ছুটিরঘণ্টা I আ টেল অব টু সিটিজ
জাকার্তা-পালেংবাঙ এশিয়ান গেমসের স্মৃতি এখনো সজীব। গেমসে উপস্থিত থেকে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশ ও মানুষ দেখা আর জানার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন শেখ সাইফুর রহমান
![](https://www.canvasmagazine.com.bd/wp-content/uploads/2018/09/chutir-ghonta-1-640x313.jpg)
জাকার্তার সুকর্ণ হাত্তা বিমানবন্দরে বিদায়ের আগের আমরা
ইমিগ্রেশন এরিয়ার প্রবেশমুখে দাঁড়িয়ে ওরা পাঁচজন। নিশ্চুপ। চোখ ছলছল। একটু আগেও ছিল হাসিখুশি। নানা কিছু নিয়ে কথা হচ্ছিল আমাদের। মজা করছিলাম। কিন্তু এবার যে ওদের ছেড়ে যেতে হবে। আর কোনো দিন ইন্দোনেশিয়া যাওয়া হবে কি না। দেখা হবে কি না ওদের সঙ্গে, ঠিক নেই।
![](https://www.canvasmagazine.com.bd/wp-content/uploads/2018/09/chutir-ghonta-2-640x416.jpg)
আর্কিওলজিক্যাল পার্কের মাঝে রাজপরিবারের কবর
ততক্ষণে চেক-ইন শেষ। এশিয়ান গেমস শেষে হকি দল, শেফ দ্য মিশন, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) একজন কর্মকর্তা আর আমি ফিরছি বাংলাদেশে। আরও এক দিন থাকবেন তিন কর্মকর্তা। ফলে তাদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়া হয়েছে। এবার ভেতরে ঢুকে পড়তে হবে। আমাদের বিদায় দিতেই এসেছে ওরা। রিমা বিদ্যাসারি, ইওলান্ডা তোরং, মেক্কা, নোফাল ও হারমিন সারিনা। সবাই এনওসি অ্যাসিস্ট্যান্ট। অর্থাৎ আমাদের ভলান্টিয়ার। রিমা ওদের টিম লিডার। ১৯ দিন ওদের সঙ্গে বলতে গেলে ১৪-১৮ ঘণ্টা করে কাটিয়েছি। ফলে আমাদের আত্মার আত্মীয়ে পরিণত হয়েছে। বিদায় যত ঘনিয়েছে, ততই ওরা নিশ্চুপ হয়েছে। কিছু একটা বললেই ওদের চোখজোড়া জলপ্রপাত হবে। একে একে সবাই ভেতরে ঢুকে যায়। সবশেষে আমি। ইওলান্ডা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। বাকিরাও সজল। প্রাণপণে নিজেকে সামলাচ্ছে আমার মেয়ে। হারমিন। এই কদিনে সত্যিই ও আমার মেয়ে হয়ে গেছে। প্রথম দেখায় ছোট্ট এই মেয়েটিকে আমার ভালো লেগে যায়। জাকার্তাবাসের সিংহভাগ সময়ই আমার কেটেছে ওর সঙ্গে। প্রথম দিনেই আমি ওকে মেয়ে বলেছি। ইংরেজি এডুকেশন ওর গ্র্যাজুয়েশনের বিষয়। অথচ দেখলে মনে হবে ১২-১৩ বছর বয়স। স্কুলে যায়। ও যে আমার মেয়ে, তা সবাই জেনেওছে। ওর বন্ধুরা, বিওএ কর্মকর্তা থেকে বাংলাদেশের সাংবাদিক বন্ধুরা। প্রতিদিন সকালে কার কোথায় ডিউটি বা কে কার সঙ্গে কোথায় যাবে, তা জানিয়ে দেওয়া হতো ওদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। আমার সঙ্গে হারমিনের (ওদের ভাষায় উচ্চারণ হ্যারমিন) ডিউটি থাকলে বন্ধুরা ওকে জানাতো: তোমার বাবার সঙ্গে যেতে হবে। এভাবেই আমরা বাবা-মেয়ে। তাই ছেড়ে আসতে আমার অদ্ভুত কষ্ট হচ্ছে। অনেক দিন আগে পড়া কালিদাসের শকুন্তলা গল্পের একটা লাইন আমার বারবার মনে পড়ছে: স্নেহ অতি বিষম বস্তু।
![](https://www.canvasmagazine.com.bd/wp-content/uploads/2018/09/chutir-ghonta-7-640x630.jpg)
শহরের ল্যান্ডমার্ক আমপেরা ব্রিজ,বায়াত আল কোরআন মিউজিয়াম
শেষবার বিদায় নিয়ে ইমিগ্রেশন এরিয়ায় ঢুকে পড়ি। সিকিউরিটি চেক সেরে কাউন্টারের দিকে পা বাড়াই। আমাদের বিমানবন্দরে অবশ্য কোনো সিকিউরিটি চেক ইমিগ্রেশনের আগে হয় না। যা হোক, তিন কর্মকর্তার সঙ্গে ওরাও ধরে গেমস ভিলেজের পথ। পেছনে পড়ে থাকে জাকার্তা পালেংবাঙ এশিয়ান গেমসের অজস্র স্মৃতি। এই অবসরে তার কিছু আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিলে মন্দ হয় না।
বাংলাদেশ বেশ বড়সড় একটা দল নিয়ে গেলেও ফিরেছে খালি হাতে। বিওএর তত্ত্বাবধানেই অংশগ্রহণ গেমসে। আমাকে এবার বিওএ প্রেস অ্যাটাশের দায়িত্ব দেয়। ফলে অন্য রকম একটা অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হয়েছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, সেখানে গেমস কভার করতে যাওয়া বাংলাদেশি সাংবাদিকদের নিয়মিত তথ্য ও ছবি আর ভিডিওচিত্র দেওয়া, এমনকি যারা দেশে রয়েছেন তাদেরকে যথাসম্ভব দ্রুত খবর পাঠিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো গেমস ভিলেজে থাকা। গেমসের উদ্বোধনী আর সমাপনীর মার্চপাস্টে অংশ নেওয়া। এত দিন তো হয় টেলিভিশনে, নয়তো প্রেস বক্সে বসে দেখার সুযোগ হয়েছে। অথচ এবার আমি সেই ময়দানে। অলিম্পিক গেমসের পর সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর। অংশ নিয়েছে ১১ হাজার ক্রীড়াবিদ আর ৬ হাজার কর্মকর্তা। তার মাঝে আমি। বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধি।
এবারের গেমস আমার জন্য নানা কারণেই গুরুত্ববহ। স্মৃতিময়। ১৯৯৮ সালের ব্যাংকক এশিয়াডের ২০ বছর পর আমি আবার কোনো গেমস কভার করলাম। তা-ও একেবারে নতুন এক ভূমিকায়। কোরবানির ঈদও হলো দূর বিদেশে। তবে সেটা আবার জার্কাতায় নয়, বরং আরেক প্রদেশ দক্ষিণ সুমাত্রার রাজধানী পালেংবাঙে। সেখানেও অনুষ্ঠিত হয়েছে গেমসের ১৪টি ইভেন্ট। বাংলাদেশের শুটিং, রোয়িং আর বিচ ভলিবল দল ছিল সেখানে। এই পর্বে তাই জাকার্তা নয়, বরং পালেংবাঙের গল্প শোনানো যাক।
![](https://www.canvasmagazine.com.bd/wp-content/uploads/2018/09/chutir-ghonta-3-640x401.jpg)
দিনের গেমস ভিলেজ
শুটিং যেহেতু বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ইভেন্টগুলোর একটি, তাই পালেংবাঙে যেতে হয়েছে। ২০ আগস্ট পালেংবাঙে যাই। একই উড়ানে সঙ্গী ছিল মাছরাঙা টেলিভিশনের রিপোর্টার জাহিদ চৌধুরী আর ক্যামেরাপারসন জুবায়ের আহমেদ। জাকার্তার সুকর্ণ হাত্তা বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৪০ মিনিটের উড়ান। জাহিদরা কিছুটা আগে পৌঁছে যায়। আমি পরে ওদের সঙ্গী হই। বিমানবন্দরে এশিয়ান গেমসের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। চারদিকে ভলান্টিয়াররা রয়েছে সাহায্যের জন্য। অনেকে আবার হোভারবোর্ডে টহল দিচ্ছে। এদেরই একজন এসে আমাকে চেক-ইনে সাহায্য করে। এরপর আরেক ভলান্টিয়ার সিনথিয়া পৌঁছে দেয় যথাস্থানে। যথাসময়ে অবতরণ করে লাউঞ্জে আসতেই স্থানীয় রীতিতে অভিবাদন। ভেতরেই অপেক্ষমাণ আমাদের এনওসি অ্যাসিস্ট্যান্ট আন্দ্রেয়াস। গাড়ি ছিল। তবে পুলিশকে সে কী বলল কে জানে। আমাদের তিনজনকে বিওএর বড় মাপের কোনো কর্মকর্তা ভেবে রীতিমতো এসকর্ট করে সাইরেন বাজিয়ে নিয়ে গেল। আমার দুই সঙ্গী জাহিদ আর জুবায়ের এ নিয়ে বেশ মজাও করল।
![](https://www.canvasmagazine.com.bd/wp-content/uploads/2018/09/chutir-ghonta-6-314x640.jpg)
রাতের গেমস ভিলেজ,গেমস ভিলেজের ডাইনিংয়ে আমি ও রিপন ভাই, জাকাবারিং মসজিদে ঈদের জামাত
আমরা পৌঁছালাম জাকাবারিং স্পোর্টস সিটিতে। বিশাল এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে এই ক্রীড়াশহর। বানানো হয়েছে কৃত্রিম হ্রদ নৌক্রীড়ার জন্য। এশিয়ান গেমসের একাংশ হচ্ছে। ফলে দুটো ভিলেজ করা হয়েছে। আমরা যেটাতে ছিলাম সেটায় ছিল পাঁচটা বিল্ডিং। সব কটি চারতলা। ধাতব স্ট্রাকচারের ওপর তৈরি। সবুজে ভরা। ভীষণ সুন্দর। অসাধারণ আবহ। আমার কাছে তো জাকার্তার গেমস ভিলেজের চেয়ে এটাকেই বেশি ভালো লেগেছে। আমরা সেদিন সরাসরি শুটিং রেঞ্জে চলে যাই। সেখানে পেয়ে যাই বিওএ কর্মকর্তা রিপন ভাইকে। মো. রিপন মিয়া। ভীষণ আন্তরিক মানুষ। আমি ছিলাম তিন রাত, দুদিন। রুম শেয়ার করেছি। নানাভাবে সাহায্য করেছেন তিনি।
পালেংবাঙ শহরকে দ্বিখন্ডিত করে চলে গেছে মুসি নদী। এই নদীর উপরেই রয়েছে আমপেরা ব্রিজ। এই শহরের ল্যান্ডমার্ক। এর এক পাড়ে সেবোরং উলু আর অন্য পাড়ে সেবেরাং ইলির। এই ব্রিজ তৈরির ভাবনা প্রথম প্রেসিডেন্ট সুকর্ণর। তিনি চেয়েছিলেন লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের আদলে একটা ব্রিজ বানাতে। জাপানের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে তারাই অর্থায়ন করে। ডিজাইন করা থেকে তৈরি- সবই করে ফুজি কার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি। প্রথমে এর নাম ছিল বুঙ কর্ণ ব্রিজ। তার পতনের পর নতুন নাম হয় আমপেরা ব্রিজ। ১৯৬৫ খুলে দেওয়া হয়েছিল এই ব্রিজ। এখন নতুন একটা বানানো হয়েছে। তাই পুরোনোটা যাওয়ার আর নতুনটা আসার জন্য ব্যবহার করা হয়। নতুন ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। পালেংবাঙ শহর থেকে জাকাবারিংয়ের দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। জাকাবারিং স্পোর্টস সিটি বা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আসিয়ান গেমস, ইসলামি সলিডারিটি গেমস আর আসিয়ান ইউনিভার্সিটি গেমস হয়েছে। এবার হলো এশিয়ান গেমস। এই স্পোর্টস সিটি থেকে হাঁটা দূরত্বে রয়েছে মেট্রো স্টেশন। সরাসরি এয়ারপোর্টে যাওয়া যাবে। পালেংবাঙ হয়ে। আছে একাধিক সুপার মলও।
পালেংবাঙ কেবল ইন্দোনেশিয়ার নয়, মালয় দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো শহর। একসময় মালয় সাম্রাজ্য শ্রীবিজয়ের রাজধানী ছিল। ষষ্ঠ থেকে নবম শতাব্দী ছিল হিন্দুরাজাদের রাজত্ব। এরপর মুসলমান শাসন। রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে ওলন্দাজরা এই শহরে এসে ডাচ ইস্ট ইন্ডিজের অন্তর্ভুক্ত করে ১৮২৫ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে সুমাত্রা ছিল জাপানিদের দখলে। তারা বিতাড়িত হয় ১৯৪৫ সালে। স্বাধীন হয় সুমাত্রাসহ গোটা ইন্দোনেশিয়া। ডাচরা বেশি সময় থেকে যতটা না অত্যাচার করেছে, অনেক কম সময়ে জাপানিরা তার থেকে বেশি করেছে বলেই মনে করে তারা। পালেংবাঙের ইতিহাস জানতে হলে অবশ্যই ঢুঁ মারতে হবে মনপেরা জাদুঘরে। এটা অবস্থিত জালান মারদেকা বা বিজয় সরণিতে। এর লাগোয়া দ্বিতীয় সুলতান মাহমুদ বদরুদ্দীন মিউজিয়াম আর কবরস্থান। উল্টো দিকে গ্র্যান্ড মসজিদ। বলতে গেলে থুথু ফেলা দূরত্বে বয়ে চলেছে মুসি নদী।
![](https://www.canvasmagazine.com.bd/wp-content/uploads/2018/09/chutir-ghonta-5-640x386.jpg)
গেমস ভিলেজে বাংলাদেশ
এক দুপুরে আমরা শহর দেখতে বের হই। সঙ্গে ছিলেন শুটিং ফেডারেশনের দুই কর্মকর্তা। একসময় বোর্নিও, জাভা ও সুমাত্রা ছিল হিন্দু রাজাদের শাসনে। সেই স্মৃতি তারা এখনো বহন করছে। তাদের নাম, সংস্কৃতি, উপকথা থেকে জীবনের প্রতি পরতে আজও রয়েছে সেই প্রভাব। রামায়ণ আর মহাভারত- দুই মহাকাব্য নানাভাবে তাদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করছে। বাহাসা ভাষায় সংস্কৃত শব্দের প্রাচুর্য লক্ষণীয়। এমনকি ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থার নাম গরুড়। রামায়ণের সেই পাখি। ওরা বলে গারুদা। এসব হয়তো বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানে না। সেটা স্পষ্ট হয়েছে কথা বলে। উপরন্তু ধর্মাচারণের বর্তমান পন্থা অন্য অনেক দেশের মতোই তাদেরকেও শিকড় বিচ্ছিন্ন করছে।
পালেংবাঙেরই একটি মার্কেটের নাম রামায়ণ মার্কেট। জাদুঘরের নাম বালপুত্রদেব মিউজিয়াম। এটা তাদের ১০ হাজার টাকার নোটে রয়েছে। বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা হয় সেদিন। আমরা শহর ছাড়িয়ে চলে যাই বেশ খানিকটা দূরে। যেতে যেতে চোখে পড়ে, একটা জায়গার নাম ইন্দ্রবিজয়। আমাদের গন্তব্য বায়াত আল কুরান মিউজিয়াম। টিকিট কিনতে হয় ২০০০ রুপায়া করে। বাংলাদেশি ১৫ টাকার মতো। একটি মসজিদ, বোর্ডিং আর মাদ্রাসা-সংলগ্ন পাঁচতলা উচ্চতার বাড়ির ভেতর এই কোরআন শরিফ। এর নেপথ্যে রয়েছেন শফিউল্লাহ নামে এক ভদ্রলোক। এ পর্যন্ত ১৫ পারা করা সম্ভব হয়েছে। বাছাই করা কাঠ দিয়ে তৈরি প্রতিটি প্যানেলের দৈর্ঘ্য ১৭৭ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১৪০ সেন্টিমিটার আর পুরু ২.৫ সেন্টিমিটার। এর ওপর খোদাই করে লেখা। অনেকেই আসেন এই জাদুঘর দেখতে। আসেন দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনেরাও। ভাবি পৃথিবীতে কত মানুষ কত অদ্ভুত কান্ডই না করছেন। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়। দেখা হয় লোকালয়, জনপদ আর জনজীবন। পরদিন আবার ঈদ। বাংলাদেশের খেলাও আছে। এমনকি আমাকে ফিরতে হবে জাকার্তা।
![](https://www.canvasmagazine.com.bd/wp-content/uploads/2018/09/chutir-ghonta-4-640x375.jpg)
আমাদের চার ভলান্টিয়ার আন্দ্রেয়াস, ফাবাস, আররিয়া ও আলিফার সঙ্গে
খুব সকালে ঘুম ভেঙে যায়। সাতটায় জামাত। বেশ ভোর থেকেই আমাদের বিল্ডিং লাগোয়া জাকাবারিং মসজিদে কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে। উঠে তৈরি হয়ে জামাতে অংশ নিই। বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তা আর ক্রীড়াবিদেরাও। ছেলেদের সঙ্গে মেয়েরাও। ওদের ওখানে যত্রতত্র কোরবানি হয় না। সবই মসজিদকেন্দ্রিক। মসজিদের পাশেই কোরবানি হয়। সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে ফেলা হয়। আর একজন একটি গরু কোরবানি করে না। তবে এই মসজিদ লাগোয়া গেমস ভিলেজ বলে এখানে হয়নি এবার।
ফিরে এসে চলে যাই ডাইনিংয়ে। নাশতা সেরে বেরিয়ে পড়ি দিনের কাজে। রুমে আর ফিরব না। তাই ব্যাগ অফিসে নিয়ে রাখি। কাজ সেরে দুপুরে ফিরে হালকা লাঞ্চ করে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হই। আমার সঙ্গী আররিয়া খোতিমা। এখানেও চারজন ছিল বাংলাদেশের এনওসি অ্যাসিস্ট্যান্ট। ওদের দলনেতা ফাবাস রিদওয়ান। আলিফা আর আন্দ্রেয়াস। ফাবাস ফ্রিল্যান্স ওয়েডিং ফটোগ্রাফার। আমাকে দ্বিতীয় সুলতান মাহমুদ বদরুদ্দীন বিমানবন্দরে পৌঁছে ফিরে যায় আররিয়া। আমি ভেতরে ঢুকে আনুষ্ঠানিকতা সেরে অপেক্ষায় থাকি উড়ানের।
sksaifurrahman@gmail.com
ছবি: লেখক ও সংগ্রহ
Just awesome. Bringing back many memories during the Games time. Hats off to respected SAIFUR Bhai for this outstanding composition.