skip to Main Content

নখদর্পণ I হলুদাভে ভয়?

ইয়েলো নেইল কালার ইনট্রেন্ড হলেও নখের এমন দশা কিন্তু কোনোভাবেই স্টাইলিশ দেখায় না। তাই বলে খাবারে মসলার ব্যবহার তো আর বন্ধ করে দেওয়া যায় না! বরং সহজ সব টোটকাতেই মিলুক সমাধানের সূত্র

রোজা মানেই রোজকার দিনে ইফতারের নানা আয়োজন। বাইরের বাহারি খাবার তো বাসায় ঢোকেই, তবু কিছু পদ থাকে বিশেষ; যা শুধু বাসাতেই বানানো হলে মেলে আসল মজা। নিজের কিংবা প্রিয়জনের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি বলেই হয়তো। মুখরোচক সেই ভাজা-ভুজি না হলে ইফতারে তৃপ্তি হয় না কারও কারও। কেউ কেউ আবার চিরচেনা স্বাদে নস্টালজিক হতে চান বিশেষ এই মাসজুড়ে।
রোজায় স্পেশাল আইটেম তৈরি করতে এবং খেতে—উভয় ক্ষেত্রে মসলায় মাখামাখি হয় নখ। রসনাবিলাসের আয়োজন কিংবা অশন-প্রাশন, দাগ রেখে যায় মসলা, ঝোলসহ আরও অনেক কিছু। হলদেটে রং ধরে নখ। কখনো পুরোটা, কখনোবা ছোপ ছোপ। নখের এমনতর নখরা বেশ অস্বস্তিই তৈরি করে।
রান্নাঘরের পাকা রাঁধুনি সকাল হলেই ছুটে চলেন অফিসে। মিটিং-সিটিং-ওয়ার্কিং, এতেই পার হয় দিন। স্যুট, টাইয়ের সঙ্গে হলদে নখ যেমন বেমানান, তেমনি মানায় না শাড়ি কিংবা ব্লেজারের ভারিক্কিতে। নারী-পুরুষের দায়িত্বে এসেছে নতুনত্ব। এখন বেশির ভাগ সময়ে দুজন মিলেই চালিয়ে নেন সংসারের চাকা। সেখানে কাজেরও হয় ভাগাভাগি। ইফতারি প্রস্তুতিতেও তাই। একজন বেগুনি তেলে দিচ্ছেন তো অন্যজনের হাতে পেঁয়াজু। আবার ছুরি-কাঁচি-ফর্ক-স্পুনের টুংটাং থেকে হাতে মেখে খেতে আগ্রহীর সংখ্যাও কম নয়! তবে সমস্যা একটাই—হলদেটে নখ। রোজকার অফিসকেতার সঙ্গে বড্ড বেমানান! নানা আয়োজনেও হাতের সৌন্দর্য নিয়ে ভাবনা তো আসেই। কারণ, সবার আগে হাতের দিকেই যে নজর চলে যায় সবার। তাই কারি স্টেইন দূর করা হয়ে পড়ে আবশ্যক।
দাগের সঙ্গে বোঝাপড়া
সবার আগে জানতে হবে, নখ হলদেটে হওয়ার পেছনে দায় কার। পুস্তকি নাম ‘কারি স্টেইন’ হলেও আসল অপরাধী সর্বজন পরিচিত মসলা হলুদ। নখে রং ধরিয়ে দেয় নিমেষেই। হলুদে উপস্থিত পিগমেন্ট ‘কারমিউমিন’ মূলত এর জন্য দায়ী। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, হলুদ যখন তাপ অথবা আর্দ্র কিছুর সংস্পর্শে আসে, তখন এতে উপস্থিত অণুগুলো যে বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তার সঙ্গেই শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করে। বড় বেশি মাখো মাখো স্বভাব হলুদের! সবাইকে যেন রাঙাতে চায় নিজের রঙে।
দাগ মুক্তির মন্ত্রণা
‘দাগ থেকে যদি ভালো কিছু হয়, তাহলে দাগ-ই ভালো’—টিভিসির কল্যাণে এটি সবার মুখে মুখে। যদিও নখে হলুদের দাগের কোনো ভালো দিক খুঁজে পাওয়া যায়নি; বরং ভুক্তভোগীদের বিরক্তি বাড়ায়। তাই এই দাগ দূর হলেই ভালো। কারি স্টেইন দূর করার মতো কোনো রেডি সল্যুশন এখনো আসেনি বাজারে। তাই গৃহজাত সমাধানেই সই! আদতে কার্যকরী এমন কয়েকটি টোটকার সন্ধান থাকছে। অজুর সঙ্গে যেহেতু নখের সারফেস সম্পূর্ণ কেমিক্যাল প্রলেপহীন রাখা সম্পর্কযুক্ত, তাই এখানে শুধু ন্যাচারাল নেইল সারফেস থেকে কারি স্টেইন রিমুভিংয়ের উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে।
 বেকিং সোডা-লেমন জুস: বেকিং সোডা আর লেবুর রস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। দুটি উপাদানের পরিমাণ রাখা চাই সমান। নখে মেখে নিন সুচারুভাবে। কিছুক্ষণ রাখতে হবে। তারপরে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে নিলেই চলবে। একবার ব্যবহারেই দাগ উধাও হবে এমন নিশ্চয়তা অবশ্য নেই। একাধিকবার প্রয়োগে মিলবে কাঙ্ক্ষিত ফল।
 ভিনেগার: ভিনেগারের প্রাকৃতিক অম্লতা নখে হলুদের দাগের পিগমেন্টকে দুর্বল করে। ফলে দাগ উঠে যায়।
 ভিনেগার-ডিশ সোপ: সমপরিমাণে মিশিয়ে নিতে হবে দুটি উপাদানই। ১০ মিনিট ধৈর্য ধরে নখ ভিজিয়ে রাখতে হবে। টুথব্রাশ অথবা কটন বল দিয়ে ধীরে ধীরে নখ ঘষে নিতে হবে। মৃদু উষ্ণ পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
 হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড-বেকিং সোডা: উপাদান দুটি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে, প্রলেপ দিতে হবে সব নখে। তারপরে ১০ মিনিটের বিশ্রাম। আর শেষে হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে নিলেই ব্যস!
আগেভাগেই সাবধানে
হোক রান্না কিংবা পেট পুরে খাওয়া—যেকোনোভাবেই নখে পড়তে পারে কারি স্টেইন। দাগ থেকে দূরে থাকতে পূর্বপ্রস্তুতিই যথেষ্ট।
 খাওয়ার সময় ব্যবহার করা যেতে পারে চামচ-কাঁটাচামচ।
 রান্নার সময় হ্যান্ড গ্লাভস কাজ করবে ব্যারিয়ার হিসেবে।
 নখ নিয়ম মেনে কেটে রাখলে ঝোলঝাল ভেতরে কম প্রবেশ করবে।
 নখ এবং কিউটিকলের ময়শ্চার ঠিক থাকলে কম স্টেইন পড়ে। তাই নখে জরুরি আর্দ্রতার জোগান দিতে হবে নিয়মিত।

 বিউটি ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top