skip to Main Content

ফরহিম I হ্যাট হেয়ার

টুপিতে যাদের হেয়ারস্টাইলিং সারার অভ্যাস, তাদের জন্য। নইলে চুলের বারোটা বাজতে কিন্তু দেরি হবে না

টুপি পরার কিছুক্ষণের মধ্যে ম্যাড়ম্যাড়ে, প্রাণহীন, সামান্য তৈলাক্ত আর নিস্তেজ হয়ে পড়ছে চুল? আর কিছু নয়; হ্যাট হেয়ারের লক্ষণ। শীতপ্রধান দেশগুলোতে এটি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। কারণ, শীত ঢাকার জন্য সেখানে টুপি পরা এড়ানোর তেমন উপায় নেই। দেশেও ঠান্ডার সময় অনেককে টুপি পরতে হয়। এ ছাড়া ধর্মীয় কারণে অনেককে সারা দিন টুপি পরে থাকতে দেখা যায়। তারাই মূলত এ হ্যাট হেয়ার সমস্যায় পড়েন। তবে সমস্যা যেমন আছে, সমাধানও রয়েছে। এ ধরনের সমস্যা এড়ানোর তাৎক্ষণিক সহজ উপায়ের মধ্যে রয়েছে লিভ-ইন কন্ডিশনার দিয়ে চুলকে ময়শ্চারাইজ করা বা চুলের গোড়ায় একটু হেয়ার স্প্রে ছিটিয়ে দেওয়া। তবে যারা বহুদিন ধরে এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। ফলাফল—সারা দিন টুপি পরে থাকলেও হ্যাট হেয়ারের সমস্যা এড়ানো সহজ হবে। জেনে নেওয়া যাক তাহলে—
লিভ-ইন কন্ডিশনার
টুপি পরার আগে চুলে আর্দ্রতা যোগ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি টুপি থেকে তৈরি হওয়া স্ট্যাটিককে মোকাবিলায় সহায়তা করবে। তাই হাতে অল্প পরিমাণ লিভ-ইন কন্ডিশনার নিয়ে আঙুল দিয়ে পুরো চুলে মাখিয়ে নেওয়া চাই।
ভলিউমনাইজিং হেয়ার প্রোডাক্ট
যেহেতু হ্যাট হেয়ারের ফলে চুল ফ্ল্যাট হয়ে যায়, তাই সেটি পরার আগে একটি ভলিউমনাইজিং হেয়ার প্রোডাক্ট মেখে নেওয়া যেতে পারে। তাতে চুলের গোড়ায় ভলিউম তৈরি হবে। তবে চুলে অত্যধিক পণ্য ব্যবহার করলে কিন্তু টুপি খুলে ফেলার পরে চুল আঠালো অনুভূত হবে। তাই খুব অল্প পরিমাণে ভলিউমনাইজিং পণ্য ব্যবহার করা উচিত, যাতে চুলে সামান্য আর্দ্রতা যোগ হয়। আরও ভালো ফলের জন্য হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট মাখানোর পরে চুল ব্লো ড্রাই করা যেতে পারে। গোড়া থেকে শুরু করে পুরো চুল সমানভাবে সুন্দর করে আঁচড়ে নিয়ে তবেই করা চাই ব্লো ড্রাই।
চুল শুকিয়ে
ভেজা চুলে টুপি পরা ভুল। এর ফলে চুল চ্যাপ্টা হয়ে টুপির আকার ধারণ করে। স্যাঁতসেঁতেও হয়ে পড়ে। তাই সমস্যা এড়াতে, টুপি পরার আগে চুলকে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার সময় দিতে হবে। আরও বেশি ভলিউম তৈরি করতে একটি ডিফিউজার দিয়ে চুল শুকিয়ে নেওয়া হতে পারে দারুণ অপশন।
হেয়ার পার্টিং পাল্টে
শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও ঘটনা সত্যি! সাধারণত যে পাশে সিঁথি টানা হয়, তার উল্টো দিকে টানলে টুপি খুলে ফেলার পরে চুলের অরিজিনাল হেয়ার পার্ট করে নেওয়া যায় সহজে। চুলে ভলিউম তৈরিতেও এটি সাহায্য করে।
হেয়ার স্প্রে
চুলের গোড়ায় হেয়ার স্প্রে প্রয়োগ জরুরি। চুল শুকিয়ে যাওয়ার পরে এটি ব্যবহার করতে হবে। এতে চুল স্থির থাকবে; পাশাপাশি চুলে তৈরি ভলিউমও বজায় রাখা সহজ হবে। গোড়ার চারপাশের উঁচু করে সে অংশগুলোর নিচে অল্প পরিমাণে হেয়ার স্প্রে দিয়ে নেওয়া চাই। আরও ভলিউম তৈরিতে আঙুলের ডগা দিয়ে গোড়ার চুলগুলোকে ওপরের দিকে ঠেলে দেওয়া যেতে পারে।
ড্রাই শ্যাম্পু বা টেক্সচারাইজিং স্প্রে
