skip to Main Content

কভারস্টোরি I বর্ষামঙ্গল

নাশতার টেবিল থেকে রাতের খাবার পর্যন্ত যা কিছু, সবই হতে হয় সাজানো। ভীষণ আলসেমিতেও কোথায় যেন যত্নের ছন্দ মেলে। তা নিয়েই তৈরি হয় নিজের লাইফস্টাইল। জীবনধারার নানা উপাদানের যত্ন নিয়ে লিখেছেন রুম্পা সৈয়দা ফারজানা জামান

সারা দিনে আমার কিছুই লাগে না— বলতে বলতেই যিনি র‌্যাক থেকে জুতাটা নামালেন। বুঝে নিতে হবে, ওই জায়গায় সেই র‌্যাক রাখাটাও সাজানোর মধ্যে পড়ে।
ধরুন, সকালে— ব্রাশ হোল্ডারটা, যেখানে ব্রাশ বা পেস্ট থাকে সেটারও যত্ন চাই। হোল্ডারটা কোনো দিন দাঁত মাজার ফাঁকেই পরিষ্কার করে ফেলা, ব্রাশে প্লাস্টিকের খাপ লাগানো; যেন তেলাপোকার আক্রমণ না হয়, হ্যান্ড টাওয়েলটা একটু মনে করে অন্তত ওয়াশিং মেশিন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। এ তো গেল সকালের গল্প! যেখানে জুতা থাকে, সেই তাকে একটা শাইনিং ব্রাশ বা স্পঞ্জ রেখে দিলে কেমন হয়? রোজ জুতা পরার সময় দু’চার ঘষা দিয়ে বের হওয়া যায়। শাইনারগুলো রাখতে পারেন ড্রয়ারে। তাহলে খেয়াল থাকে, আবার হারিয়েও যায় না। বর্ষায়-গরমে পায়ের দুর্গন্ধ যেন না হয়, এ জন্য অনেকে স্প্রে ব্যবহার করেন। সেটাও ওই র‌্যাকে রাখতে পারেন। যা দরকার যখন, সেগুলো সব একই ঠিকানায় থাকলে তাড়াহুড়োর প্যাঁচে পড়তে হবে না।
ব্যাগের যত্ন নেওয়া অনেক জরুরি। কারণ, বাইরে যাবার সময় আর কিছু না হোক, এটি সঙ্গেই থাকে। মাঝে মাঝে ব্যাগ মুছে নিয়ে রোদে শুকালে ভালো। অযাচিত কাগজ, বিল— এগুলো হয় ফেলে দেওয়া বা কোথাও পিনআপ করে রাখা যেতে পারে। কিন্তু ব্যাগ থাকতে হবে হালকা যেন কাঁধে প্রেশার না পড়ে। ব্যাগের মাঝে ছোট ছোট চেম্বার থাকতে পারে। যেমন ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড রাখার আলাদা চেম্বার, পয়সা রাখার, একটা ছোট্ট পারফিউম রাখার চেম্বার ইত্যাদি। চেলেওরাও পারফিউম রাখতে পারেন সব সময়। মানিব্যাগে বা যেকোনো ব্যাগে ঠিকানা ছোট্ট করে রেখে দিলে উত্তম। কে জানে কখন কী হয়!
প্রতিদিন যা কাজে লাগে তা হলো ঘড়ি এবং এখন তো মোবাইল ছাড়া ভাবাই যায় না। ঘড়ির ব্যাটারি কিন্তু চলতে চলতে থমকে যেতে পারে। বদলানোর সময় এলে বদলে নিতে হবে। মোবাইলের যত্ন নিতে হয় এখন সবচেয়ে নিয়মিত প্রক্রিয়ায়। স্ক্রিন সাফ করার জন্য মোবিওয়াশ নামে একটা লিকুইডও পাওয়া যায়। মোবাইলে যেন পানি না ঢোকে। মেমোরি এবং বডি নিয়মিত ক্লিন করা দরকার। আর মোবাইল সবচেয়ে বেশি জীবাণুর আস্তানা হতে পারে বলে বাসায় ফিরে অবশ্যই হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে মোবাইল মোছা উচিত। এ কাজে শুকনো তুলা বা টিস্যু ব্যবহার করা যেতে পারে।
এরপর টিভি দেখতে বসবেন? সেটাও পরিষ্কার করতে হবে। টিভি হলো সেই সেনসিটিভ প্রেম, যেটার দায়িত্ব নিজেই নেওয়া ভালো। নিজেই তা পরিষ্কার করতে পারেন। আলাদা একটি কাপড় ব্যবহার করে স্ক্রিনটা পরিষ্কার করবেন। পেছন দিকও। সেট টপ বক্স থাকলে সেটিরও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।
এমনই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো আইপিএস। এর পানি কিন্তু নিয়মিত বদলাতে হয় এবং পরিপূর্ণ রাখতে হয়। ব্যাটারি হু হু করে পানি শুষে নেয়। তাই খোঁজখবরটা রাখতে হয় নিয়মিত।
ফ্রিজের যত্ন না নিলে প্রায় না খেয়ে থাকতে হবে। টেম্পারেচার ঠিক থাকছে কি না, সেটা বলে দেবে যন্ত্রটি কেমন আছে। ফ্রিজ হচ্ছে সেই প্রেমের সম্পর্ক, যাকে ঠান্ডা রাখতে হয়, নিয়মিত পরিষ্কার করতে হয়, যেন কোনো দুর্গন্ধ না করে। বাসি-পচা খাবার রাখা যাবে না। বিগড়ে গেলে সার্ভিসিং জরুরি।
এয়ারকন্ডিশনারে ধুলো জমে গেলে জালিটা সাফ করতে হবে। তা না হলে মেঝে পানি পড়ে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে কিংবা ঠান্ডার পরিবর্তে গরম ছড়াতে পারে ঘরময়।
মোবাইলের মতোই যেকোনো রিমোট জীবাণুর আধার। তাই যখনই সময় পাবেন, তখনই জীবাণুমুক্ত করার জন্য একটু পরিষ্কারক ব্যবহার করা উত্তম।
গিজার ভালো আছে কি না, পরীক্ষা করে নিতে হবে। কখন কোন কাজে লেগে যায় কে জানে! ফ্যানও তাই। যে আংটায় এটি ঘোরে, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা থাকে না বটে। সেটায় জং ধরে ফ্যান খুলে পড়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া কি ঠিক?
বাসাভর্তি এমন নানা রকমের জিনিসপত্র, ডিভাইস কিংবা গ্যাজেট আছে, জীবনযাপনে যা কোনো না কোনোভাবে ছন্দ নিয়ে আসে। হয়তো মনের অজান্তেই তার যত্ন চলছে। কিন্তু জেনে নিলে যত্ন হয় যথাযথ এবং এগুলোর মেয়াদ বাড়ে কয়েক গুণ। তাই নিজের জন্য যত্ন চলুক এসব শখের জিনিসের— জীবন হোক ছন্দময়।

মডেল: ওশিন
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: শাড়ি ক্লাব
ছবি: সৈয়দ অয়ন ও ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top