skip to Main Content

ফিচার I লাভ অব লাইন

নব্বই থেকে নব্য ধারার চার্টবাস্টারে। রানওয়ে, রেড কার্পেট—সবেতেই সপ্রতিভ উপস্থিতি। সোশ্যাল মিডিয়া বাদ পড়বে? তা হয় নাকি

ক্লারা বোর কিউপিড বো, মারলিন ডিট্রিকসের ওভারলাইনড লিপ আর মেরিলিন মনরোর কনট্যুরড পাউট—ইতিহাসের তিনটি আইকনিক মেকআপ লুক। যার কোনোটিই সম্ভব হতো না একটিমাত্র মেকআপ প্রোডাক্ট ছাড়া। সেটা হচ্ছে লিপলাইনার। সাদাসিধে চিকন গড়নের রংপেনসিলগুলো বিশ্বের অনেক নামীদামি মেকআপ আর্টিস্টের গো-টু প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে সেই ১৯২০ সাল থেকে। কিন্তু গেম চেঞ্জার হয়ে ওঠে নব্বইয়ে। স্বনামধন্য মেকআপ ব্র্যান্ড ম্যাকের স্পাইস শেড লিপলাইনার পেনসিলটি তখন পরিণত হয় মাস্ট হ্যাভ মেকআপ প্রোডাক্টে। সেই পালে হাওয়া লাগান সুপার মডেলরা। সিন্ডি ক্রফর্ড আর নাওমি ক্যাম্পবেলের চেস্টনাট রঙা লিপলাইনড লুক পরিণত হয় সিগনেচারে। এরপর অবশ্য জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছিল বেশ অনেকটা বছর। কিন্তু ২০১৫ তে কাইলি কসমেটিকসের লিপ কিট যখন বাজারে লঞ্চ হয়, তখন থেকে ক্রমেই দৃশ্যপটে এর উপস্থিতি বাড়ে। অনেক মেকআপ আর্টিস্টেরই মত, লিপলাইনার আসলে ২০২১ সালের ট্রেন্ড। কিম কারদাশিয়ান, মেগান দি স্টেলিয়ন আর লিজ্জোর কল্যাণে। লিপলাইনারের জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতা টিকে আছে এ বছরও। কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে। যার বেশির ভাগই নব্বই অনুপ্রাণিত। এর মধ্য থেকে সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটির বিস্তারিত বয়ান রইল।
কিন্তু তার আগে সারতে হবে প্রস্তুতিপর্ব। লিপলাইনার দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া সেরে নেওয়া যাবে ঝক্কিহীনভাবে যদি ঠোঁটের ক্যানভাস তৈরি থাকে। কারণ, লিপলাইনারের প্রান্ত এতটাই ছোট থাকে যে, ত্বক যদি চামড়া ওঠা হয়, তাহলে এটি মসৃণভাবে গ্লাইড করবে না। সমাধান? প্রথমেই ঠোঁটে জমে থাকা সবকিছু পরিষ্কার করে নিতে হবে। লিপ স্ক্রাব দিয়ে। এক্সফোলিয়েট করতে ব্যবহার করা যেতে পারে চিনি আর মধুর মিশ্রণ। টুথব্রাশে নিয়ে ভালো করে ঠোঁটে ঘষে নিলেই চলবে। এরপর সারতে হবে ময়শ্চারাইজেশন। লিপলাইনার দেওয়ার আগে হালকা পরতের লিপ বাম মেখে নিতে হবে। খানিকটা সময় দিতে হবে ঠোঁটের গভীরে প্রবেশে। তারপর বাড়তি লিপ বামটুকু মুছে নিতে হবে। ব্যস, লিপলাইনের জন্য তৈরি ঠোঁট।
নব্বইয়ের সুপার মডেল আউটলাইন
