতা আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন প্রাকৃতিক সুগন্ধিযুক্ত ফেস অয়েল। এতে রিফ্রেশিং লাগবে অনেকটা। তবে খেয়াল রাখা চাই, ফেস অয়েল যেন একটু লাইটওয়েট হয়। কেননা, ফেস অয়েল বেশি ঘন হলে স্কিনে চিটচিটে ভাব চলে আসবে, যা অস্বস্তিকর মনে হতে পারে। আঙুলের সাহায্যে খুব সহজ কিছু স্টেপ ফলো করে ফেস ম্যাসাজ করা সম্ভব। এ ছাড়া ব্যবহার করতে পারেন জেড রোলার অথবা গুয়াশা। স্কিনের জন্য বেশ উপকারী এই ফেশিয়াল ম্যাসাজ টুলগুলো। নিয়ম মেনে স্কিন বিউটিফিকেশন টুলস ব্যবহার করা শ্রেয়।
দিন শেষে লং রিলাক্সড শাওয়ার বডিকে যেমন রিফ্রেশ করে, তেমনি স্কিনও করে রিফ্রেশড। একটা প্রপার রিলাক্সড শাওয়ার নেওয়ার আগে শাওয়ার এনভায়রনমেন্টকে করে নিতে পারেন একটু ডেকোরেটেড। শাওয়ারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন কুসুম গরম পানি। এতে শরীরের লোমকূপগুলো ওপেন হয়ে যাবে এবং স্কিন ক্লিন হবে গভীরভাবে। কুসুম গরম পানির সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন কয়েক ফোঁটা সুগন্ধিযুক্ত এসেনশিয়াল অয়েল। স্কিন রিলাক্সেশনে বেশ কাজে দেবে। গোসলের সময় চেষ্টা করতে পারেন বাথ সল্ট ব্যবহারের। এটি স্কিনে বেশ ডিপলি এক্সফোলিয়েট করবে। মৃতকোষ রিমুভ করার পাশাপাশি ত্বক বেশ কোমল করে তুলবে। শাওয়ারের সময় ছেড়ে রাখতে পারেন রিলাক্সিং কোনো মিউজিক। একটি প্রপার প্যাম্পারিং শাওয়ারের পরে দেখবেন আপনার মাইন্ড, বডি এবং স্কিন—সবকিছুই বেশ রিলাক্সিং লাগছে।
বিভিন্ন স্ট্রেস রিলিফ অ্যাকটিভিটিস স্কিন রিলাক্সেসিংয়ের জন্য দারুণ কাজে দেয়। চেষ্টা করতে পারেন এমন সব অ্যাকটিভিটি করার, যা আপনার বডি থেকে প্রেশার রিলিজ করতে, মাথা থেকে টেনশন দূরীকরণে সাহায্য করবে। শরীর ও মন যখন স্ট্রেস ফ্রি থাকে, তখন স্বাভাবিকভাবেই আমাদের স্কিন বেশ রিলাক্সড হয়ে যায়। করতে পারেন ইয়োগা, মেডিটেশনের পাশাপাশি ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ। এই অ্যাকটিভিটিগুলো স্ট্রেস রিলিফিংয়ের জন্য একেকটি দারুণ মেথড। সঙ্গে স্কিনের অক্সিজেন ফ্লো বাড়িয়ে দেয়। এতে স্কিন বেশ রিলাক্স হওয়ার পাশাপাশি স্কিনের ভেতর থেকে সুন্দর একটি গ্লো আসার সম্ভাবনা বাড়ে।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম সুস্বাস্থ্যের জন্য যতটা উপকারী, তেমনি স্কিন ইমপ্রুভমেন্টের জন্যও। আমরা যখন গভীর ঘুমে থাকি, শরীরের ত্বককোষগুলো নিজে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে সারিয়ে তোলে। পাশাপাশি, ত্বকে অক্সিজেন ফ্লো বাড়িয়ে দেয়। প্রতিদিন নিয়মিত সঠিক রুটিন অনুযায়ী সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম স্কিনকে প্রপারলি রিলাক্স এবং নতুন করে রিজেনারেট করতে সাহায্য করে। তবে বিছানায় যাওয়ার পর বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিজের কাছ থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখা ভালো। এতে টাইমিংটা ঠিক থাকবে; অন্য কিছু মাথায় আসার ঝুঁকিও কমবে। বেডরুমের আলো কমিয়ে দিয়ে রাখতে পারেন মৃদু ঠান্ডা কোনো আলো; তবে তা যেন সরাসরি চোখে না লাগে। এ ছাড়া ঘুমাতে যাওয়ার আগে করতে পারেন হালকা মেডিটেশন। চেষ্টা করতে পারেন একটি রিলাক্সিং নাইট টাইম রুটিন করার। রাতের পরিপূর্ণ ঘুমে মনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকও পাবে বিশ্রাম। ক্লান্তি ত্বককে বিমর্ষ করবে না; বরং সকালের মিষ্টি রোদে ত্বক হাসবে।

 সাদিয়া আফরিন আইভী
মডেল: তৃণা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top