skip to Main Content

ত্বকতত্ত্ব I স্কিন স্ট্রিমিং

এতশত বিউটি রেজিমের ভিড়ে আসলে প্রয়োজন কোনটা। কেউ হয়তো বলছেন অ্যান্টি-এজিং সলিউশন ছাড়া ঘুমাতে না যেতে, কারও পরামর্শ পাঁচ লেয়ারের স্কিন প্রোডাক্ট ছাড়া রোদে না বেরোনোর। বেছে নেওয়া হবে কোন পন্থা? সাধারণে খোঁজা হচ্ছে সমাধান

আসলেও কি এত কিছুর দরকার আছে? অবশেষে টিকটক ট্রেন্ড জানাচ্ছে ভিন্ন তথ্য। নাহ্, ত্বকের যত্নে আর দরকার নেই এত এত প্রোডাক্ট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র তিন-চারটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের প্রতিনিয়ত ব্যবহারই ত্বক রাখতে পারে প্রাণবন্ত।
ইদানীং ক্লজেটে যেন কাপড়ের চেয়ে মেকআপ বা স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের সংখ্যাই বেশি। কোথাও স্টে ওভারে গেলে তো কথাই নেই। সঙ্গে করে তল্পিতল্পা নিয়ে ছুটতে হয়। সুদিং লোশন, রাইস ওয়াটার এসেন্স, সেরাম, রেটিনল, ডে ক্রিম-নাইট ক্রিম—কী থাকে না সেই তালিকায়। ত্বকের যত্নে ওভার ডুয়িং তো অনেক হলো, এবার না হয় মিনিমাল স্টেপে কীভাবে ত্বককে আরও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখা যায়, তা জেনে নেওয়া যাক।
স্কিন স্ট্রিমিং কী
স্কিন স্ট্রিমিং নামটা খুব জটিল লাগলেও এটি আসলে রোজকার ত্বকযত্নের জটিল প্রক্রিয়াকে সহজ করার উপায়। মাত্র তিন-চার ধাপে কীভাবে সৌন্দর্য ধরে রাখা যায়, কীভাবে কম প্রসাধনী ব্যবহারেও ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত হয়, সেই প্রক্রিয়াই হলো স্কিন স্ট্রিমিং।
এই পদ্ধতিতে ত্বকে শুধু ক্লিনজার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সেরাম, ময়শ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ অতিরিক্ত স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার ছাড়াই যারা সুন্দর ত্বক পেতে চান, তাদের জন্য স্কিন স্ট্রিমিং হতে পারে জাদুকরী সমাধান।
স্কিন স্ট্রিমিংয়ে কোনো বাড়তি পণ্য ব্যবহারের বাড়াবাড়ি নেই বলে ত্বকে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনও কম হয়। সেই সঙ্গে যেসব দামি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট হয়তো মাসের পর মাস ব্যবহার করে রেজাল্ট পেতে হয়, সেগুলোর প্রয়োজনীয়তাও কমিয়ে আনে অনেকখানি।
কেন প্রয়োজন
সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করলেই দেখা যায় কয়েক স্টেপের স্কিন কেয়ার রুটিন। এমন প্রক্রিয়া শুধু ব্যয়বহুল তো বটেই, তার ওপর কার্যকারিতা নিয়েও থাকে দ্বিধাদ্বন্দ্ব।
ত্বকচর্চার সামগ্রী কিনতে কিনতে যাদের পকেটের হাল বেহাল, তারা নিঃসন্দেহে বলতে পারেন থ্যাংকস টু স্কিন স্ট্রিমিং। অতিরিক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহারের বালাই নেই, তাই সাধ্যের মধ্যেই সেরে নেওয়া যায়।
এ ছাড়া লেয়ারিংয়ে একটি পণ্যের সঙ্গে অন্যটির রসায়ন না মেলার আশঙ্কা রয়েই যায়। স্কিন স্ট্রিমিংয়ে নেই সেই রকম জটিলতা। একদম বেসিক কিছু প্রোডাক্ট ব্যবহারের মাধ্যমেই রিস্টোর হবে ত্বকের সৌন্দর্য। বাইরের স্তরের ক্ষতি না করেই ত্বকের মলিনতা দূর করতে স্কিন স্ট্রিমিং হতে পারে কার্যকর প্রক্রিয়া।
উপযোগিতা
যারা সেনসেটিভ বা ইরিটেটেড স্কিনের অধিকারী, তারা ত্বকের নমনীয়তা রিসেট করতে চাইলে স্কিন স্ট্রিমিং শুরু করতে পারেন এখনই। এ ছাড়া যাদের ব্রণ বা অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের জন্যও স্কিন স্ট্রিমিং উপকারী সমাধান হতে পারে।
স্কিন স্ট্রিমিং বনাম স্কিন স্টার্ভিং
স্কিন স্ট্রিমিংয়ে যেমন কিছু বেসিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হয়, স্কিন স্টার্ভিংয়ে আবার ইরিটেশন ঠেকাতে পুরো স্কিন কেয়ার রুটিনই বাদ দিতে হয়। তবে স্কিন স্ট্রিমিং মোটামুটি সবার জন্য প্রযোজ্য হলেও স্কিন স্টার্ভিং তা নয়। যাদের ত্বক খুব বেশি সেনসেটিভ, ডার্মাটোলজিস্টরা শুধু তাদেরই এই প্রক্রিয়া সাজেস্ট করে থাকেন, তা-ও আবার খুবই সীমিত সময়ের জন্য। যাদের ত্বক শুধু ময়শ্চারাইজার অথবা সানস্ক্রিন ব্যতীত কোনো প্রোডাক্ট সহ্য করতে পারে না, তারা বেছে নিতে পারেন স্কিন স্টার্ভিংয়ের এই প্রক্রিয়া।
স্কিন স্ট্রিমিংয়ের শুরু
প্রথমেই বিউটি রুটিন থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে বাড়তি সব উপাদান। শুরু করা যায় বেসিক ক্লিনজিং দিয়ে। ত্বকের উপরিভাগের লেয়ার যখন পরিষ্কার থাকবে, ত্বক তখন কোনো প্রসাধনী ছাড়াই স্বাস্থ্যোজ্জ্বল থাকবে। এ ছাড়া ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়শ্চারাইজার এবং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি রুখতে সানস্ক্রিন আর সঙ্গে দু-একটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্যবহার করলেই ত্বক থাকবে প্রাণবন্ত।
ত্বকের যত্নে আপোস না করে তৈরি হতে পারে নিজস্ব এ বিউটি রুটিন। ট্রেন্ডের গড্ডলিকা প্রবাহে নিজেকে না ভাসিয়ে, ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক প্রোডাক্ট বেছে নিলেই চলবে। এতে পকেটও যেমন বাঁচবে, ত্বকও পাবে তার কাঙ্ক্ষিত সৌন্দর্য।

 বিদিশা শরাফ
মডেল: কনিকা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top