skip to Main Content

তনুরাগ I উৎসে আয়ুর্বেদ

প্রকৃতিপ্রাণিত প্রতিটি প্রক্রিয়া। কনের সহজাত সৌন্দর্যকে শাণিয়ে নিয়ে দেহত্বকে দীর্ঘস্থায়ী প্রাণসঞ্চারে

বিয়ের তারিখটা পাকাপোক্ত হওয়ার পর নানা ধরনের অনুভূতি একই সঙ্গে হানা দেয় মনে। আনন্দের অনুভূতির মাঝেই যেন জেঁকে বসে একরাশ শঙ্কা—বিয়ের আয়োজনের প্রতিটি মুহূর্ত ঠিকঠাক হবে তো? পোশাক থেকে শুরু করে সাজ, গয়না ও আনুষঙ্গিক সবকিছুই হওয়া চাই নিখুঁত। তবে এত কিছুর মধ্যেও ত্বক ও শরীরের প্রয়োজন বিশেষ মনোযোগের; সেটা ভুলে গেলে চলবে না। না হলে নানা ধরনের টেনশনে পর্যুদস্ত ক্লান্ত ত্বক নিয়েই হাজির হতে হবে বিগ ডের আসরে।
বিয়ের দিন-তারিখ যতই এগোতে থাকে, কনের মানসিক চাপ আর ক্লান্তি যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, উদ্বেগ আর ক্লান্তি ছাপ ফেলতে শুরু করে শরীর ও মনে। তবে বিয়ের আয়োজনের মতো হবু কনের যত্নেও কিন্তু রাখা যাবে না কোনো ত্রুটি। জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিনটিতে যেন ত্বকের নিজস্ব উজ্জ্বলতা মেকআপ ছাপিয়েও ঝলমলিয়ে ওঠে, কয়েক মাস আগে থেকে তাই শুরু করতে হবে নিজের যত্ন নেওয়া। তারই অংশ হিসেবে কিছু আয়ুর্বেদিক প্রি-ওয়েডিং ট্রিটমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন কনে। ত্বকের ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করবে এসব থেরাপি। ভেষজ যত্নে কনের শরীর ও মনে আসবে প্রশান্তি।
শিরোধারায় শিথিলতা
প্রাচীন এই থেরাপিতে কপালে আলতো করে ঢেলে দেওয়া হয় তেল। নির্দিষ্ট সময় ধরে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে। ক্রমাগত ও ছন্দময়ভাবে তেলকে মাথার ত্বকে ও চুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। মাথার ওপর অবিরাম প্রবাহের কারণে শিরোধারা মনকে শান্ত ও শিথিল করে। এই পদ্ধতিতে মাথার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো উদ্দীপ্ত হয়, যা রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। এটি স্ট্রেস, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা থেকে স্বস্তি দেয়। এরপর আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহার করে শরীর মাসাজ করা হয়। এতে মন থেকে নানা ধরনের নেতিবাচক চিন্তা ও চাপ দূর হয়।
হারবাল স্টিম বাথে ডিটক্সিফায়িং
প্রাচীনকাল থেকেই সৌন্দর্যচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এ কৌশলের। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে ঘাম। একইভাবে হারবাল স্টিম বাথ ডিটক্সিফাইং করে শরীর। এই ট্রিটমেন্টে ভেষজ, ঔষধি তেলের বাষ্পসহ একটি কাঠের চেম্বারে শুইয়ে দেওয়া হয়। স্টিম নেওয়ার ফলে শরীর ঘেমে যায়, যে কারণে ত্বকের ভেতরের টক্সিন বের হয়ে আসে। এতে করে ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এবং বাড়ে শরীরের নমনীয়তা।
উজ্জ্বল ত্বকের জন্য লেপাম
ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান লুকিয়ে এই পদ্ধতিতে। এই আয়ুর্বেদিক থেরাপিতে প্রয়োজনীয় ভেষজ দিয়ে তৈরি একটি পেস্ট প্রয়োগ করা হয় গোটা শরীরে। ত্বকের জন্য অতুলনীয় দুই উপাদান হলুদ ও চন্দন থাকে এই পেস্টে। লেপাম ত্বকের স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে। ত্বককে মসৃণ রাখতে এবং রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এই থেরাপি। পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবে শরীরের বিশুদ্ধকরণ এবং নিরাময় ক্ষমতা সক্রিয় করে তোলে।
অভঙ্গ মাসাজে স্ট্রেস রিলিফ
অভঙ্গ হলো গরম তেল দিয়ে করা একধরনের বিশেষ মাসাজ। এই আয়ুর্বেদিক ট্রিটমেন্টে মাথার ত্বক থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পুরো শরীরে মাসাজ করা হয় তেল। পুদিনা, লবঙ্গের পাশাপাশি আরও কিছু ভেষজ মিশ্রিত সুগন্ধযুক্ত তেল দিয়ে করা ছন্দময় এই মাসাজ। এটি উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমায়। নানা ধরনের টেনশন ও স্ট্রেসের কারণে যারা সাধারণত ঘুমের অভাবে ভোগেন, এই থেরাপি প্রশান্তির ঘুম আনতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ত্বকে রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে হাইপারপিগমেন্টেশন কমাতেও সাহায্য করে অভঙ্গ মাসাজ।
হারবাল কমপ্রেসে ক্লান্তি দূর
শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা হয় হট কমপ্রেস। নানা ধরনের শুকনো ভেষজ উপাদান একটি থলেতে নিয়ে বিশেষ স্টিমারে গরম করা হয়। তারপর উষ্ণ হার্ব কমপ্রেস করা হয় শরীরের বিভিন্ন প্রেশার পয়েন্টে। এই থেরাপি দূর করে ত্বকের ক্লান্তি ও ব্যথা; শিথিল করে পেশি। এ ছাড়া ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনতেও এর জুড়ি নেই।

 নওরিন আক্তার
মডেল: অ্যানি
মেকওভার: পারসোনা
জুয়েলারি: উযমাহ্ ও রঙবতী
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top