skip to Main Content

রুপরসদ I বাকুচিওল

এন্টিএজিংয়ের সাম্প্রতিক দাওয়াই। প্রচলিত যেকোনো বিকল্পের চেয়ে বেশি নিরাপদ। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য তো বটেই

ত্বকের যত্নে রেটিনল সেরা, এ নিয়ে দ্বিমত নেই। তবে এ-ও ঠিক, উপাদানটি যেসব পণ্যে রয়েছে, সেগুলো সংবেদনশীল ত্বকে জ্বলুনি তৈরি করতে পারে। সৌন্দর্য-অনুরাগীদের জন্য তাই আনন্দের খবর হলো, বিউটি ব্লকে রেটিনলের বিকল্প এসেছে। বাকুচিওল। একটি প্ল্যান্ট-বেসড উপকরণ, যা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য। এটি বাচ্চি গাছ থেকে পাওয়া পাতা ও বীজ। এই ঔষধি উপকরণ সাধারণত ভারতীয় আয়ুর্বেদিক ও চীনা মেডিসিনে ব্যবহৃত হয়।
তুলনামূলকভাবে বাকুচিওল বাজারে নতুন একটি উপাদান। রেটিনলের বিকল্প। একটি সমীক্ষায় (ব্রিটিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজি ২০১৮) দেখা গেছে, বলিরেখা দূর করতে বা হাইপারপিগমেন্টেশন ইমপ্রুভমেন্টের ক্ষেত্রে রেটিনল ও বাকুচিওলের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বরং প্রথমটির ব্যবহারকারীরা ত্বকের শুষ্কতা ও যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান।
অবশ্য রেটিনলের মতোই বাকুচিওল বিভিন্ন ধরনের কোলাজেন তৈরির জন্য ত্বকের জিনগত পথই অনুসরণ করে। আর এই কোলাজেন ত্বকের স্বাস্থ্য ও অ্যান্টিএজিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয়। এটি তেলগ্রন্থির আকার সংকুচিত করে না বলে হঠাৎ করে ত্বক শুষ্কতা বা জ্বলুনির আক্রমণে পড়বে না। এ ছাড়া রেটিনল ব্যবহারের পর ত্বক রোদে আরও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। তাই দিনের বেলা অবশ্যই এসপিএফ সুরক্ষা জরুরী। তবে বাকুচিওল এর উল্টো কাজটাই করে। এর ব্যবহারে ত্বকের সংবেদনশীলতা আয়ত্তে থাকে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও বাঁচিয়ে রাখা যায়।
বাকুচিওল ডার্ক স্পট ও হাইপারপিগমেন্টেশনের জায়গাগুলোর উপস্থিতি কমানোর জন্য ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে। কোলাজেন তৈরি ছাড়া ত্বকের প্লাম্পিংয়ে এবং ফাইন লাইন কমাতে উদ্দীপিত করে। রেটিনল ও অন্যান্য স্কিনকেয়ার উপাদান যেখানে ত্বকের শুষ্কতা ও জ্বলুনির কারণ, বাকুচিওল সে তুলনায় অনেক কোমল।
যদিও বাকুচিওল রোদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, তার মানে এই নয় যে এসপিএফের কথা ভুলে যেতে হবে। ত্বক পুনর্গঠনের গতি বাড়ায় এটি। সিগন্যাল পাঠায়। কোলাজেন ও সেল টার্নওভারের সময় এসেছে। কোমল বলে প্রায় সব ধরনের ত্বকে মানানসই। সেল টার্নওভার ও স্বাস্থ্যকর কোষের পুনর্জন্মকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে এটি ত্বককে ভেতর থেকে প্রশমন ও নিরাময় করতে সহায়তা করে।
বাকুচিওলের নেতিবাচক কোনো প্রভাবের কথা এখনো জানা যায়নি। তুলনামূলক নতুন এই উপকরণ গর্ভাবস্থায় ও ব্রেস্টফিডিংয়ের সময়ও নিরাপদ। তবে প্রেগন্যান্সি টাইমে এর ব্যবহারের ভালোমন্দ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া দরকার।
আপাতত বাকুচিওল ব্যবহারের একমাত্র উপায় হলো এটি সিরাম বা লোশন হিসেবে প্রয়োগ করা। রেটিনলের মতোই রেগুলার ময়শ্চারাইজার বা সিরাম প্রয়োগের আগে লাগানো যায়। এটি রেটিনলের তুলনায় কোমল, তাই এর সর্বাধিক কার্যকারিতা পেতে সকালে এমনকি রাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যান্য স্কিনকেয়ার উপকরণের ওপর এটি নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে কি না, তা অজ্ঞাত। রেটিনয়েড ব্যবহার করার সময় সাধারণত এক্সফোলিয়েট, টোনার ও বেনজয়েটের মতো উপকরণ এড়িয়ে চলা ভালো। কেননা এগুলোতে জ্বলুনি হতে পারে। কিন্তু বাকুচিওলের ন্যাচারাল কম্পোজিশনের কারণে ত্বকের যত্নে এটি অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ব্যবহার করা নিরাপদ।

 উপকরণের ধরন— হাইড্রেটর
 মূল কাজ— রিঙ্কেল বা বলিরেখা কমানো, ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ানো এবং লোমকূপের উপস্থিতি কমানো।
 যে ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যায়- সাধারণত বাকুচিওল সব ধরনের ত্বকের জন্য নিরাপদ।
 ব্যবহার বিধি— দিনে দুবার ব্যবহার করা নিরাপদ, সকালে ময়শ্চারাইজারের আগে এবং রাতে যেকোনো সিরামের আগে।
 ভালো কাজ দেয়— স্কোয়ালেন ও পিএইচএর মতো অন্যান্য হাইড্রেটিং উপকরণের সঙ্গে। তবে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ফর্মুলেশনটির অবনতি ঘটাতে পারে।

 আহমেদ বুবলি
মডেল: সিম্মি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top