skip to Main Content

কুন্তলকাহন I টেম্পরারি VS পার্মানেন্ট

দুই-ই পরিচিত শব্দ। উভয়ই জনপ্রিয় বাজারে। কিন্তু কোনটি বেছে নেওয়া সঠিক, সেটাই ভাববার বিষয়

চুল রাঙানোর জন্য রং বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কমন অপশন দুটি—টেম্পরারি আর পার্মানেন্ট। সাধারণত কত সময় ধরে চুল রঙিন রাখার ইচ্ছা, তার ওপরে নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
টেম্পরারি হেয়ার কালার
টেম্পরারি শব্দের মাঝেই লুকিয়ে আছে এই হেয়ার কালার ফর্মুলা। বাংলা অভিধানে শব্দটির অর্থ সাময়িক, অস্থায়ী। সাময়িক সময়ের জন্য চুল রাঙিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় এ ধরনের হেয়ার কালার। চুলের বাইরের অংশে একটি প্রলেপ তৈরি করে এটি। কিউটিকলে প্রবেশ করে না। স্প্রে, লিকুইড, ক্রিম—তিন ফর্মেই পাওয়া যায়। স্থায়িত্ব খুব কম। একবার ধুলেই হাওয়া। পানির স্পর্শে উধাও।
ক্রেতা আগ্রহের কারণ
 সহজে ব্যবহার উপযোগী
 সহজলভ্য
 কম সময়ে পুরো চুল রাঙিয়ে নেওয়া যায়
 জেন্টল লিভ-ইন ফর্মুলায় তৈরি। চুল ব্লিচ করে না।
ক্রেতা অনাগ্রহের কারণ
 একবার ধুলেই এই ধরনের হেয়ার কালার মুছে যায়। যা অনেক ব্যবহারকারী পছন্দ করেন না।
সেমি পার্মানেন্ট হেয়ার কালার
টেম্পরারি কালারের চেয়ে বেশি সময় টিকে থাকে। ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে কাজ করে পানির সংস্পর্শ। রাঙিয়ে নেওয়া চুল যত বেশি পানির স্পর্শ পাবে, তত দ্রুত রং হারাবে। এই ফর্মুলার হেয়ার কালার চুলের বাইরের অংশের একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডাই করতে পারে। কিউটিকলেও প্রবেশ করে। তাই চুলের গোড়া অবধি রঙিন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেমি পার্মানেন্ট কালারে ব্লিচের উপস্থিতি থাকে না। ফলে চুলের প্রাকৃতিক রং নষ্ট হয় না; বরং ওপরের প্রলেপ শুধু তৈরি হয়।
ক্রেতা আগ্রহের কারণ
 শেডগুলো প্রাকৃতিক রঙের কাছাকাছি হয়ে থাকে
 প্রায় দুমাস টিকে থাকে
 একই রং দীর্ঘ সময় রাখতে হয় না। দুমাস পরে বদলে নেওয়া যায়
 ব্লিচ, অ্যামোনিয়ার মতো ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি নেই।
ক্রেতা অনাগ্রহের কারণ
 ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পরপর পুনরায় ব্যবহার করতে হয়, যা অনেকের জন্য ঝক্কি
 গ্রে হেয়ার সম্পূর্ণভাবে ঢাকতে পারে না। তাই সাদা চুল ঢেকে রাখতে এই ফর্মুলা শতভাগ কার্যকরী নয়
 চুলের প্রাকৃতিক রঙের থেকে হালকা রং কার্যকর হয় না।
এটা নাকি ওটা?
যিনি চুল রাঙাতে চান, তার চাহিদার ওপর নির্ভর করবে সিদ্ধান্ত। কারণ, হেয়ার ডাই করার মাধ্যমে আউটলুক পরিবর্তিত হয়। চেহারা, ড্রেসআপ—সবকিছুর জন্যই চুলের কালার গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজের ব্যক্তিত্ব বুঝে হেয়ার কালার শেড যেমন নির্ধারণ করতে হবে, তেমনি আবার ফর্মুলা কোনটি হবে, তা নিয়েও ভাবা চাই।
টেম্পরারি নাকি সেমি পার্মানেন্ট, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে নিজের চাহিদা সম্পর্কে শতভাগ ওয়াকিবহাল থাকলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হতে পারে। কোনো বিশেষ কারণে অল্প সময়ের জন্য লুক চেঞ্জ করতে চাইলে টেম্পরারি কালার উপযোগী হতে পারে। কারণ, এটি ব্যবহার সহজ আবার রিমুভ করার প্রক্রিয়াও ঝক্কিমুক্ত। একবার শ্যাম্পু করে নিলেই চুল থেকে চলে যায়। এতে প্রাকৃতিক রং ফিরে পাওয়া সহজ হয়। উৎসবের শেষে চিরায়ত চুলের রং ফিরে পেতে চাইলে এই ফর্মুলা বেস্ট অপশন হতে পারে। আবার যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রঙের চুল পেতে চান, তারাও এটি ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপি, লাল, নীল—যেমন রং চাই, খুঁজে পাওয়া যাবে বাজার ঘুরে। এ ফর্মুলার হেয়ার কালারগুলোতে উষ্ণ রং যেমন পিচ, রেড, অরেঞ্জ, পিংক কুল কালার শেড; যেমন নীল, সবুজ, ভায়োলেটের চেয়ে দ্রুত নিষ্প্রভ হয়।
আবার, যারা রোজ রোজ চুল রাঙানোর ঝক্কি নিতে চান না; দেড়-দুই মাস রং টিকলে যাদের জন্য সুবিধা, তারা সেমি পার্মানেন্ট হেয়ার কালার বেছে নিতে পারেন। যখন হেয়ার ডাই করবেন, চুলের গোড়ার দিকে একটু বেশি মনোযোগ দিলে সহজে গ্রে হেয়ারগুলো ডাই করে নেওয়া সম্ভব হবে।
স্ট্যাটিস্টার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৩১ শতাংশ বাজার ছিল সেমি পার্মানেন্ট হেয়ার ডাইয়ের দখলে। টেম্পরারি হেয়ার ডাইয়ের ছিল ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপরে ২০২৪ সালের মার্কেট ফোরকাস্টে পুরো চিত্রটাই পাল্টে যায়। এ বছর সেমি পার্মানেন্টের মার্কেট শেয়ার ২৯ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে ধারণা করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। টেম্পরারির অবস্থান থাকবে একই রকম। এই তথ্য থেকে ধারণা করা যায়, টেম্পরারি হেয়ার কালারের ক্রেতাসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 বিউটি ডেস্ক
মডেল: ইকরা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top