skip to Main Content

ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন I হাই-এন্ড হটস্পট

পড়শি দেশে পর্দা উঠেছে আলটিমেট লাক্সারি রিটেইল ডেস্টিনেশনের। সাক্ষী থাকলেন মুম্বাইবাসী

বিশ্বনন্দিত ৬৬টি আইকনিক ব্র্যান্ড। এখন মিলবে একই ছাদের নিচে। প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে। না, কোনো রূপকথার জাদুনগরীর কথা হচ্ছে না। কারণ, স্বপ্ন এরই মধ্যে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। দুয়ার খুলেছে জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজার। ভারতের অন্যতম ধনকুবের মুকেশ আম্বানির ড্রিম প্রজেক্ট এই প্লাজা। দ্য লার্জেস্ট লাক্সারি মল ইন ইন্ডিয়া। গেল নভেম্বরে এর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে দেশটির লাক্সারি ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে। মুম্বাইয়ের প্রাণকেন্দ্র বান্দ্রার কুরলা কমপ্লেক্সে এর অবস্থান। হাই-এন্ড ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে কোনগুলোর দেখা মিলবে এ মলে? প্রশ্নটা আসলে হওয়া উচিত ছিল— কোনটা নেই! লুই ভিতোঁ, গুচি, বারবেরি, অ্যাডিডাস, আরমানি, ভ্যালেন্তিনো, ভারসাচি, দিওর, ব্যালেন্সিয়াগা, বটেগা ভেনেটা, কেলভিন ক্লেইন, কোচ, ডিজেল, এম্পোরিও আরমানি, কারটিয়ার, বুলগারি, রোলেক্স, জিমি চুসহ লিস্টটা অনেক বড়। এগুলোর মধ্যে ভ্যালেন্তিনো, ভারসাচি, টিফানি অ্যান্ড কো, বুলগারি আর পটারি বার্নের ভারত সফর এই প্রথম। আর প্রথম স্টোরেই বাজিমাত। কারণ, জায়গা মিলেছে জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজায়।

