skip to Main Content

ফিচার I বিরলই বটে

সং সাজার সরঞ্জাম, নাকি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে এসব পণ্যের যে ডেমো ভাইরাল হয়েছে, সেটা সত্য? দেখতে অদ্ভুত হলেও ফল কিন্তু চমৎকার

সময়টা ২০১৭। সৌন্দর্যবিশ্বে মোটামুটি ঝড় তুলে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান মেকআপ ব্র্যান্ড লিপস্টিক কুইন। প্রথমবারের মতো কালো রঙের ব্লাশ বাজারে এনে। হ্যাঁ, সত্যি! কালো রঙের ব্লাশ। নাম ব্ল্যাক লেস র‌্যাবিট ক্রিম ব্লাশ। দারুণ সাড়া তৈরি হয় একে ঘিরে। পাঁচ বছর পর আবার রমরমা কালো ব্লাশের বাজার। কারণ, ইন্টারনেট। বিশেষ করে টিকটক।
গেল মে মাসে ক্রিয়েটর @youngcouture-এর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যাতে কালো রঙের ব্লাশন মাখতে দেখা যায় তাকে। তবে ব্ল্যাক লেস নয়, এর ডিউপ ওয়েট অ্যান্ড ওয়াইল্ড ফ্যান্টাসি মেকারস কালার আইকন ব্লাশ ব্যবহার করতে দেখা যায় এ ক্রিয়েটরকে। ফলাফল, সব জায়গায় ইতোমধ্যে সোল্ড আউট পণ্যটি। এর কিছুদিন পরেই অন্যান্য জনপ্রিয় ক্রিয়েটররাও কৌতূহলী ওয়ে ওঠেন। তাদেরকেও দেখা যায় কালো রঙের ব্লাশ নিয়ে ভিডিও বানাতে। মেলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কারও খুব পছন্দ হয়, তো কারও কাছে অনুভূত হয় তেলতেলে। একটু বেশি পিগমেন্টেড—এই অভিযোগ মেলে সবচেয়ে বেশি। অনেক রিভিউ আসে ত্বকে মাটি মাখার মতো অনুভূতি হয় বলে। এমনকি আঘাতের চিহ্ন কিংবা রোদে পোড়া দাগের মতোও মনে হয় অনেক মেকআপপ্রেমীর কাছে। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, কালো দেখালেও ত্বকের সংস্পর্শে এলে এর ভোল পাল্টে যায়। পিএইচের সঙ্গে অভিযোজিত হয়ে মানানসই শেড তৈরি করে। যেমন ফর্সা হলে কালো এই ব্লাশ ব্যবহারে রোজি পিঙ্ক ফ্লাশ দেবে ত্বক। আর যাদের ত্বকের রং তুলনামূলকভাবে চাপা, তাদের চেহারায় দেখা যাবে গাঢ় বেরি শেড। পুরোটাই বিজ্ঞানের কামাল।
তবে কালো ব্লাশ লিপস্টিক কুইনের প্রথম এক্সপেরিমেন্ট নয়। এর এক বছর আগে সবুজ রঙা ব্লাশন দিয়ে ব্র্যান্ডটি চমকের সৃষ্টি করে। নাম ফ্রগ প্রিন্স ক্রিম ব্লাশ। পিএইচ রিঅ্যাকটিং, কালার চেঞ্জিং ফর্মুলায় তৈরি। যার ব্যবহারে চেহারা হাল্কের মতো সবুজ দেখাবে না, বরং স্বাভাবিক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল আভা সৃষ্টি হবে। ত্বক রঙের সঙ্গে মানিয়ে সবচেয়ে সুন্দর রোজি পিঙ্ক শেড ফুটে উঠবে চেহারায়। তালিকায় থাকবে সাদা রঙা ব্লাশের নামও। চেহারার দীপ্তি বাড়াবে চটজলদি। কাজ করবে সফট, বিল্ডেবল হাইলাইটার হিসেবেও।
