skip to Main Content

ফরহিম I বিয়ার্ড অয়েল

দাড়িশোভিত মুখম-ল আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিয়ার্ড অয়েলে নিয়মিত পরিচর্যা জরুরি

‘উইথ গ্রেট বিয়ার্ড কামস গ্রেট রেসপনসিবিলিটি’; কিন্তু এর চেয়ে বড় দায়িত্ব হলো দাড়ি মেইনটেইন করা। অধিকন্তু দাড়ি এখনকার পুরুষদের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। সেখানে বিয়ার্ড অয়েলের চাহিদা অবধারিত।
এই কসমেটিক দাড়িতে পর্যাপ্ত পুষ্টির সঞ্চার করে, সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করে এবং দাড়ির নিচের ত্বকও ময়শ্চারাইজ করে। এ ছাড়া কোমল ও মসৃণ দাড়ির জন্য বিয়ার্ড অয়েল ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ছেলেদের ত্বক থেকে সিবামের মতো নিঃসৃত একধরনের অয়েলের অনুকরণে তৈরি হয় এই তেল। এতে ব্যবহার করা হয় ক্যারিয়ার অয়েল ও এসেনশিয়াল অয়েল। ক্যারিয়ার অয়েল সাধারণত ভিটামিন এ, ডি এবং ই সমৃদ্ধ থাকে। এ হিসেবে জোজোবা অয়েল, আরগান অয়েল, কোকোনাট অয়েল, গ্রেপ সিড অয়েল, হেম্পসিড অয়েল, আমন্ড, হ্যাজেলনাট- এগুলোর ব্যবহার বেশি। তা ছাড়া এতে থাকে লিনোলিক অ্যাসিড এবং অলেয়িক অ্যাসিড। এসব উপাদান দাড়ির জন্য পুষ্টিকর।
বিয়ার্ড অয়েল তৈরি হয় এক বা একাধিক উপাদানের সমন্বয়ে। প্রাকৃতিক কিংবা সিনথেটিক সুগন্ধিও এতে ব্যবহার করা হয়। তবে প্রাকৃতিক সুগন্ধির বিয়ার্ড অয়েলই ভালো। কারণ, এতে রয়েছে প্রাকৃতিক কেমিক্যাল কম্পাউন্ড, যা এই তেলের কার্যকারিতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। এতে ছেলেদের দাড়ি পেতে পারে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, ডিওডোরেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি-এজিং প্রপার্টিজ। তা ছাড়া এই সুগন্ধির তেল অ্যারোমাথেরাপির গুণাগুণও বহন করে। এসেনশিয়াল অয়েলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ইউক্যালিপটাস, লেমন গ্রাস, পেপারমিন্ট কিংবা আমলা অয়েল। এগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে দাড়ির যেকোনো সমস্যায় কিংবা নারিশমেন্টের জন্য। ইচিং, সেনসিটিভ স্কিন কিংবা ড্রাইনেস রোধে কাজ করে বিয়ার্ড অয়েলের উপাদানগুলো।
পাশাপাশি সৌরভের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে স্যান্ডেলউড, ক্লোভ, রোজ উড, টি-ট্রি, ভ্যানিলা ইত্যাদি এসেনশিয়াল অয়েল। আনসেন্টেড বিয়ার্ড অয়েলও পাওয়া যায় মার্কেটে।
বিভিন্ন রকম এবং ব্র্যান্ডের বিয়ার্ড অয়েল পেয়ে যাবেন দারাজ কিংবা বিডি শপকমের মতো অনলাইন শপগুলোতে। এ ছাড়া এস্টেলোন নামের একটি ওয়েবসাইটে পাবেন বিয়ার্ড অয়েলের বিশাল রেঞ্জ। তবে এটি ব্যবহার করতে হয় স্কিন টাইপ অনুযায়ী। তাই অবশ্যই নিজের ত্বকের উপযোগী উপাদান মিলিয়ে নিন কেনার আগে। উপাদান আর ব্র্যান্ডভেদে এসব অয়েল পাওয়া যায় ৬৫০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে।
কেনাকাটার ঝামেলা এড়াতে চাইলে কিংবা খরচ কমাতে চাইলে বসাতেই তৈরি করে নেওয়া যায় বিয়ার্ড অয়েল। তবে সঠিক উপাদান আর পরিমাণ মাথায় রাখতে হবে। একটি ছোট বোতলে মেশাতে হবে উপাদানগুলো। শুরুতেই নিতে হবে ক্যারিয়ার অয়েল। এ ক্ষেত্রে ত্বকের সঙ্গে মানানসই তেল মেশানো যেতে পারে অথবা শুধু একটা ক্যারিয়ার অয়েলও ব্যবহার করা যেতে পারে। সবচেয়ে ভালো মিশ্রণ হতে পারে জোজোবা অয়েল ও আমন্ড অয়েলে। জোজোবা সহজে ত্বক শুষে নেয় এবং কোমল করে হেয়ার ফলিকলের ব্লকেজ দূর করে। আর আমন্ড অয়েল জ্বালাপোড়া ভাব রোধ করে। দুটিই নিতে হবে হাফ আউন্স পরিমাণে। এরপর এতে মেশাতে হবে এসেনশিয়াল অয়েল। এসেনশিয়াল অয়েল খুব শক্তিশালী হয়, তাই কোনোভাবে ১০ ফোঁটার বেশি দেওয়া যাবে না। তবে সঠিক পরিমাণ ৫ থেকে ৬ ফোঁটা। আরও একটি এসেনশিয়াল অয়েল মেশাতে চাইলে পরিমাণটা ভাগ হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে স্যান্ডেলউড এবং টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। এবার বোতলের মুখ লাগিয়ে ঝাঁকিয়ে নিন। ব্যস, তৈরি হলো দাড়ির পরিচর্যায় ব্যবহারের উপযোগী তেল। এতে আরও কিছু উপাদান যুক্ত হতে পারে। যেমন:

