skip to Main Content

ফরহিম I রসদের রদবদল

বডিওয়াশের বদলে শ্যাম্পু কিংবা ভাইস ভারসা। কতটা কার্যকর হবে ব্যাপারটা!

সবার জীবনে একবার হলেও হয়তো ব্যাপারটা ঘটেছে। সেটা নিশ্চিত। ছুটি কাটাতে গিয়ে দেখা গেছে, সাধের বডিওয়াশের বোতলটা ভুলে বাসায়ই ফেলে আসা হয়েছে। অথবা গোসলে ঢুকে দেখা গেল বোতলটা খালি। কারণ, ব্যস্ততায় তা রিস্টক করার কথা বেমালুম মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে। তখন! শুধু কাজ চালিয়ে নেওয়ার খাতিরে কয়েক পাম্প শ্যাম্পু নিয়ে বডিওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা মেলা। আবার অনেকের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটা ঘটারও নজির আছে। অর্থাৎ বডিওয়াশকে শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে হয়েছে, সে গল্পও শোনা যায়। কিন্তু এ কুইক ফিক্স আসলে কতটা কার্যকর? সেটা জানারই চেষ্টা।
শ্যাম্পু ভার্সাস বডিওয়াশ
বডিওয়াশের ফর্মুলা সাধারণত ত্বকের ধরন ও সমস্যা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায় ত্বক শুষ্ক, তৈলাক্ত কিংবা ব্যালেন্সড কি না, তা জানা। সে জন্যই বডিওয়াশগুলোতে পিএইচ লেভেলের মাত্রা শ্যাম্পুর তুলনায় বেশি। আর এতে থাকে ত্বকবান্ধব সব উপাদান; যেমন গ্লিসারিন। বডিওয়াশে সার্ফেকটেন্টের ঘনত্ব তুলনামূলক বেশি। দিনভর দেহত্বকে জমতে থাকা ধুলাময়লা পরিষ্কারের জন্য। বডিওয়াশে সাধারণত বায়োসিমিলার লিপিড ও প্রোটিনের মতো ব্যারিয়ার রিপেয়ার এলিমেন্ট থাকে, যা ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষা দেয়ালকে পুনরুদ্ধার করে, অক্ষত রাখে; যা ত্বকের প্রাকৃতিক সিরামাইড উৎপাদনের হার বাড়ায়। অন্যদিকে শ্যাম্পুর ফর্মুলা বিশেষভাবে তৈরি হয় চুলের কথা মাথায় রেখে। তা পরিষ্কার রাখার উদ্দেশ্যে। ফলে শ্যাম্পুতে ব্যবহৃত উপাদান ত্বককে আঠালো করে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।
শরীরে শ্যাম্পু!
বডিওয়াশ হিসেবে শ্যাম্পু চলতে পারে। কিন্তু তা ত্বকের সঙ্গে কতটা মানানসই, সে অন্য প্রশ্ন। শ্যাম্পুর পিএইচ লেভেল পুরোটাই ভিন্ন, যা ত্বকে আর্দ্রতা জোগাতে একদমই কাজের নয়। শ্যাম্পু ত্বকের স্বাভাবিক তেলস্তর সরিয়ে দেয়, ফলে শরীরে এর ব্যবহারে শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এর পরেও মাঝেসাজে, খুব বিপদে পড়লে শ্যাম্পু দিয়ে বডিওয়াশের কাজ সেরে নেওয়াই যায়। অন্যদিকে শ্যাম্পু হচ্ছে মাথার ত্বক পরিষ্কারের জন্য তৈরি। স্ক্যাল্প শরীরের অন্যান্য অংশের ত্বকের মতো নয়। শ্যাম্পুতে এমন অনেক উপাদান থাকতে পারে, যা ত্বকের জন্য অনমনীয়। এ ছাড়া শরীরের ময়লা দূর করার ক্ষেত্রে শ্যাম্পু বডিওয়াশের মতো এত শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে না। তাই বিশেষজ্ঞদের মত, ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর। অন্যদিকে বডিওয়াশকে শ্যাম্পুর মতো করে ব্যবহার বেশ ঝক্কির বলা চলে। বডিওয়াশ কার্যকরভাবে স্ক্যাল্পের তেল, ময়লা আর দূষণ সারাতে পারে না। এ ছাড়া চুলকেও শুষ্ক করে দেয়। চুলের জন্য তৈরি নির্দিষ্ট উপাদানের অনুপস্থিতি চুল ধোয়ার পর একে কোঁকড়া ভাব সৃষ্টির পাশাপাশি আঠালো করে তোলে।
বডিওয়াশের বদলে
বিকল্প হিসেবে ফেসওয়াশ বা ফেশিয়াল স্ক্রাব শ্যাম্পুর চেয়ে ঢের ভালো। কারণ, এগুলোর ফর্মুলা ত্বকের কথা মাথায় রেখে নকশা করা। যদিও তুলনামূলকভাবে বেশি দামি হওয়ায় স্ক্রাব গায়ে মাখতে অপচয়ই মনে হতে পারে, কিন্তু শ্যাম্পুর চেয়ে গভীরভাবে পরিষ্কার তো করবে। আর ফেসওয়াশ যদি হয় অ্যাসিড-সংবলিত, তাহলে তা দিয়ে অনায়াসে করা যাবে ত্বকের ময়লা সারাই।
তবে সাবধান
কোনোভাবেই অভ্যাসে পরিণত করা যাবে না ব্যাপারটা। শুধু হাতের কাছে অন্য অপশন না থাকলে এই রদবদল হতে পারে। আর খেয়াল করতে হবে ত্বকে এর প্রতিক্রিয়া কেমন। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়াই সমীচীন।

 বিউটি ডেস্ক
মডেল: যশ মির্জা
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top