আর এ বছরের শুরু থেকেই সৌন্দর্যসচেতনেরা ছিলেন পার্পল শেডের ব্লাশের দখলে। লাইলাক থেকে অর্কিড কিংবা গ্রেপ থেকে প্লাম—আন্ডারটোন ভেদে মানানসই অপশন বেছে নেওয়ার সুযোগ মিলেছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, খানিকটা চাপা ও কালো রঙের ত্বকে পার্পল ব্লাশ সবচেয়ে ভালো মানায়। সঠিক শেড বাছাইয়ে পাল্টে যেতে পারে পুরো লুক। ত্বকরং হালকা হলে লাইলাক আর প্যাস্টেল পার্পলটাই ভালো মানাবে। অলিভ ও গোল্ড আন্ডারটোনের মিডিয়াম স্কিনে ওয়ার্ম পিঙ্ক আন্ডারটোনের পার্পল সবচেয়ে সুন্দর দেখাবে। এ ছাড়া কালো ত্বকের জন্য বেছে নিতে হবে একদম ট্রু পার্পল ব্লাশ। ব্লাশগুলো মিলবে ক্রিম, পাউডার আর লিকুইড ফর্মুলায়। ব্যবহারের সময় ব্রাশ অথবা আঙুল—চলবে দুটোই।
শুধু কি ব্লাশ, ফাউন্ডেশনের রঙের রায়ট দেখে আক্কেল গুড়–ম হওয়ার দশা। প্রস্তুতকারক সানসেট মেকআপ। দশটি আনকোরা রঙের রঙিন ফাউন্ডেশন দেখে ইতোমধ্যে সৌন্দর্যবিশ্ব নড়েচড়ে বসেছে। হাই কাভারেজ দেওয়া ফাউন্ডেশনগুলোর ব্যবহারে ত্বক মসৃণ ও কোমল দেখায়। ত্বকের টেক্সচার আর লোমকূপ ঢেকে দেওয়ার পাশাপাশি এর হাইড্রেটিং ফর্মুলা চেহারায় সজীবতা এনে দেয়। লাইটওয়েট হওয়ায় ত্বকের জন্য আরামদায়ক। বেশি শুষ্ক কিংবা কেকি—কোনোটাই দেখায় না এই ফাউন্ডেশনগুলো ব্যবহারে। তেলতেলে কিংবা ভারী না হওয়ায় ব্যবহার সহজ। লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, পার্পল, গোলাপি, ধূসর, কালো আর সাদা রঙে মিলবে এগুলো। কোনো ফাউন্ডেশনের শেড হালকা করার জন্য সাদা রং আর গাঢ় করার জন্য কালো রং ব্যবহার করলেই চলবে। ট্রান্সলুসেন্ট সেটিং পাউডার দিয়ে সেট করে নিতে হবে। ট্রান্সফারপ্রুফ, ম্যাট লুকের জন্য। ফেস পেইন্টের বদলে এটি আরও ভালো অপশন। তবে ব্যবহারের আগে ধাপগুলো জেনে নেওয়া জরুরি। প্রথমে হাতে মাখিয়ে সোয়াচ টেস্ট সেরে নিলে ভালো। পরিষ্কার, শুষ্ক ত্বকে ব্যবহার করতে হয় এগুলো। ময়শ্চারাইজার আর সানস্ক্রিন মেখে নিতে হবে। এর ওপর অ্যাপ্লাই করতে হবে ফাউন্ডেশন। কোনো নির্দিষ্ট পারফরম্যান্স অথবা কমিক-কনে প্রাণিত বিশেষ কোনো লুক তৈরিতে ত্বকবান্ধব এই ফাউন্ডেশনগুলো দারুণ। ফলে এর চাহিদা বাড়ছে দিনকে দিন। মেকআপ ইনফ্লুয়েন্সারদের ফিডেই তার প্রমাণ।
আর লিপস্টিকে অসচরাচর রঙের ব্যবহার তো বছর পুরোনো। তবে এখন চলছে কালো, নীল আর ধূসরের রমরমা। অনেকের কাছে অ্যান্টি-বিউটি হলেও ইন্টারনেটজুড়ে ট্রেন্ডিং ঠোঁট রাঙানোর বোল্ড অ্যান্ড বাউন্ডারি ব্রেকিং লিপ কালারগুলো।

 জাহেরা শিরীন
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top