skip to Main Content
নাইকিতে হ্যাশট্যাগ মি টু!

অফিসে, রাস্তায় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হরহামেশাই যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে মি টু আন্দোলন। তাতে আলোড়িত নাইকির বিভারটনের সদর দপ্তরও। আমেরিকার বৃহত্তম স্পোর্টস গিয়ার তৈরির প্রতিষ্ঠানে যৌন হেনস্তার ঘটনা ঘটে আসছিল অনেক দিন ধরে। কিন্তু কেউ এ নিয়ে মুখ খোলেনি। একাধিক পুরুষ কর্মকর্তার হাতে অধস্তন মহিলা সহকর্মীরা নানাভাবে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছিলেন। ঠিক সময়ে পদোন্নতি না হওয়া, গুরুত্বপূর্ণ সভা থেকে বাদ দেওয়া- এসব লিঙ্গবৈষম্যমূলক ঘটনাও ঘটত। সংস্থার মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগে বারবার জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। যৌন হয়রানির কোনো অভিযোগেরই ‘উপযুক্ত প্রমাণ’ পাওয়া যেত না। বৈষম্যের অভিযোগ যারা এনেছে, তাদের বলা হয়েছে, সঠিকভাবে পারফর্ম করতে না পারার জন্যই তাদের পদোন্নতি হচ্ছে না।
এই পরিস্থিতির পরিবর্তনে সম্প্রতি সংস্থার কয়েকজন নারী কর্মী নাইকির অফিসে একটি গোপন সমীক্ষা চালান। নারী সহকর্মীদের বলা হয়, নিজেদের নাম প্রকাশ না করে শুধু জানান, এই অফিসে কখনো যৌন হয়রানির কিংবা বৈষম্যের মুখোমুখি হয়েছেন কি না। হলে কার হাতে হয়েছেন, সেটাও উল্লেখ করতে অনুরোধ করা হয়। উত্তর দিয়েছেন দপ্তরের প্রত্যেক নারী কর্মী। ৫ মার্চ সেই সমীক্ষার কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় নাইকির চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট তথা প্রধান নির্বাহী মার্ক পার্কারের কাছে।
সমীক্ষাটি হাতে পেয়ে বিভারটন দপ্তরের মহিলাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে শুরু করেন মার্ক পার্কার। সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় কয়েকজন সাবেক মহিলা কর্মীরও। তারপরেই শুরু হয় পার্কারের পরিচ্ছন্নতা অভিযান। এর ফল মেলে হাতেনাতে। ইস্তফা দিতে বাধ্য হন ছয় শীর্ষ কর্তা। অথচ যাদের মনে করা হতো পার্কারের ডান হাত নয়তো বাঁ হাত। পরে এক বিবৃতিতে পার্কার জানান, এই প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা; এতে করে অন্য অনেক কর্মীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। কাজে মনোযোগী হওয়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না।
ইস্তফা দেওয়া কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন ট্রেভর এওয়ার্ডস, ড্যানিয়েল তাউইয়া ও জেমি মার্টিন। তাঁদের মধ্যে নাইকির ব্র্যান্ড প্রেসিডেন্ট ট্রেভরকে এত দিন অনেকেই পার্কারের উত্তরসূরি ভেবে এসেছিলেন। আরেকজন কর্তা মার্টিন ছিলেন পার্কারের ডান হাত। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নাইকির দেখভাল করতেন তিনিই। আর সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ বাস্কেটবলের সিনিয়র ডিরেক্টর ছিলেন ড্যানিয়েল।
নাইকির এ ঘটনা বিশ্বব্যাপী দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এর প্রভাব পড়েছে। এর ফলে অন্যরা যেমন সতর্ক হচ্ছেন, তেমনি নারীশক্তির এই বিজয়কে অনেকেই দেখছেন নীরব বিপ্লব হিসেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top