skip to Main Content

ফিচার I অন দ্য মুভ

একদমই যথাযথ জায়গা নয়। কিন্তু মেকআপ সারার জন্য যখন গাড়ির ব্যাকসিটই ভরসা, খানিকটা কৌশলী হওয়া ছাড়া উপায় কী! সঙ্গে সামান্য প্র্যাকটিস, পটু হয়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট

যেতে যেতে পথে হলো দেরি, তাই তো… তাকে কী! একদম মলিন, ফ্যাকাশে জম্বির মতো চেহারা নিয়ে তো আর কোনো ইভেন্টে ঢুকে পড়া যায় না। এমনকি অফিসেও নয়। আজকের কসমোপলিটন নারীদের কাছে অন্তত এটা কোনো অপশন নয়। সুপারহিউম্যান পাওয়ার থাকা এ সৌন্দর্যসচেতন নারীরা তাই চলতি পথে হয়ে উঠতে পারেন সুপারমেকআপওমেন। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর যাদের দেখে কেউ ধরতেই পারবে না, গাড়িতে বসেই পুরোটা সাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। হোক তা লিপস্টিক রিঅ্যাপ্লাই বা মাসকারা দেওয়ার মতো লাস্ট মিনিট ফাইনাল টাচ অথবা সানস্ক্রিন মেখে, কনসিলার থেকে আইশ্যাডো দিয়ে পুরোদস্তুর ফুলপ্রুফ মেকআপ। হাতের কাছে তৈরি রাখতে হবে একটি ছোটখাটো গো-টু মেকআপ ব্যাগ। যাতে থাকবে প্রয়োজনীয় সব প্রোডাক্ট। ফর্মুলা আর টেক্সচার বাছাইয়েও হতে হবে কৌশলী। যেগুলো চলতি পথে ব্যবহার সহজ, এমনকি হুটহাট ব্রেক আর আঁকাবাঁকা রাস্তাতেও সামলে নেওয়া যাবে স্বচ্ছন্দে।
বুঝেশুনে বেজ
সব নিয়ে তৈরি? এবার বডি ল্যাঙ্গুয়েজটা ঠিক করে নিতে হবে। সামনের দিকে ঝুঁকে নয়, যতটা সম্ভব সোজা হয়ে বসতে হবে, সদা সতর্ক ভাব নিয়ে। না হলে সাজ হবে না, হবে সং! গাড়িতে বসে যেহেতু মেকআপ সারতে হচ্ছে, হাতে তো আর রাজ্যের সময় নেই। সে ক্ষেত্রে মাল্টিটাস্কিং প্রোডাক্ট সবচেয়ে জুতসই। অন্তত বাড়তি আরও তিনটি কাজ এই একটি পণ্য দিয়েই চুকিয়ে দেওয়া যাবে—এমন কিছু চাই বেজের জন্য। এ ক্ষেত্রে মিনারেল প্রেসড পাউডারগুলো সবচেয়ে কাজের। এগুলোতে মিনারেলের গুণসমৃদ্ধ নানা ধরনের ত্বকযত্নের উপাদানের উপস্থিতি থাকে। তা ছাড়া একই সঙ্গে ব্যবহার করা যায় ফাউন্ডেশন, কনসিলার, ফিনিশিং পাউডার এমনকি সানস্ক্রিন হিসেবেও। বিল্ডেবল এবং চেহারাজুড়ে একই রকম কাভারেজ যেন দেয়, তা নিশ্চিত করা চাই। প্যাকেজিংটাও এমন পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ। আয়নাসমেত কম্প্যাক্ট পাউডার হলে তা ব্যবহার সহজ হবে গাড়িতে বসে।
কাছে থাক কনসিলার
চোখের চারপাশ কিংবা চেহারায় অন্য কোথাও কালো দাগছোপ থাকলে তা ঢাকতে বাড়তি কাভারেজের ব্যবস্থা করবে এই পণ্য। সে ক্ষেত্রে চলতি পথে এর প্রয়োগ হতে পারে মেকআপের প্রথম ধাপ। বিল্ট ইন ব্রাশ আছে এমন কনসিলার সাজের কাজকে আরও সহজ করবে। তবে ক্রিমি কনসিলার বেছে নিলে হাতের আঙুলও সই। খুব বেশি লিকুইডি কিংবা ঘন কনসিলার এড়িয়ে যাওয়া ভালো। এগুলো ত্বকে ব্লেন্ড করতে ঝক্কি বেশি। অন্যদিকে ক্রিমি কনসিলার সহজে ত্বকে মিশে যায়। আর আঙুল থেকে পরিষ্কারও সহজ। এমন কনসিলার বেছে নিতে হবে যা রেডনেস, হাইপারপিগমেন্টেশন নিমিষে তো ঢেকে দেবেই, টিকেও থাকবে দীর্ঘ সময়।