নাইনটিজের ওজি লুক হিসেবে পরিচিতি পায় এই ব্রাউন লিপলাইনার ট্রেন্ড। আর পাবে নাই-বা কেন? সুপার মডেল অ্যাপ্রুভড ছিল যে। এখনো তারকাদের দেখা যায় দশক পুরোনো এ টেকনিকে ঠোঁট সাজাতে। মূলত ঠোঁটের প্রাকৃতিক রঙের কাছাকাছি শেডের লিপস্টিক বাছাই করা হয় এ জন্য। আর এটি আউটলাইন করার জন্য ব্যবহার করা হয় লিপ কালারের চেয়ে বেশ কয়েক শেড গাঢ় লিপলাইনার। এতে ঠোঁট ফুলার দেখায়; দেখায় পরিপুষ্ট। এ ক্ষেত্রে লিপ প্রোডাক্টগুলোর শেড বাছাই খানিকটা ট্রিকি হতে পারে। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। লাইট বেইজ রঙের লিপস্টিকের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে ব্রাউন অথবা চকলেট রঙা লিপলাইনার। লিপস্টিক লাল? লাইনার তাহলে হোক ব্রিক অথবা বরডো রঙের। আর প্লাম অথবা মভ লিপস্টিকের সঙ্গে অনায়াসে বেছে নেওয়া যাবে ডিপ পার্পল রঙা লাইনার। এটি অ্যাপ্লাই করার প্রক্রিয়া একদম সহজ। প্রথমে লিপলাইনার দিয়ে লাইন করে নিতে হবে ঠোঁটে। তারপর মেখে নিতে হবে লিপস্টিক। স্যাটিন বা ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক এ লুকে সবচেয়ে ভালো দেখায়।
চেরি কোলা লিপ
নব্বই নিয়ে কথা যেহেতু হচ্ছেই, এই লিপ ট্রেন্ড কোনোভাবেই বাদ দেওয়া চলবে না। মূলত চেরি কোলা সোডার রং থেকে অনুপ্রাণিত এটি। লাল ও বাদামির মিশেল, হাই-শাইন টেক্সচারসমেত। ফান, ফ্রেশ ও ফ্লার্টি লুকের জন্য। ম্যাট টেক্সচারের ন্যুড শেড মেখে ঠোঁটের প্রাকৃতিক রং হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে না এই লুক; বরং উজ্জ্বল রঙের জুসি লেয়ার দিয়ে অনেকটাই ফুটে ওঠে ঠোঁটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সম্প্রতি কাইলি জেনার, হেইলি বিবার, অ্যামিলিয়া গ্রেসহ অনেককে দেখা গেছে চেরি কোলা লিপ লুকে। এ ক্ষেত্রে শেড বাছাই করাটাই আসল মুনশিয়ানা। প্রথমে ব্রাউন টোনের লাইনার দিয়ে আউটলাইন করে নিতে হবে পুরো ঠোঁট। তারপর পছন্দসই লাল অথবা গোলাপি রঙের বাম অথবা গ্লস মেখে নিতে হবে। ব্যস, টিকটক অ্যাপ্রুভড লুক তৈরি।
ওভারলাইন ওয়ান্ডার
হেইলি বিবারের গো-টু লিপলাইনার লুক এটি। চটজলদি কুল ভাইবের জন্য চমৎকার। প্রথমে একটি ওয়াটারপ্রুফ লাইনার নিয়ে ওভারলাইন করে নিতে হবে ঠোঁটে। তারপর মাখতে হবে পুরু ময়শ্চারাইজিং লিপ প্রাইমারের পরত। এর ওপর দিয়ে নিতে হবে ক্রিমি লিপস্টিক, লাইনারের শেডের সঙ্গে ম্যাচ করে। আঙুল দিয়ে সামান্য ঘষে ব্লেন্ড করে নিতে হবে লিপস্টিক। সফট, ব্লারড ইফেক্টের জন্য।

 বিউটি ডেস্ক
মডেল: ইন্দ্রানী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top