কোকো মিন্ট: এক টেবিল চামচ কোকোনাট অয়েল, ৩ ফোঁটা পেপারমিন্ট অয়েল।
সুইট মিন্ট : হাফ আউন্স জোজোবা অয়েল, হাফ আউন্স আমন্ড অয়েল, ৩ ফোঁটা পেপারমিন্ট অয়েল, ২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল, ২ ফোঁটা অরেঞ্জ অয়েল।
ফল ফেইস ফলিয়েজ : কোয়ার্টার আউন্স জোজোবা অয়েল, হাফ আউন্স আমন্ড অয়েল, ২ ফোঁটা সিনামন অয়েল, ২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল।
ফরেস্ট হ্যাভেন : কোয়ার্টার আউন্স জোজোবা অয়েল, হাফ আউন্স আমন্ড অয়েল, ৩ ফোঁটা স্যান্ডেলউড অয়েল, ২ ড্রপ টি ট্রি অয়েল।

ব্যবহারের জন্য হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে দাড়ি এবং দাড়িসংলগ্ন ত্বকে লাগিয়ে নিতে হবে। ড্রপারের সাহায্যে লাগিয়ে নেওয়া বেশ সহজ। কিছুক্ষণ দাড়িতে ভালোভাবে ২ হাত ঘষে নিতে হবে। তারপর আঁচড়ে নিতে হবে। গোসলের পরে বিয়ার্ড অয়েল ব্যবহার করতে হয়। কারণ, তখন দাড়ি পরিষ্কার এবং ত্বক ফ্রেশ থাকে। আরও ভালো ফলের জন্য রাতে ঘুমানোর আগে একবার ব্যবহার করতে পারেন। এতে দাড়ি পুরো রাত ধরে কন্ডিশনিং সুবিধা পাবে।
বিয়ার্ড অয়েল স্টাইলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। দাড়ির রুক্ষ ভাব দূর করে একে শাইনি ও ম্যানেজেবল রাখতে এর তুলনা নেই। দাড়ির জন্য দাড়ির নিচের ত্বকে ফেশিয়াল প্রডাক্ট পৌঁছাতে পারে না। বিয়ার্ড অয়েল ওই অংশের ত্বক আর্দ্র করে এবং কোমলতা বজায় রাখে। তা ছাড়া ত্বকের এই অংশের আর্দ্রতা বজায় রেখে ফ্লেকিং, বিয়ারড্রাফ ও স্কিন ড্রাইনেস রোধ করে। এই অয়েল ফেশিয়াল হেয়ারকে ময়শ্চারাইজ করে এবং রাখে সতেজ, সুরভিত। কিছু ব্র্যান্ডের বিয়ার্ড অয়েলে বাড়তি গুণ থাকে, যা দাড়ি ঢাকা ত্বকের অস্বস্তি কমায় এবং ওই অংশে অ্যাকনে হওয়া রোধ করে। প্রতিনিয়ত এটি ব্যবহার করলে দাড়ির আগা ফাটা কমায়। তাই ঘন ঘন দাড়ি ট্রিম করার প্রয়োজন পড়ে না। বিয়ার্ড অয়েলের নিয়মিত পরিচর্যায় দাড়ি হয়ে ওঠে সুন্দর, যা মুখমন্ডলকে আকর্ষণীয় করে তোলে।

ু শিরীন অন্না
মডেল: নাহিদ
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top