skip to Main Content

ফিচার I গয়নায় প্রকৃতি

ছোটবেলা থেকেই আঁকতে ভালোবাসতেন মাসুদা কাজী। কাগজ পেলেই রং করতেন ইচ্ছামতো। সে সময় থেকেই প্রকৃতির নানা রূপ ধরা পড়ত তাঁর ক্যানভাসে। বাবা-মায়ের উৎসাহে ভর্তি হন চারুকলায়। রাজশাহী চারুকলা কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্রী তিনি। মাসুদা কাজীর শিল্পকর্মে প্রকৃতি যেমন প্রাধান্য পায়, ঠিক তেমনই যাপিত জীবনের নানা অনুষঙ্গও তাঁর হাতে হয়ে ওঠে বাঙ্ময়। ১৯৯৪ সালে ঢাকার সেন্ট্রাল রোডের একটি আর্ট গ্যালারিতে যুগলবন্দি নামে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। শিল্পী দম্পতি মাসুদা কাজী ও কাজী রকিব সেখানে প্রদর্শন করেছিলেন ব্যতিক্রমী নানা শিল্পকর্ম। ব্যতিক্রম এ জন্য যে, সেখানে জীবনযাপনের নানা জিনিসের পাশাপাশি তারা উপস্থাপন করেন হাতে আঁকা গয়না। সে সময় তা বেশ সাড়া জাগিয়েছিল।
অনেকেরই হয়তো মনে থাকার কথা, এই দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে হ্যান্ডপেইন্টেড শাড়ি নিয়ে কাজ করছেন। সেই আফসানা মিমি-টনি ডায়েসের রঙ থেকে বাংলার মেলা- এই যুগল কাজ করছেন একটানা প্রায় তিন দশক। রাজশাহীর পাঠ চুকিয়ে ঢাকায় আসার পর এই দম্পতি পাড়ি জমান মার্কিন মুলুকে। এখন সেখানেই থিতু। কিন্তু সৃষ্টির নেশা তাদের ছাড়েনি। তারই প্রতিফলন এই হ্যান্ডপেইন্টেড জুয়েলারির প্রদর্শনী।
যুক্তরাষ্ট্রে অবসরে গয়না তৈরি করেছেন। সেগুলোয় সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছেন নিজে এঁকে। এসবই মাঝে মাঝে করেছেন প্রিয়জনদের জন্য। এসব গয়না মাত্রা পেয়েছে তাঁর আঁকা ফুল-ফল, লতা-পাতা ও পাখিতে। এভাবেই কেটেছে বেশ খানিকটা সময়। তারপর ভেবেছেন হাতে আঁকা গয়না দিয়ে একটি প্রদর্শনী করার কথা। তবে তা বিদেশে নয়, বাংলাদেশে। তখন থেকেই গয়না তৈরিতে মনোযোগ দেন। বিদেশে বসেই তৈরি করেন শতাধিক গয়না। মাসুদা কাজী সেই সম্ভার নিয়েই ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরার গ্যালারি কায়ায় হয়ে গেল প্রদর্শনী ও বিক্রয়: ‘আর্ট ইন জুয়েলারি’ শিরোনামে। এম কে (মাসুদা কাজী) জুয়েলারির এই গয়না বেশ সাড়া জাগিয়েছে।
এগুলো তৈরিতে মাসুদা কাজী ব্যবহার করেছেন পলিমার ক্লে। সঙ্গে যোগ করেছেন মুক্তা, সিরামিক, কাঠ, লাভা পাথর, কোরাল, কাচ, পুঁতি ইত্যাদি। তুলির আঁচড়ে প্রতিটি গয়না হয়ে উঠেছে স্বতন্ত্র। এগুলোয় আঁকা হয়েছে ফুল, ফল, পাখি ও প্রকৃতি।
গয়নায় আঁকা ছবির সঙ্গে মিল রেখেই তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট ফ্রেম; ড্রেসিং টেবিলে সাজিয়ে রাখার জন্য- এভাবে অভিমত ব্যক্ত করলেন মাসুদা কাজী। বললেন, যে ফুল বা পাখি শোভা পাবে প্রতিদিন ড্রেসিং টেবিলে, সেটাই স্থান পাবে গলার লকেটে।

 স্টাফ রিপোর্টার
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top