মন্ত্র মাসকারা
সবচেয়ে অল্প সময়ে চেহারায় লক্ষণীয় পরিবর্তন আনতে এর চেয়ে ভালো অপশন আর কিছু হয় না। ওই যে কথায় আছে না—মিনিমাম এফোর্ট, ম্যাক্সিমাম ইমপ্যাক্ট, সেটাই করে দেখায় এই ম্যাজিক ওয়ান্ড। তবে চলতি পথে এর প্রয়োগ একটু ট্রিকি। তাই অনেক বেশি পটু না হলে একটু অপেক্ষা করতে হবে। গাড়ি যখন লাল বাতিতে অথবা জ্যামে আটকাবে, তখন চটজলদি অ্যাপ্লাই করে নিলে হবে। তাই বলে একবার ডান চোখে, একবার বাম চোখে—এভাবে নয় কিন্তু। প্রথমে এক চোখে মাসকারা মাখানো শেষে তারপর অন্য চোখে অ্যাপ্লাই করতে হবে। ওয়ান্ড ধরতে হবে ল্যাশের একদম গোড়ায়, মাঝ বরাবর। তারপর ডান-বাম মোশনে বুলিয়ে আপওয়ার্ড স্ট্রোক দিতে হবে। আর গাড়ি থামলে দিয়ে নিতে হবে ইনার আর আউটার কর্নারে। একইভাবে অন্য চোখেও বুলিয়ে নিতে হবে মাসকারা। তারপর চাইলে সেকেন্ড কোটও দিয়ে নেওয়া যায়। তবে তার জন্য কিন্তু প্রো হওয়া চাই।
আইশ্যাডো আছে?
প্যালেটেরটা নয় কিন্তু। চলতি পথে সঙ্গে থাকতে হবে আইশ্যাডো স্টিক। ব্যবহারে সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক; কারণ, এগুলো চোখের পাতায় গ্লাইড করে সহজে। ব্লেন্ডেবল ফর্মুলার এমন অভিনবতা আইশ্যাডোর অন্য কোনো অপশনে থাকে না। আর খুব বেশি নিয়ন কোনো রং নয়, এমন পরিস্থিতিতে বেছে নিতে হবে আর্দি টোনগুলো।
ব্লাশ অন
মাসকারার মতোই এর কার্যকারিতা। চটজলদি চেহারায় গ্ল্যামারাস ভাব ফুটিয়ে তোলে। লিকুইড কিংবা ক্রিমি ব্লাশ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন অনেকে এ ক্ষেত্রে, গাড়িতে আলাদা করে হাত ধোয়ার ঝক্কি এড়াতে। সেরা অপশন প্রেসড কমপ্যাক্ট ব্লাশ, ছোট ব্রাশসমেত। ব্যাগে ক্যারি করা সহজ, মেখে নেওয়ায় ঝক্কিহীন।
লাগবে লিপস্টিক
এটা তো একদম বেসিক মেকআপ প্রোডাক্ট। তবে দৌড়ের ওপর থাকলে সঙ্গে রাখা চাই এমন ফর্মুলার লিপস্টিক, যেগুলো রাঙানোর পাশাপাশি ঠোঁটের ছোটখাটো খুঁত ঢেকে দেবে এক বোলানোতে। সফট ব্লারি এফেক্টের লিপস্টিকগুলো এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কাজের। ময়শ্চারাইজিং ম্যাট ফর্মুলার হলে তো কথাই নেই। চলতি পথে কোনো ধরনের ভুলচুক ছাড়াই ঠোঁটে মেখে নেওয়া যাবে।
আরেব্বাশ আইলাইনার!
সে তো অনেক বেশি পটু হলেও ভুল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়ে যায়। আর চলতি পথে হলে সেই আশঙ্কা আরও বাড়বে বৈ কমবে না। সে ক্ষেত্রে চোখ যদি সাজাতেই হয়, কাজলই সই! হ্যান্ডেল করা সহজ, সামান্য গড়বড়ে ঠিক করে নেওয়াও খুব বেশি মুশকিল হবে না।

 বিউটি ডেস্ক
মডেল: মাইশা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top