skip to Main Content

বহুরূপী I লাড্ডু লালিত্য

গোলাকার মিষ্টান্ন। মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের। লোভ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় মিষ্টিপ্রেমীদের! তাই যেকোনো আনন্দের অনুষ্ঠান ও উৎসব উদ্‌যাপনে এর উপস্থিতি লক্ষণীয়। নানা বৈচিত্র্য জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে বহুগুণ। প্রায় প্রতিটি অঞ্চলের লাড্ডুরই রয়েছে নিজস্ব রূপ।
 বেসন লাড্ডু: সহজে ঘরে তৈরি করা যায়। বানানো হয় ঘিয়ে বেসন ভেজে, এলাচিগুঁড়া ও চিনি বা গুড় যোগে মিষ্টি স্বাদযুক্ত করে। সর্বশেষে কামড় দিয়ে খাওয়া সম্ভব—এমন বলের আকার দেওয়া হয়। টপিংয়ে হরদম যোগ করা হয় বাদাম ও কিশমিশ।
 মতিচুর লাড্ডু: ভারতের উত্তরাঞ্চল থেকে আবির্ভূত এই লাড্ডু বহু বছর ধরে আমাদের দেশে বিভিন্ন উৎসবের প্রিয় মিষ্টান্ন হয়ে রয়েছে। মতিচুর শব্দের কেতাবি অর্থ চূর্ণ মুক্তা। বেসনের গোলা দেশি ঘিয়ে ভেজে, তারপর নরম হওয়া পর্যন্ত চিনির সিরাপে ভিজিয়ে রাখা হয়। বাড়তি সিরাপ ঝরে গেলে সেটিকে গোলাকৃতি দিয়ে তৈরি করা হয় বলে দেখতে মিহি মুক্তার মতো এই লাড্ডু।
 বুন্দিয়া লাড্ডু: বুন্দি বা বুন্দিয়া লাড্ডু রাজস্থানের একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। তৈরির উপাদান ও প্রক্রিয়া মতিচুর লাড্ডুর মতোই। পার্থক্য শুধু, আকার তুলনামূলক বড়। মৌলিক উপাদান বেসন, চিনি, এলাচিগুঁড়া ও ঘি। সঙ্গে অনেকে ঘিয়ে ভাজা কাজুবাদাম, বাদাম ও কিশমিশ যোগ করেন।
 চুরমা লাড্ডু: ভারতের হরিয়ানা, বিহার, উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানের জনপ্রিয় ডেজার্ট। গমের অমসৃণ চূর্ণের সঙ্গে ঘি ও চিনি যোগে তৈরি। অনেকে এটি তৈরির প্রক্রিয়া সহজ রাখতে প্রাথমিক উপাদানগুলোতেই সীমাবদ্ধ থাকেন। তবে কেউ কেউ অতিরিক্ত স্বাদের জন্য লাড্ডুর মিশ্রণে এলাচিগুঁড়া যোগ করতে পছন্দ করেন। বলে রাখি, এই লাড্ডু তৈরিতে ব্যবহৃত মিশ্রণ রাজস্থানের বিখ্যাত খাবার ডাল বাটি চুরমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
 তিল লাড্ডু: ভারতীয় পুষ্টিবিদ আমরিন শেখের মতে, তিল ও গুড় যোগে তৈরি এই লাড্ডু আয়রন ও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। শুধু তা-ই নয়, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে তিল। অন্যান্য লাড্ডুর চেয়ে এটি আলাদা। সাধারণত শীতকালেই খাওয়া হয়; কেননা এই ডেজার্ট শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
 গোন্ধ লাড্ডু: গোন্ধ শব্দটি হিন্দি। আভিধানিক অর্থ গাম বা আঠা। ভোজ্য আঠা, দেশি ঘি, চিনি, কিশমিশ, শুকনো ফল, এলাচি গুঁড়া, শুকনো আদাগুঁড়া ও জায়ফল হলো গোন্ধ লাড্ডুর মৌলিক উপাদান। ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন নতুন মায়েদের খাদ্যতালিকায় এই লাড্ডু রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক পুষ্টিবিদ। কেননা এই উচ্চ ক্যালরিযুক্ত লাড্ডু তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় বাড়তি ক্যালরির চাহিদা পূরণে সহায়ক।
 সুন্নুন্দালু: সুন্নি লাড্ডু নামেও পরিচিত। এসেছে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে। শুকনো ভুনা উরদ ডালের সঙ্গে ঘি ও চিনি মিশিয়ে তৈরি। ঘ্রাণ বেসন লাড্ডুর মতোই; তবে এতে দানাদার টেক্সচার রয়েছে।
 রাওয়া লাড্ডু: বানানো সহজ। বেশ সুস্বাদু। ভাজা সুজি, চিনি ও ঘি যোগে তৈরি। বাদামগুঁড়া, এলাচিগুঁড়া ও খোয়া যোগ এনে দেয় বাড়তি মাত্রা।
 নারকেল লাড্ডু: ১৫ মিনিটের কম সময়ে পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত করা যায়। দরকার ঘি, কোরানো নারকেল, দুধ, চিনি ও সবুজ এলাচিগুঁড়া। সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে অল্প আঁচে রান্না করা হয়। তারপর পুরোপুরি ঠান্ডা হওয়ার আগে মিশ্রণটিকে দেওয়া হয় লাড্ডুর আকার।

 ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top