ত্বকতত্ত্ব I স্পট অন
অ্যাকনে, ব্লেমিসেস—খবর দিয়ে যে আসবে না, সে তো জানা কথা। হাজির হয় অনাহূত অতিথির মতো। অনেক সময় সেদিনটা হয় বিশেষ উৎসবের ঠিক আগে আগে। সঙ্গে করে ঝোলা ভরে নিয়ে আসে দুশ্চিন্তা
ত্বকের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় যদি হুট করেই কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে তা দ্রুততার সঙ্গে সারিয়ে তোলার চেষ্টাকেই বলে অন স্পট ট্রিটমেন্ট। সাধারণত এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে যেসব পণ্য ব্যবহার করা হয়, সেগুলো প্রদাহ কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখে। খুব কম সময়ে ফেরত পাওয়া যায় ত্বকের সুন্দরতা।
অন স্পট ট্রিটমেন্টে যে পণ্য ব্যবহার করা হয়, বেশির ভাগই ক্রিম টেক্সচারের। তাই অ্যাকনে, পিম্পল—যা-ই হোক না কেন, সারফেসে বেশ জমিয়ে বসে থাকে ক্রিমটি। এতে উপস্থিত থাকে এমন সব উপাদান, যেগুলো দ্রুত এই সমস্যা সারিয়ে তুলতে সক্ষম। এই তালিকায় আছে বেনজয়েল পারক্সাইড, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, সালফার, টি ট্রি অয়েল এবং নিয়াসিনামাইড।
গুণকীর্তন
বেনজয়েল পারক্সাইড
ত্বকে যদি জীবাণুর আক্রমণের ফলে অ্যাকনে সৃষ্টি হয়, তা সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখতে পারে এটি। অতিরিক্ত তেল আর মৃতকোষ জমে যদি লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এই রাসায়নিক উপাদান সেখানে ভূমিকা রাখতে পারে।
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড
এই উপাদান ত্বক পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। লোমকূপে জমে থাকা সেবাম এবং ডেড সেল পরিষ্কার করে। ব্ল্যাকহেড আর হোয়াইটহেডের ক্ষেত্রেও কার্যকরী।
সালফার
এতে উপস্থিত আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টি। আবার ত্বকের অতিরিক্ত তেল পরিষ্কারেও ভূমিকা রাখে। তেলতেলে অ্যাকনে প্রন স্কিনকে ভালো রাখতে সহায়ক। ত্বকে মৃদু শুষ্কতাও বাড়াতে কাজে দেয় উপাদানটি। ফলে পিম্পলের আকার কমে আসে।
টি ট্রি অয়েল
প্রকৃতি থেকে পাওয়া যায় এই উপাদান। জীবাণু নাশে দৃঢ় ভূমিকা রাখে। প্রদাহ কমায়। ত্বকে লালচে ভাব তৈরি হলে কমিয়ে আনে।
নিয়াসিনামাইড
ত্বকের প্রদাহ দ্রুত কমাতে ভূমিকা রাখে। একই সঙ্গে লালচে ভাবও দূর করে।
টিক টিক ঠিক ঠিক
স্পট অ্যাকনে ফর্মুলা কখন বেছে নিতে হবে, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। উত্তর সহজ। অ্যাকনে, পিম্পল আর ব্লেমিশের মুখদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে নিদান নির্ভর হলেই ভালো। পিম্পল হোক অথবা ব্রেক আউট, দেখামাত্রই সারাইয়ের ব্যবস্থা জরুরি। ত্বক যথাযথভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে, পরিষ্কার কাপড়ে পানি মুছে নিতে হবে ধীরে ধীরে। এরপরেই শুরু আরোগ্যের চেষ্টা। স্পট চিহ্নিত করে সেখানে প্রয়োজনীয় ট্রিটমেন্ট শুরু করা চাই।
প্রথম দিকেই প্রদাহ কম থাকে। ঠিক তখনই যদি যথাযথ উপাদান ব্যবহারে যত্ন নেওয়া যায়, তাহলে দ্রুতই এসব যন্ত্রণাকে বাই বাই বলা সম্ভব। ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে, ঠিক কোনটি ব্যবহার করলে দ্রুত মিলবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় দুবার ব্যবহার করলেই সমাধান পাওয়া যায়। দিনকে তাই ভাগ করা যেতে পারে দুই ভাগে। সকাল ও সন্ধ্যায়। মনে রাখা প্রয়োজন, শুষ্ক কিংবা প্রদাহযুক্ত ত্বকের সল্যুশন মোটেই এটা নয়।
অ্যাকনে স্পট ট্রিটমেন্টের জন্য যেসব পণ্য ব্যবহার করা হয়, সেগুলো মূলত ওভার দ্য কাউন্টার প্রোডাক্ট। তাই প্রেসক্রিপশন ছাড়াও কিনে নেওয়া সম্ভব। শুধু প্রয়োজন বুঝে তবেই সারতে হবে কেনাকাটা। লা হস-পোজে, নিউট্রিজেনা, মুরাদ, সেরাভি, স্কিন ফিক্সসহ বেশ কিছু স্কিন কেয়ার লেবেল তৈরি করে এমন পণ্য।
অ্যাকনে ম্যানেজমেন্ট
স্পট ট্রিটমেন্টকে স্থায়ী সমাধান না ভাবলেই ভালো। সহজে সমাধান মেলে বলে বেস্ট সল্যুশন ভাবলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। নিয়মিত রুটিনের মাধ্যমে যত্ন করার অভ্যাস ত্বকের সুস্থতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। প্রয়োজনে নেওয়া যেতে পারে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ। হরমোন আর ডায়েট অনেক সময় ত্বকের সমস্যার কারণ হয়ে থাকে। এসব জেনে তবেই যত্ন করা প্রয়োজন।
সারাহ্ দীনা
মডেল: মাইশা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল