বাংলাদেশের অটোমোবাইল শিল্পে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করল র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, যারা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করল দেশে তৈরি মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার। সাত আসনের এই ফ্যামিলি এসইউভি-টি ১.৫ লিটার মাইভেক ইঞ্জিনে চালিত, যা জাপানি নির্ভরযোগ্যতা এবং দেশীয় উদ্ভাবনের এক অপূর্ব সমন্বয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি। আরও উপস্থিত ছিলেন র্যানকনের গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর রোমো রউফ চৌধুরী ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফারহানা করিম, মিতসুবিশি মোটরসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ব্যাংকিং ও বেসরকারি খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন র্যানকনের এক স্বপ্নপূরণের মাইলফলক, যেখানে বাংলাদেশকে একটি বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ৫২ একর জায়গাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত র্যানকন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে এখন উৎপাদিত হচ্ছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড মিতসুবিশি মোটরস, মার্সিডিজ বেঞ্জ বাস চ্যাসি, সুজুকি মোটরসাইকেল, প্রোটন, জ্যাক, এলজি, তোশিবার প্রোডাক্ট, যা র্যানকনের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও সক্ষমতা প্রমাণ।
জাপান থেকে ভিডিও বার্তায় মিতসুবিশি মোটরস করপোরেশনের সিইও তাকাও কাতো বলেন, ‘এটি একটি সুন্দর পথচলার শুরু। ডুয়েল এসি সম্বলিত এক্সপ্যান্ডার মূলত আসিয়ান অঞ্চলের জন্য নির্মিত। বাংলাদেশে ফ্যামিলি-কার হিসেবে এর রয়েছে পরীক্ষিত সাফল্য। র্যানকনের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্ব ভবিষ্যতে আরও উন্নতমানের এবং নির্ভরযোগ্য গাড়ি তৈরির পথ প্রশস্ত করবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মিতসুবিশি মোটরস করপোরেশনের ডিভিশন জেনারেল ম্যানেজার ইউতাকা ইয়ানো বলেন, ‘র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ। অত্যাধুনিক পেইন্ট শপ থেকে শুরু করে চূড়ান্ত অ্যাসেম্বলি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মিতসুবিশির আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করা হয়। এই কারণেই বাংলাদেশে তৈরি এক্সপ্যান্ডার নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং সুলভমূল্যে ক্রেতাদের দেওয়া যাচ্ছে। র্যানকন শুধু উৎপাদনেই নয়, সারা দেশে আফটার সেলস সেবা পরিসর গড়েও গ্রাহকসেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
র্যানকন গ্রুপের গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর রোমো রউফ চৌধুরী বলেন, ‘গত ৫০ বছর ধরে আমরা মিতসুবিশি ব্র্যান্ডের অফিশিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর। সরকারের বিনিয়োগ-বান্ধব উদ্যোগ ও আমাদের পার্টনার মিতসুবিশির সহযোগিতায় আমরা এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি, যেখানে দেশের মানুষের জন্য জাপানি প্রযুক্তির গাড়ি তৈরি করা যাচ্ছে, সাশ্রয়ী মূল্যে। আমাদের কারখানায় রয়েছে অত্যাধুনিক পেইন্ট শপ, অ্যাসেম্বলি লাইন এবং মিতসুবিশির তত্ত্বাবধায়নে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল। প্রতিটি এক্সপ্যান্ডারে থাকছে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি এবং ২ বছরের ফ্রি সার্ভিসিং। ১১টি আফটার সেলস টাচ-পয়েন্ট নিয়ে আমাদের অঙ্গীকার হলো গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দেশের মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে গাড়ি দেওয়া।’
জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিইচি বলেন, ‘এই উদ্বোধন শুধুই একটি গাড়ির নয়, এটি বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের কৌশলগত অংশীদারত্ব, প্রযুক্তি বিনিময় ও দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বের এক উজ্জ্বল উদাহারণ।’
অনুষ্ঠানটি আরও জমকালো হয়ে ওঠে দেশের জনপ্রিয় সংগীত তারকা ও ইনফ্লুয়েন্সারদের অংশগ্রহণে। ছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা সিয়াম আহমেদ, যিনি মিতসুবিশি মোটরস বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: সংশ্লিষ্টদের সৌজন্যে