এটি হ্যাট হেয়ার সমস্যা সমাধানের একটি দুর্দান্ত পণ্য। কারণ, এটি গোড়া নেতিয়ে পড়া থেকে চুলকে উঠিয়ে তুলতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যদি চুল তৈলাক্ত হয়। টেক্সচারাইজিং স্প্রে ফ্ল্যাট চুলে ভলিউম যোগ করতেও দারুণ কাজ করে। এটি প্রয়োগের আগে, সব চুল উল্টিয়ে সামনের দিকে এনে কয়েক সেকেন্ডের জন্য চুলজুড়ে সমানভাবে স্প্রে করা চাই। তারপর চুল আলতো করে ব্রাশ করে নিতে হবে। শ্যাম্পু শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চুল কয়েকবার ঝেড়ে ফেলা চাই মনে করে। এরপর চুল আবার আগের অবস্থায় এনে যদি অগোছালো দেখায়, তবে আঙুল দিয়ে মসৃণ করে নিতে হবে।
সচেতন হেয়ারস্টাইলিং
হ্যাট হেয়ার ফ্রেন্ডলি হেয়ারস্টাইল পিক করতে হবে। কিছু চুলের স্টাইল প্রায় সব সময় টুপির মাধ্যমে প্রভাবিত হবে, তা যতই এড়ানোর চেষ্টা করা হোক। এমন একটি হেয়ারস্টাইল বেছে নেওয়া চাই যেন টুপি খুলে ফেললেও সুন্দর দেখায়। টুপির সঙ্গে ভালো মানায় এমন কিছু স্টাইল হলো ব্রেইড, টুইস্ট, লো বান, লো পনিটেইল এবং ঢেউ খেলানো খোলা চুল। তবে ঢেউ খেলানো চুল টুপি দিয়ে ধরে রাখা একটু মুশকিল। চুল লম্বা হলে নিচের অংশে কার্ল করে এমন স্টাইলিং সেরে নেওয়া যায়। যখন টুপি খুলে ফেলবেন, চুলের ওপরের অংশ ফ্ল্যাট দেখালেও নিচেরটুকু তরঙ্গায়িত দেখাবে। যারা হরহামেশা টুপি পরেন, তাদের হেয়ারস্টাইল লেয়ারিং স্টাইলের হওয়া উচিত, যা চুলকে আরও ভলিউম দেবে। টুপি খুলে ফেলার পরে চুলগুলোকে লেপ্টে যাওয়া মনে হবে না।
হেয়ার ফ্রেন্ডলি হ্যাট
সব সময় পরার জন্য কিংবা চুল ভালো রাখতে টুপিটাও হওয়া উচিত চুলের সঙ্গে মানানসই। শতভাগ তুলা বা উলের তৈরি টুপি চুলের জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো। কারণ, এগুলোর কোনোটাই এতটা স্ট্যাটিক তৈরি করবে না। সিনথেটিক উপাদান থেকে তৈরি টুপি এড়ানো শ্রেয়। ব্যারেট বা ফ্লপি স্টাইলের টুপি বেছে নেওয়া হ্যাট হেয়ার সমস্যা এড়ানোর সর্বোত্তম উপায়। কারণ, এই টুপিগুলো মাথায় আটকে থাকে না। বিনি ও ট্র্যাপার হ্যাট সাধারণত চুলের জন্য সবচেয়ে খারাপ; কারণ, এগুলো মাথার সঙ্গে লেপ্টে থেকে চুল ফ্ল্যাট করে ফেলে।
ছোট চুলের জন্য
ছোট চুলের ক্ষেত্রে টুপি পরার আগে, চুলে ফ্রিজ কন্ট্রোলিং স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। তা ছাড়া আগেভাগে টুপির ভেতরটা একটি ড্রায়ার শিট দিয়ে ঘষে নেওয়া ভালো। এটি টুপিতে স্ট্যাটিক অপসারণে সাহায্য করবে।
টুপিমুক্ত
অবকাশ মিললেই টুপি খুলে ফেলা উচিত। চুলে স্থায়ী ক্রিজ তৈরি হওয়ার পাশাপাশি সম্পূর্ণরূপে লেপ্টে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে এটি জরুরি। এতে শুধু চুলের ভলিউম ও আর্দ্রতাই বজায় থাকবে না; চুল রিস্টাইলিংয়ের সুযোগ হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। তবে শুষ্ক পরিবেশে সাধারণত টুপি খোলার পর চুলে ব্রাশ না চালানোর চেষ্টা করা মঙ্গল। এতে চুলে স্থিরতা তৈরি হয়। পরিবর্তে, চুলের যেকোনো জট বা অগোছালো অংশগুলো ব্রাশ করতে আঙুল ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো।

 রত্না রহিমা
মডেল: কোকো
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top