skip to Main Content
শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে যা ঘটে

পানির অপর নাম জীবন। এ নামের সার্থকতা যথার্থ। কেননা শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে প্রায় প্রতিটি অঙ্গই বিপদের সম্মুখীন হয়, ফলে জীবন পড়ে বিপাকে। আর তাই জীবন বাঁচাতে চাই পানি। ডাক্তাররা সাধারণত দৈনিক আট গ্লাস করে পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে মানুষের শরীরের প্রতি ২০ কেজি ওজনের জন্য দৈনিক এক লিটার পানি পান করতে হবে। অর্থাৎ, কারও ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তাহলে তাকে দৈনিক তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায় মূত্র কিংবা ঘামের মাধ্যমে। যে পরিমাণ পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, সেই পরিমাণ পনি যদি শরীর ফেরত না পায়, তখন শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। রক্তচাপ ও হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক স্পন্দন ব্যাহত হয়, শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে শরীর কী কী প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়, তা জেনে নিন।
রক্তচাপ কমে যাওয়া: শরীরে পানি খরচ হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ঘাম। ঘামের সঙ্গে যে পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, সেই পরিমাণ পানি শরীর ফেরত না পেলে বেরিয়ে যাওয়া পানির ঘাটতি পূরণ করতে না
পারলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। হঠাৎ রক্তচাপ কমে গিয়ে মাথা ঝিমঝিম করলে অথবা বমি ভাব হলে পানি পান করা উচিত।
হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া: পানিশূন্যতা দেখা দিলে রক্তচাপ কমার পাশাপাশি হৃদযন্ত্র স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত স্পন্দনে চলতে শুরু করতে পারে। পানিশূন্যতার মারাত্মক পর্যায়ে মানবদেহে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর ফলে শরীরে রক্তের পরিমাণও কমতে পারে।
শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া: পানিশূন্যতার ফলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যকৃৎ পর্যাপ্ত পানি পায় না বিধায় ‘গ্লাইকোজেন’ নিঃসরণ হয় না। শরীরে কর্মশক্তি সরবরাহের জন্য ‘গ্লাইকোজেন’ অত্যন্ত জরুরি।
মুখে দুর্গন্ধ: আমাদের লালারসে ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান থাকে, যা মুখের দুর্গন্ধ কমায়। শরীরে পানির অভাব হলে কম লালারস তৈরি হয়। ফলে মুখে দুর্গন্ধ বেশি হয়।
পেশিতে ব্যথা: পেশি ব্যথা হলো পানিশূন্যতার অন্যতম লক্ষণ। মানুষের শরীরে থাকা বিভিন্ন ধরনের তরলকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছে দিতে পানির প্রয়োজন। পানির অভাব দেখা দিলে এই কাজ হয় রক্তের মাধ্যমে। ফলে পেশিতে রক্ত দেরিতে পৌঁছায়। আর এ কারণেই পেশিতে ব্যথা হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য: এ সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে পানিশূন্যতা। অন্ত্রে জমে থাকা মলকে বাইরে বের করার জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
অবসাদ: পর্যাপ্ত পানি পান করা না করলে অবসাদ আপনাকে ঘিরে থাকবে। সারা দিন বসে কিংবা ঘুমিয়ে কাটাতে ইচ্ছা করবে। মূলত পানির অভাবে রক্ত ঘন হয়ে যায়। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন পৌঁছাতে হৃদযন্ত্রকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
বৃক্কে পাথর: পর্যাপ্ত পানি পান না করলে প্রসাব কম হয়। প্রসাব কম হলে তাতে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান মিশ্রিত হয়ে বৃক্কে পাথর তৈরি করে।
এসব সমস্যা এড়িয়ে চলার জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top