ভারতে দিওরের প্রথম মেনজ ওয়্যার স্টোরও তাদের দুয়ার খুলেছে এই লাক্সারি শপিং স্পেসে। আর এখানে লুই ভিতোঁর নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্টোরটা হচ্ছে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ বর্গফুটের, যা ভারতের সবচেয়ে বড় ইন্টারন্যাশনাল লাক্সারি আউটলেট। যেখানে মিলবে ব্র্যান্ডটির রেডি টু ওয়্যার এবং ফাইন জুয়েলারি কালেকশন। এ ছাড়া থাকবে লেদার প্রোডাক্ট, জুতা, অনুষঙ্গ ও পারফিউমের সংগ্রহ। জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজায় জুয়েলারি ব্র্যান্ড কারটিয়ারের স্টোরটি ভারতে তাদের দ্বিতীয় প্রদর্শনস্থান। প্রথম শোরুমটি ডিএলএফ এম্পোরিও মলে, নয়াদিল্লিতে। এই প্লাজায় দিওরের দখল ৩ হাজার ৩২০ বর্গফুট জায়গাজুড়ে। ভারতে এটি ব্র্যান্ডের দ্বিতীয় ফ্ল্যাগশিপ স্টোর। এই লাক্সারি শপিং প্লেসে গুচির ফ্ল্যাগশিপ স্টোরে মেনজ, ওমেনজ ওয়্যার— দুটোই থাকবে ক্রেতাদের জন্য। থাকবে রেডি টু ওয়্যার, হ্যান্ডব্যাগ, ফুটওয়্যার, জুয়েলারি আর অ্যাকসেসরিজের বিপুল সংগ্রহ। সুখবর আরও আছে। ব্র্যান্ডটির স্টোরে মিলবে পুরো আলাদা একটি সেকশন, ডেকর আইটেম দিয়ে সাজানো। ভারতে জিমি চুর তিন নম্বর স্টোরটির দেখা মিলবে এই প্লাজায়। মিলবে হিট সব ক্যাপসুল কালেকশন। গ্লিটার পাম্প, ওয়েজ, স্যান্ডেল, সিকুইন এমবেলিশড, ক্লাচ ব্যাগ—থাকছে সবই। রিমোওয়ার শোরুমে পাওয়া যাবে লাক্সারি ট্রাভেল অ্যাকসেসরিজ। তালিকায় আছে লাগেজ, ট্যাগ, অর্গানাইজার, স্যুটকেস আর লেদার হ্যান্ডব্যাগ।
শুধু কি আন্তর্জাতিক! এখানে মিলবে তাদের দেশের ডিজাইনার ওয়্যারও। মনীশ মালহোত্রা, আবু জানি-সান্দিপ খোসলা, রাহুল মিশ্র, ফাল্গুনি অ্যান্ড শেন পিকক, রিতু কুমারদের মতো প্রথিতযশা ভারতীয় ডিজাইনারদের এক্সক্লুসিভ সব কালেকশন থাকবে জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজায়। আর কী চাই! আরেহ সবুর! আরও আছে। রিটেইল এক্সপেরিয়েন্সকে ওয়ার্ল্ড ক্লাস করে তোলার জন্য বাড়তি বন্দোবস্ত রয়েছে এ প্লাজায়। আছে বিশেষায়িত কাস্টমার সার্ভিস, পার্সোনাল শপার্সসমেত। আরও থাকছেন একজন করে ভিআইপি এবং ওয়েডিং কনশিয়েজ। যাদের কাজ হবে ক্রেতাদের কেনাকাটায় মদদ জোগানো। থাকছে ব্যাগ-ড্রপ ফ্যাসিলিটি, হ্যান্ডস ফ্রি রিটেইল থেরাপি পুরোপুরি উপভোগের জন্য। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, এ প্লাজার অনেক স্টোরই কাস্টমাইজড করা, লাক্সারি ব্র্র্যান্ডগুলোর স্টোরের আদলে। পল অ্যান্ড শার্কের টেম্পারেচার কন্ট্রোলড আইসরুম থেকে বিউটি ব্র্যান্ড টিরার লাক্সারি হোটেল অ্যাসথেটিক ডিজাইনে তারই সুস্পষ্টতা। থাকছে অনেকগুলো পপআপ স্টোরও। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারতীয় তারকা অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের শিশুদের ক্লদিং ব্র্যান্ড এড-আ-মামার নাম।
জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজার সবকিছুতেই যেন চমক। এমন অভাবনীয় একটা স্থানে স্টোর নিতে তাহলে কত টাকা গুনতে হয়, কৌতূহল জাগতেই পারে। হিন্দুস্তান টাইমসের বরাতে মিলেছে সে তথ্যও। লাক্সারি ব্র্যান্ড লুই ভিতোঁকে ৭ হাজার ৬৫ বর্গফুটের মোট ৪ ইউনিটের জন্য দিতে হচ্ছে সাড়ে ৪০ লাখ ভারতীয় রুপি, প্রতি মাসে। অন্যদিকে ডিএনএ ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজায় ব্যালেন্সিয়াগার প্রথম ফ্ল্যাগশিপ স্টোরের জন্য ভাড়া দিতে হয় প্রতি মাসে ৪০ লাখ রুপি। একইভাবে দিওরের দুই ইউনিটের ৩ হাজার ৩১৭ বর্গফুটের জন্য প্রতি মাসে ভাড়া ২১ লাখ ৫৬ হাজার রুপি। অনেক ব্র্যান্ডকেই তাদের মাসের মোট মুনাফার ৪ থেকে ১২ শতাংশ অব্দি হিস্যা দিতে হবে রিলায়েন্স গ্রুপকে।
জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজার কাঠামো মূলত পদ্ম থেকে প্রাণিত। সেই সঙ্গে এতে প্রাণ জুগিয়েছে প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত নানা উপাদান। পুরো প্লাজা সোনালি আলোয় উদ্ভাসিত। মার্বেলের মেঝে আর হাই ভোল্টেড সিলিং দিয়ে গড়া। নীল, সোনালি আর সাদা ইন্টেরিয়রে আভিজাত্যের পষ্ট প্রকাশ। প্লাজার প্রজেক্টটি নকশা করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্কিটেকচারাল এবং ডিজাইন ফার্ম টিভিএস। পুরো প্রজেক্ট নির্মাণে সহায়তা করেছে রিলায়েন্স গ্রুপ।
জিও ওয়ার্ল্ড প্লাজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও ছিল জমকালো। ‘দ্য নিউ অর্ডার অব স্টাইল’ শিরোনামের ফ্যাশন শোর আয়োজন করা হয় এ উপলক্ষে। অংশ নেন ভারতের প্রথম সারির ডিজাইনার ও তারকারা। সংশ্লিষ্টদের দাবি, মূলত ভারত এবং বহির্বিশ্বের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সেরাদের একই প্ল্যাটফর্মে একত্র করার তাগিদ থেকেই তৈরি হয়েছে এ লাক্সারি শপিং স্পেস।

 ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top